শৌচাগার কম থাকায় সাধারণ মানুষ যত্রতত্র প্রাকৃতিক কাজ সারছে
স্টাফ রিপোর্টার : আধুনিক ও মানসম্মত গণশৌচাগারের অভাবে বগুড়া শহরে প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে আসে লক্ষাধিক সাধারণ মানুষ। তারা সব সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা মান সম্পন্ন বিশেষায়িত গণশৌচাগার না পেয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন।
দেড়শ বছরেরও বেশি পুরাতন বগুড়া পৌরসভায় শহরের মধ্যে মাত্র দু’টি গণশৌচাগার রয়েছে। এর মধ্য একটি কোর্ট হাউস ট্রিটে অন্যটি বগুড়া জিলা স্কুলের পূর্ব উত্তর কোণে। গণসৌচাগার দু’টি থাকলেও আধুনিক এবং মানসম্মত বলতে যা বোঝায় তা নয়। পৌরসভা থেকে প্রতিবছর ইজারা দেওয়া হলেও ইজারাদারেরা ঠিকমত যত্ন না নেওয়ায় গণসৌচাগারগুলো মানহীন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে সৌচাগার কম হওয়ায় যত্রতত্র প্রাকৃতিক কাজ সারছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য পৃথক কোন শৌচাগার না থাকায় তারা পড়ছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। বগুড়ার দুটি গণসৌচাগারেই মানুষের আনাগোনা সব সময়। সরকারি কর্মদিবসে কোর্ট হাউস স্ট্রিটের শৌচাগারে ভিড় বেশি থাকলেও অন্য দু’দিন কম থাকে।
অন্যদিকে জিলা স্কুলের পূর্ব উত্তরকোণের গণশৌচাগারটিতে সব সময় মানুষের ভিড় দেখা যায়। সাধারণ মানুষদের যাতায়াত বেশি থাকায় নারীরা সেখানে যেতে বিব্রত বোধ করেন। বিশেষ করে রাতে ও সকালে বাস থেকে নেমে নারী যাত্রীরা গণশৌচাগার ব্যবহার করতে চাইলেও নানা সমস্যার কারণে তারা তা ব্যবহার করতে পারেন না।
গতকাল রোববার রাতে নীলফামারী থেকে ঢাকা গামী একটি যাত্রীবাহী বাস শহরের সাতমাথার কাছে এসে স্টপেজ দেয়। সে সময় দুই নারী যাত্রী গণসৌচাগারে যেতে চাইলেও আশে পাশে গণশৌচাগার না থাকায় তারা যেতে পারেনি। ওই দুই যাত্রীকে নিয়ে বাস আবার রওনা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বগুড়া শহরের বকশীবাজার এলাকার দুই নারী জানান, মার্কেট বা বিভিন্ন কারণে শহরে আসার পর প্রয়োজন হলেও তারা শৌচাগারে যেতে পারেন না।
শহরে নারীদের জন্য বিশেষায়িত কোন সৌচাগার নাই। তারা নারীদের জন্য মানসম্মসত একটি সৌচাগার করার জন্য পৌরসভা কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকার পিংকী আকতার জানান, তিনি তার মেয়েকে নিয়ে শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় প্রাইভেট পড়াতে নিয়ে আসেন। একবার এসে তিনটি স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ান।
এ সময় তিনি ও অন্য অভিভাবকরা শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ, শহীদ খোকন পার্কে সময় কাটান। এ সময় তাদের শৌচাগারের প্রয়োজন হলেও যেতে পারে না। তিনিসহ সেখানে উপস্থিত নারীরা দাবি করেন, শহরে যেন তাদের জন্য মানসম্মন্ন আধুনিক একটা শৌচাগার করা হয়।
বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা জানান, বগুড়ায় দুটি গণশৌচাগার রয়েছে। এর মধ্যে কোর্ট হাউস এলাকারটি সংস্কার করা হয়েছে। জিলা স্কুলের কোণার শৌচাগারটারও সংস্কার করা হবে। পৌরবাসী চাইলে আরও গণসৌচাগার করা হবে।
তিনি বলেন, নারীদের জন্য আধুনিক শৌচাগার করার জন্য পৌরসভার আগামী বাজাটে বরাদ্দ রাখা হবে। যথাযথ স্থান নির্বাচন করে নারীদের জন্য গণসৌচাগার করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।