কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচন কাল
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচন শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় জমে উঠেছে। প্রার্থীরা করছেন অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। বাড়ছে সন্ত্রাসী আতঙ্ক।
জানা গেছে, প্রতিরাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা মহড়া দিচ্ছে। মেয়র প্রার্থী রফিক, তার ভাই শফিক, মোগল বহিরাগত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ঝড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন মোবাইল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা।
সোমবার প্রচারণার শেষ দিনে মাঠ চষে বেড়ান মোবাইল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা। তিনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চান। কাঞ্চনে এখন তার পক্ষে গণজোয়ার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এলাকার সাধারণ মানুষ তার পক্ষে মাঠে নামছে। শিল্পপতি আর খেটে খাওয়া মানুষের প্রথম পছন্দ বাদশা। গাজী পরিবারও তাকে সমর্থন দিয়েছে। সোমবার কাঞ্চন বাজার, ইসলামপুর, রানীপুরা এলাকায় গণসংযোগ করেন বাদশা।
এ সময় বাদশা বলেন, নিশি রাতে বহিরাগত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে রফিক ও তার ভাই শফিক, মোগল অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। হিন্দু ভোটারদের অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমার লোকদের হুমকি দিচ্ছে। রাতে কালো গাড়ি নিয়ে শফিকের বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার কাছে সব সময় অস্ত্র থাকে। রফিক ও তার লোকজন গভীর রাতে টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছে। ভোটের দিন রফিকের সন্ত্রাসী বাহিনী ভোট কেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর, কেন্দ্র দখল করতে পারে। প্রশাসনকে আমি নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।
বাদশা বলেন, মোবাইল ফোন বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। আমার প্রতিপক্ষ আমার লোকজনসহ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আমি এর প্রতিকার চাই। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে ভ‚মিদস্যুদের প্রতিহত করুন। রফিকের দ্বারা যারা জমি হারিয়েছে আমি নির্বাচিত হলে তা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। কাঞ্চনের জনগণ আমার শক্তি। রফিক ৪টা হত্যা মামলার আসামি। আমি কাঞ্চনের ১০ বছর চেয়ারম্যান এবং ৫ বছর মেয়র ছিলাম। রফিকের বিরুদ্ধে অস্ত্র, সন্ত্রাসী, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। গত ৫ বছর ধরে তার ভাই মোগল ও শফিকসহ তাদের লোকজন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ইতিপূর্বে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১০০ দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সমস্ত এলাকায় তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর কারণে মানুষ শান্তিতে বাস করতে পারছে না। অস্ত্রের মুখে অনেক নিরীহ মানুষের সম্পত্তি দখল করেছে। তারা রাতের বেলায় যেসব কালো গøাসের গাড়িগুলো ব্যবহার করে, সেসব গাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করলে অস্ত্র পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, থানা পুলিশসহ সবাইকে লিখিতভাবে অবগত করলেও উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতা দেখতে পাচ্ছি না। ভোটাররা ভয় পাচ্ছে। ধীরে ধীরে তারা ভীত হয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের দিন হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে। আমি নিজেও কিছুটা আতঙ্কিত। তবে প্রশাসন একটি সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেবে বলে বিশ্বাস করি।
তিনি আরো বলেন, দু-একদিনের মধ্যে প্রশাসনের পদক্ষেপ কেমন হয় তা বলে দিবে ভোটের দিনের পরিস্থিতি। আগেও আমি ছয়টা নির্বাচন করেছি, এটি আমার সপ্তমবার। আমি যেখানেই যাচ্ছি লোকজন আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন। জনগণের ভাষা আমি বুঝি। তাদের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকলে ৮০ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এ মেয়র প্রার্থী বলেন, এই স্থানীয় নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী যেমন আছে কাউন্সিলর প্রার্থীও আছে। সুতরাং ৮০ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত হবে বলে আমার ধারণা। কিন্তু ভয়ভীতি দেখালে এই সংখ্যা কমতে পারে। প্রশাসন তৎপর হলে এবং ভোটরদের যদি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেওয়া হয়- তবে ভোটাররা নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে যাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এমায়েত হোসেন, কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. ফয়সাল আহম্মেদ।
আগামী ২৬ জুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে কাঞ্চন পৌরসভার ১৯টি ভোট কেন্দ্রে ৪০ হাজার ৭৯৮ জন ভোটার ভোট দিবেন।
এ নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থী, ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।