ভিডিও

বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনটে যমুনা নদীর পানি বৃহস্পতিবার বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে

প্রকাশিত: জুলাই ০৩, ২০২৪, ১০:৩৮ রাত
আপডেট: জুলাই ০৪, ২০২৪, ০১:০০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

করতোয়া রিপোর্টার : বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনটে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির এই হার অব্যাহত থাকলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, এই দুই উপজেলার যমুনা নদীর পানি গত ১২ ঘন্টায় ৩৪ সেন্টিমিটার বেড়ে আজ বুধবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির এই হার অব্যাহত থাকলে এই দুই উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে তা বৃহস্পতিবার সকালে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। এই দুই উপজেলায় যমুনার পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার।

সারিয়াকান্দি প্রতিনিধি জানান, উপজেলার যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিন দিনে এক মিটার ২১ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত সোমবার থেকে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সেদিন পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৭১ মিটার। আজ বুধবার (৩ জুলাই) বেলা ৩টায় সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৫.৯২ মিটার। এদিকে যমুনা নদীর সাথে বাঙালি নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ বুধবার (৩ জুলাই) এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩.২৬ মিটার। এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫.৪০ মিটার। তাই এ নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ২.১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে গত কয়েকদিন আগে থেকে উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলতাইড় ও মানিকদাইড় গ্রামে এবং কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশত পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।

সেখানে দ্রুত জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। এদিকে পানি বাড়ায় উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কাজলা, কর্ণিবাড়ী, চন্দনবাইশা এবং বোহাইল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার কৃষকরা তাদের বেড়ে ওঠা অপরিপক্ক পাটগাছ কেটে নিচ্ছেন।

উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাদশা বলেন, গত কয়েক দিনে যমুনা নদীর ভাঙনে শিমুলতাইড় গ্রামের ৪৩টি পরিবার এবং মানিকদাইড় গ্রামের ২০টি পরিবার তাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

আমাদের ধুনট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর কূল উপচে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বদিকে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। ইতিমধ্যে পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে পাঠদান করানো হচ্ছে।

পানিতে নিমজ্জিত বিদ্যালয়গুলো হলো, উপজেলার কৈয়াগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিমুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের আশপাশে উঁচু বাড়ি কিংবা বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ওপর খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করানো হচ্ছে। এতে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ঘন্টায় ৩৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বাবু বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্ব দিকে বাড়িঘরের চারপাশে পানি থৈ থৈ করছে।

যে কোন মুহূর্তে ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করার আশঙ্কায় তাদের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জাননো হয়েছে। ধুনট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, উপজেলার তিনটি বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করেছে।

এ কারণে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শিক্ষকদের বিকল্প পদ্ধতিতে পাঠদান করাতে বলা হয়েছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, পানি বৃদ্ধির হার দেখে বোঝা যাচ্ছে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। উপজেলায় যমুনা নদীর ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS