স্টাফ রিপোর্টার : আমদানিকৃত চাকু-দা‘য়ের দাপটে এবার কামারের ঘরের চাকু দা‘য়ের কদর নেমে গেছে। ফলে কামারশালায় ঈদের আগের দিন পর্যন্ত কাঙ্খিত ব্যস্ততা নেই। দা‘ বটি শানানোর জন্য কাজও কমে গেছে। আর এ কারণে এবার দা‘ বটি চাকু শানানোর দর বেড়ে গেছে। প্রতিটি দা’ বটি সানানোর জন্য সাইজ ভেদে ৭০ থেকে একশ’ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবার ঈদ উল আযহার আগে কোরবানীদাতারা ছোটেন কামার ঘরে। নিজেদের প্রয়োজনীয় ধারালো যন্ত্রপাতি শানিয়ে নেন। আবার কেউবা নতুন করে দা’ বটি চাকু বানিয়ে নেন। চাকু বটি দা‘ বানানোর কাজেও এবার তেমন চাপ নেই বলে জানিয়েছেন কামারেরা।
তাদের দাবি বাজারে আমদানি করা বিদেশি চাকুর প্রভাবে কামার ঘরের চাকুর কদর কমে গেছে। তাদের দাবি বিদেশি চাকু গুলো ওয়ানটাইম হওয়া স্বর্তেও অনেকেই বিদেশি চাকু কেনেন। বিদেশি চাকুর ধার নষ্ট হয়ে গেলে আর দেওয়া যায়না। একারনে ওই চাকু পরবর্তীতে কেউ ব্যবহার করতে পারে না। পক্ষান্তরে দেশি চাকু বছরের পর বছর ব্যবহার করা হয়। যে কোন সময় সানানো যায়।
বগুড়া শহরের মালগ্রাম জিলাদার পাড়ার শামীম আহমেদ জানান, তিনি চামড়া ছাড়ানোর জন্য প্রতিবার ঠোট বাকা চাকু কেনেন। ওই চাকু ধার ভালো কিন্তু একবারের বেশি ব্যবহার করা যায়না। এ কারণে দেশি চাকু ভালো কিন্তু ভালো মানের চাকু সব জায়গায় পাওয়া যায়না।
একই ভাবে শহরের সুত্রাপুর এলাকার সামছুল আলম জানান, তিনি নিজের কোরবানীর পশু নিজে জবাই করেন। চামড়া ছাড়ানা ধেকে শুরু করে কাটা সব কাজ নিজে করেন সাথে দুই একজন সগায়াতা করেন। কয়েক বছর আগে জবাই করার চাকু বানিয়েছেন এক চাকু দিয়ে বহুদিন কাজ করা যায়। তাই প্রতিবছর কেনার প্রয়োজন হয়না। বেশি প্রয়োহন হলে চামড়া ছাড়ানোর জন্য একটা বা ২ টা চাকু কেনেন তিনি।
বগুড়া শহরের উপশহর এলাকার সত্তরোর্ধ আহম্মেদ আলীর সাথে কথা হয় চাঁদনী বাজার এলাকায়। তিনি জানান, আগে প্রায় সব কোরবানীদাতা নিজের পশুর চামড়া নিজেরা ছাড়তেন। নিজেরাই গোস্ত কাটতেন। এখন কসাইয়ের উপর সবাই নির্ভারশীল হয়ে পড়েছে। একারণে এখন কামারের ঘরে তেমন ভিড় নাই। কসাইয়ের উপর নির্ভরতা কমলে আবার কামারের ঘরে চাপ বাড়বে।
শহরের বকশী বাজার এলাকায় পর পর দুটি কামা শালা রয়েছে কোন কামার শালাতেই দগদগে আগুন নাই। হাঁপড়ের দড়িতে টান দিতে হচ্ছে না। তারা কেবল শানানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। বগুড়া শহরের চাঁদনী বাজার (কাঁঠালতলা) এলাকা এবং দুই নম্বর রেল ঘুমটি থেকে তিন নাম্বর রেল ঘুমটি পর্যন্ত প্রায় ২ ডজন চাকু ও দা‘য়ের দোকান রয়েছে।
তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আমদানি করা ছোট চাকু বেশি বিক্রি হচ্ছে। একশ’ টাকার কমে কোন চাকু নাই। বিদেশি চাকু বেশি বিক্রি হয়। দা বেশি বিক্রি হয়না। দেশি চাকু তেমন বিক্রি হয়না। যারা দেশি চাকু কিনতে আসেন তারা ছ‘মিলের করাতের চাকু খোঁজেন।
এই চাকু গুলোর দাম একটু বেশি হলেও এর চাহিদা বেশি। এ ধরনের প্রতিটি চাকু ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। অন্যান্য ছোট চাকু ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।