ফেনী প্রতিনিধি: মেয়ে ফাহমিদা আক্তার মনিকে এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠিয়ে মৃত স্বামী আবুল কাশেমের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি রওনা দেন স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুনা। লাশ দাফনের জন্য তার দুই শিশুপুত্র মাহমুদুল হাসান ও আবুল হাসনাতকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে রওনা দেন তিনি। আবুল কাশেম ফেনীর ফুলগাজীর গোসাইপুর গ্রামের মৃত মৌলভী হাফেজ উল্লাহর ছেলে।
রোববার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবুল কাশেম একটি টোব্যাকো কোম্পানিতে চাকরি করতেন। দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজার সদর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। রোববার ভোরে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে আবুল কাশেম ও রোকসানা আক্তার রুনা দম্পতির মেয়ে ফাহমিদা আক্তার এবার কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন। রোববার সকালে বাবার লাশ ঘরে রেখেই ফাহমিদা কক্সবাজার সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায়। রোকসানা আক্তার রুনা খবর নিতে পারেনি মেয়ের পরীক্ষা কেমন হয়েছে। রোকসানা আক্তার দুপুরে শ্বশুর বাড়িতে পৌঁছেই স্বামী ও মেয়ের কথা বলে আহাজারি করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। এ সময় বাড়ির লোকজন নানাভাবে তাকে সান্ত¡না দেন।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, ‘মেয়েকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠিয়ে স্বামীর লাশ নিয়ে রোকসানা আক্তার কক্সবাজার সদর এলাকা থেকে গ্রামে আসা যেন ভাবতে শরীর শিউরে ওঠে। বাড়িতে ফেরার ঘটনা এলাকার মানুষের মনে বিষাদের ছায়া ফেলেছে। বিকালে আসরের নামাজের পর বাড়ির পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে আবুল কাশেমের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।