মিঠুর মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অপর পক্ষে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার : ঈদের দিন বগুড়ায় আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনায় বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠুকে প্রধান আসামি করে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও তার মুক্তির দাবিতে বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। অপর দিকে এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় মানববন্ধন করা হয়েছে।
আজ রোববার (২৩ জুন) দুপুরের দিকে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বগুড়া জেলা সম্মিলিত শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক মুহা. আব্দুল মোমিন মন্ডল তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বগুড়া জেলার ৩১টি শ্রমিক সংগঠন নিয়ে গঠিত শ্রমিক কার্মচারী ঐক্য পরিষদ বগুড়ার বিভিন্ন বেসিক সংগঠনের সমস্যা ও দুঃসময়ে তাদের সহযোগিতা করে আসছে।
এই সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠুর বিরুদ্ধে ঈদের দিন রাতে জোড়া খুনের মামলায় তাকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হলে আদালত প্রাঙ্গণে তিনি তাদেরকে বলেন, ‘আমি উক্ত ঘটনার জড়িত নই, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার মাঝপথে জানতে পারি, দু’জনকে কে বা কারা হত্যা করেছে।
তখন আমি ওখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসি।’ শ্রমিক নেতা মিঠু বিভিন্ন সময় স্থানীয় সরকার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাই প্রতিহিংসামূলকভাবে মামলায় তার নাম জড়ানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়। তিনি তাদের শ্রমিক সংগঠনকে বিভিন্ন সময় সাহায্য, সহযোগিতা করে থাকেন। তিনি কোন শ্রমিকের সাথে খারাপ ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেননি।
তাই তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা সঠিক নয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয় এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ২৬ জুন বুধবার বেলা ১১টার দিকে শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন এবং আগামী ৩০ জুন রোববার একই সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা লিটন শেখ বাঘা, সুলতান পশারী, সাইফুল ইসলাম, আমিন ইসলাম, বাবলু মিয়া, জাকির হোসেন, মনসুর রহমান, বাবলু মোল্লা, আতাউল ইসলাম, বেলাল মন্ডল, আহসান হাবিব ফিরোজ, হাসান তালুকদার, মঞ্জু মিয়া, আফরোজ হোসেন, চুন্নু মিয়া, বাচ্চু মিয়া, আল আমিন হোসেন, নূর আমীন সরকার, সাদেক আলী প্রমুখ।
অপরদিকে ঈদের দিন বগুড়ায় আলোচিত জোড়া খুনের ওই ঘটনায় দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে মানববন্ধন করেছে হত্যার শিকার পরিবারের সদস্যরা ও এলাকাবাসী। তারা হত্যাকারী প্রভাবশালীদের দল থেকে বহিস্কারসহ দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করেন। আজ রোববার (২৩ জুন) সকালের দিকে শহরের নূরাণী মোড় থেকে শতাধিক এলাকাবাসী এক বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সাতমাথায় মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধন চলাকালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ওই এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি কোরবান আলী, নিহত শরীফের মা হেনা বেগম, নিহত রুমনের নানী রুবি বেগম, নিহত শরিফের বড় ভাই রিপন, বোন নীলা আক্তার, আহত হোসেনের বাবা দুদু শেখ, এলাকাবাসীর মধ্যে আব্দুর রহিম, আব্দুর রহিমের স্ত্রী ফারজানা, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ সার্জিল আহম্মেদ টিপুকে দল থেকে বহিস্কার করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়ে বলেন, হত্যাকান্ডে জড়িত প্রভাবশালীরা যাতে ক্ষমতা ও টাকার জোরে এ মামলা থেকে পার পেয়ে না যায়। নিহত শরীফের মা হেনা বেগম বলেন, মিঠু ও টিপুদের কারণে তিনি সন্তানহারা হয়েছেন। তাদের সঠিক বিচার করলে আর কোন মায়ের বুক খালি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
নিহত রুমনের নানী বলেন, যারা তার আদরের নাতীকে হত্যা করেছে তারাও যেন এ ধরণের শিকার হয়। তাদের যেন স্বাভাবিক মৃত্যু না হয়। বক্তারা আরও বলেন, মিঠুর পরিবারের সদস্যদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এই হত্যাকান্ডের সুবিচারের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।