ক’দিন পরেই ঈদ
স্টাফ রিপোর্টার : ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। শেষ মূহূর্তে প্রতিটি মুসলিম পরিবারে চলছে কোরবানির প্রস্তুতি। একদিকে কোরবানির পশু কেনায় ব্যস্ত সচ্ছল পরিবারগুলো। অন্যদিকে সারাবছর ঢিমে তালে চলা কামার ও কামারশালাগুলো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নতুন নতুন দা, বটি, চাকু বানানোর টুংটাং শব্দে সরব হয়ে উঠেছে।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও কোরবানির পশুর দাম ধরা- ছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়ায় অনেকেই কোরবানি দিচ্ছেন না। আবার যারা দিচ্ছেন তারাও ভাগে। আর এসব কারণেই এবার কামার শালায় নতুন ক্রেতা কম। পুরনো দা, বটি চাকুতে ধার দিয়ে নিচ্ছেন কোরবানিদাতারা।
এছাড়াও অনেকেই সারাবছর অযত্নে অবহেলায় মরিচা পড়া বটি,দা ও চাকু ধার দিয়ে নিচ্ছেন ভ্রাম্যমান সানদারদের কাছে থেকে। তবে এবছর বাজার খুব একটা ভাল না বলছেন এই পেশার সাথে সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন গতবছরের চেয়ে দাম বেড়েছে প্রতিটি পণ্যের।
একসময়ের ব্যস্ত কামারশালাগুলো এখন অনেকটাই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন কোম্পানির ধাতব চাকু দা’র কাছে। শুধুমাত্র কোরবানি ঈদ এলেই প্রাণ ফিরে পান এই শিল্পের সুনিপুন কারিগররা। ঈদের ১০ থেকে ১৫ দিন আগে থেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এই পেশায় টিকে থাকা কামাররা।
সেই সাথে মৌসুমী বিক্রেতারাও। ঈদের দুই একদিন আগে শহরের রেলওয়ে ঘুমটির ওপর এবং চাঁদনি বাজার এলাকায় ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে। শহরের যেসব স্থানে পুরোনা কামারশালা ছিল তার অনেকগুলো এখন আর নেই।
তবে শহরের মালতীনগর বকসিবাজার এলাকায় এখনও শ্যামল ও গৌর কর্মকারের কামাারশালা এখনও টিকে আছে। আরও আছে বাদুরতলা রেলঘুমটির কাছে স্বল্প পরিসরে একটি কামার শালা। শ্যামল ও গৌর কর্মকার বলেন, সারা বছর তেমন একটা ভিড় থাকে না। ঈদ এলেই ভিড় বাড়ে। দামের প্রসঙ্গে তারা জানান নতুন দা বটি ছুরির দাম বেড়েছে।
কারণ লোহার দাম অনেক বেশি তাই। পুরনো প্রতিটি দা আগুনে পুড়িয়ে পিটিয়ে সান দিতে একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকা, বড় ছুরি, বটি সানাতে ৫০ থেকে ১শ’ টাকা এবং অন্যান্য ছুরি সাইজ ভেদে ২০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় সানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই ভিড় ঈদের আগের দিনের মধ্য রাত পর্যন্ত চলবে। শহরের চকলোকমান এলাকার মোঃ সামছুল আলম এসেছেন একটি বড় কোরবানি করার ছুরি নিয়ে। বললেন, গতবছর কোরবানি করার সময় মুখ পড়ে গেছে। তাই পিটিয়ে নিতে এসেছেন। প্রতিবছর আসেন। এবার দাম মনে হয় একটু বেশি।
বগুড়ার চাঁদনিবাজার এলাকার দোকানগুলোতে দেখা যায়, প্রায় সব দোকানেই লোহার সামগ্রী থরে থরে সাজানো। এখানে রেডিমেড ছুরি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ৬শ’ টাকায়। সাইজ অনুযায়ী দা বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায়।
একটি বঁটির দাম সাইজ অনুযায়ী ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা। এদিকে কামার পেশার চাহিদা কমছে দিন দিন। নতুন করে এ পেশায় আসছেন না নতুন কেউ। তারা জানান, সারা বছরের বিক্রিহীন সময় কাটানো, মৌসুমভিত্তিক ব্যবসায় সীমিত পরিসরে লাভ ইত্যাদি কারণে এই পেশার গুরুত্ব কমছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।