বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, কামবালা যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন, এটি একটি শিক্ষণীয় বিষয়। আমরা দেখে এসেছি, প্রার্থীরাই সব সময় ভোট প্রার্থনা করেন। কামবালা বেওয়া (৯০) বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কাছে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছেন।
শুধু তাই নয়, তার সঞ্চিত স্বল্প পরিমাণ অর্থ প্রার্থীর হাতে তুলে দিয়ে নির্বাচনে ব্যয় করার কথা বলেছেন। আমি যখন নৌকা প্রতীকের ব্যাচ তাকে পরিয়ে দিতে গিয়েছি, তখন তিনি আমাকে বলেছেন, এই মার্কা আমি চিনি, আমার কাছে আছে, এটা আমার লাগবে না।
সেই সময় যেই অনুভুতি আমার শরীরের মধ্যে জাগরিত হয়েছিলো, সেটা ভুলবার নয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শিক কর্মী। তার এই স্মরণীয় দৃষ্টান্ত নির্বাচনে আমার একটি নতুন অভিজ্ঞতা এনে দিয়েছে। তার ব্যপারে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছিলাম, এই কাম বালাই হচ্ছেন ভোটার অব ইলেকশন। আমি মনে করি একটি ভোট একটি জাতির পরিবর্তন এনে দিতে পারে। তার যে শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস সেটা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
গতকাল রোববার বেলা ১১ টায় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের গোদাবাড়ী গ্রামে ভূমিহীন কামবালা বেওয়াকে নবনির্মিত গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ পিপিএম (বার), উপজেলা নির্বাহী অফিসার বহ্নিশিখা আশা, বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ সবুজার সিদ্দিক সাগর, সাধারণ সম্পাদক রমা কান্ত রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধান অতিথি নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী কামবালা সড়কের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন।
উল্লেখ্য, বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই নারী কামবালা গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে গিয়ে আলোচনায় উঠে আসেন। তিনি তার বাড়ীর পাশে স্থানীয় কালিয়াগঞ্জ বাজারে নৌকা মার্কার পথসভা চলাকালীন তিনি শত শত মানুষের ভিড় ঠেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত বিরল-বোচাগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরীর (নৌকা প্রতীক) কাছেই নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন।
প্রতিমন্ত্রী কিছু বলার আগেই এই বৃদ্ধা তার কাছে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবি সংবলিত একটি ১০ টাকার নোট বের করে প্রতিমন্ত্রীর হাতে দিয়ে বলেন ‘এই টাকাটা রাখেক, নির্বাচনত খরচ করিস”। যেন অন্যরকম এই স্মরণীয় বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচার হলে এই নারী কামবালা আলোচনায় উঠে আসেন।
ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী হবার পর খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী এমপি গত ২৮ জানুয়ারী এই মুল্যবান ভোটারের বাড়িতে ছুটে আসেন। সেদিনই প্রতিমন্ত্রীর স্বদিচ্ছা ও প্রচেষ্টায় ভূমিহীন কাম বালা বেওয়াসহ তার ছেলেদের মাথাগোঁজার ঠাঁই ৩টি নতুন বাড়ির ভিত্তি স্থাপিত হয়।
দৃষ্টি নন্দন এই বাড়িগুলির কাজ শেষ করে কাম বালার হাতে কাছে হস্তান্তর করেন প্রতিমন্ত্রী। কামবালা বেওয়ার ৪ ছেলের মধ্যে এক ছেলে মারা গেছে। এখন ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে আছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।