সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলের রাস্তা ভেঙে একটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একই রাস্তার আরও কয়েকটি জায়গা ধ্বসে গেছে। আশংকা করা হচ্ছে রাস্তাটি ভেঙে গেলে আরও ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হবে। আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার ৪৯ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ সময় যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৮৩ মিটার। এ উপজেলায় এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৬ টা থেকে আজ শুক্রবার বিকেল ৬ টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ২০ সেন্টিমিটার। এদিকে পানি বাড়তে থাকায় উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের টেংরাকুড়া চরের একটি রাস্তা ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাস্তাটির ২০ ফিট অংশের মাটি ধ্বসে গিয়ে এ গ্রামের শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি এবং কৃষিজমির ফসল প্লাবিত হয়েছে। ভেঙে যাওয়া রাস্তাটির আরও একটি অংশ ধ্বসে গিয়ে সেখানে বিশালাকার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেখানেও ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এখানে রাস্তাটি ভেঙে গেলে টেংরাকুড়া, উত্তর টেংরাকুড়া, দক্ষিণ টেংরাকুড়া, জামথল, দক্ষিণ জামথল এবং বেড়াপাঁচবাড়িয়া গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলে এসব গ্রামের ২০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তাটি ভেঙে গেলে এসব গ্রামে অবস্থিত ৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১ টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩ টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে দ্বিতীয় দিনের মতো পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার ৭৫ টি গ্রামের ৪৯ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।
উপজেলার ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে প্লাবিত হয়েছে এবং ৮ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে উপজেলার ৩২ হাজার ছাগল এবং ৪৩ হাজার গরুসহ বেশকিছু গৃহপালিত পশু। উপজেলার ১৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়েছে।
কাজলা টেংরাকুড়া চরের শাহজাহান আলী বলেন, টেংরাকুড়া গ্রামের রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় পুরো ইউনিয়নের এলাকাবাসীর সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে মানুষজন পানিবন্দি হয়েছে। রাস্তাটির অপর পাশের ধ্বসে যাওয়া অংশ ভাঙন হুমকিতে রয়েছে এবং সেখানে ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, যেহেতু পানি বৃদ্ধির হার কমে গেছে।
তাই দুএকদিনের মধ্যেই পানি স্থিতিশীল হয়ে কমতে শুরু করবে। কাজলার টেংরাকুড়া চরের ভেঙে যাওয়া রাস্তাটি পরিদর্শনের জন্য ইতিমধ্যেই আমাদের লোক পাঠানো হয়েছে। পরিদর্শন শেষে চরাঞ্চলের মানুষের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।