ভিডিও

যাত্রীবেশে উঠে ইজিবাইক ছিনতাই: মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৪, ০৯:৪৩ রাত
আপডেট: মে ২৮, ২০২৪, ০৯:৪৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ইজিবাইক চালক নয়ন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত ইজিবাইক চোর চক্রের অন্যতম নেতা নিজাম উদ্দিন ওরফে মিজানকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে র‌্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 তিনি বলেন, সোমবার (২৭ মে) বিকেলে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‌্যাব-১৩ এর সহযোগিতায় গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানাধীন কঞ্চিপাড়া রসুলপুর এলাকায় একটি অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন শেখদী মল্লিক এলাকায় বসবাসকারী মো. নয়ন (২০) ভাড়ায় ইজিবাইক চালিয়ে তার জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ১৪ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গ্যারেজ থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন তিনি। প্রতিদিন নয়ন রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে বাসায় ফিরতেন। কিন্তু সেদিন রাতে তিনি বাসায় না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে মোবাইল ফোনে কল দেন, তবে নম্বর বন্ধ পান।

পরে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর নিয়েও নয়নের কোনো সন্ধান না পেয়ে তার পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়ে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ১৮ মে বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে নয়নের বাবা বাবুল হোসেন লোকমুখে সংবাদ পান যে, যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইল মৌজায় একটি আবাসিক প্রকল্পের ছনক্ষেতের মধ্যে হাত, পা ও মুখ বাঁধা এবং গলিত অবস্থায় এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে আছে। এমন খবর পেয়ে নয়নের পরিবারের লোকজন দ্রুত সেখানে গিয়ে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহটি দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করে। পরে পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

তিনি বলেন, ঘটনার পর নয়নের বাবা মো. বাবুল হোসেন যাত্রাবাড়ী থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা (নম্বর-৭৭) দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‌্যাব-১৩ এর সহযোগিতায় সোমবার বিকেলে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানাধীন কঞ্চিপাড়া রসুলপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মো. নিজাম উদ্দিন ওরফে মিজান দিনাজপুরের কোতয়ালী থানার গোসাইপুর পিটিবি ওয়াবদা গ্রামের মৃত আমীর হোসেনের ছেলে।  

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মিজান এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বলে স্বীকার করেছেন। মিজান তার অপর দুই সহযোগী দ্বীন ইসলাম এবং মমিন ওরফে মকবুলকে নিয়ে ইজিবাইক চালক নয়নকে হত্যা করে তার ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন। পরে তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৪ মে রাত পৌনে ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড় থেকে পূর্বপরিকল্পিত স্থান মাতুয়াইলের ওই এলাকায় যাওয়ার কথা বলে নয়নের ইজিবাইকটি ভাড়া করেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে ওই এলাকায় পৌঁছালে নয়নকে ইজিবাইক থেকে নামতে বলেন মিজান। নয়ন ইজিবাইক থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে মিজান, দ্বীন ইসলাম ও মমিন তিনজন মিলে নয়নকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে মুখ চেপে ধরে গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং মরদেহ গুম করতে তার মরদেহ ওই এলাকার ছনক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে নয়নের ইজিবাইকটি নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

গ্রেপ্তার মিজানের দেখানো মতে, ঘটনাস্থলের পাশের ঝোঁপ থেকে হত্যার পর নয়নের লাশ গুম করার কাজে ব্যবহৃত একটি কোদাল ও একটি প্লাস্টিকের বাজারের ব্যাগের ভেতরে নীল রংয়ের পলিথিন উদ্ধার করা হয়। তারা নয়নকে হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ওই পলিথিন দিয়ে নয়নের মরদেহ পেঁচিয়ে মাটিতে পুতে ফেলার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু লোকজনের আনাগোনার ভয়ে লাশ ছনক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।  

গ্রেপ্তার আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।  



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS