তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় যৌতুকের দায়ে নির্যাতনের শিকার মর্জিনা খাতুন নামের এক নারী বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। জানা যায় গত ২০০৮ সালে মাঝিপাড়া শালবাহান রোড এলাকার নুর ইসলামের ছেলে পল্লী পশু চিকিৎসক আলমিন (৩৮)এর সাথে বিয়ে হয় মর্জিনার। বিয়ের চার বছর তাদের সংসারে এক কন্যা সন্তান জন্ম হয়।
বর্তমানে ওই কন্যা সন্তানের বয়স ১২ বছর। কন্যা সন্তানের জন্মের পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়িসহ স্বামী নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মর্জিনাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মর্জিনা ও আল আমিন বাড়ি থেকে বের হয়ে টানা ১০ বছর মর্জিনার বাবার বাড়ি বসবাস করে। বাবার বাড়ি থেকেই মর্জিনা অর্নাস ও মাস্টার্স পড়াশোনা সম্পন্ন করে।
পরে সে ব্র্যাকের আল্ট্রাপোর প্রোগ্রামে ঠাকুরগাঁও ৪ বছর চাকুরী করেন। একসময় তার স্বামী তাকে চাকরী ছাড়তে বললে সে চাকরী ছেড়ে দেয়। চাকরী ছাড়ার পর ব্র্যাক থেকে যে টাকা পেয়েছিলেন তা তার স্বামী আলামিন নিয়ে নেয়। ওই টাকা দিয়ে বাড়ি করেন ও একটি গরুর খামার করেন।
এরমাঝে মর্জিনা দ্বিতীয় সন্তানের মা হয়। দ্বিতীয় সন্তানটি ছেলে সন্তান না হওয়ায় তার উপর শশুর-শাশুড়িসহ স্বামীর নির্যাতন শুরু হয়। পরে অসুস্থ হয়ে ছোট মেয়েটা মারা যায়। স্বামী আল আমিন তাকে আবার বাড়িতে নিয়ে যান। এর পর থেকে যৌতুকের ২ লক্ষ টাকা দাবি করে নির্যাতন শুরু করে।
পরে মর্জিনা বিচারের জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার তেঁতুলিয়া বরাবরে গত ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি। একপর্যায়ে স্বামী- শ্বশুড়-শাশুড়ি ও দেবর সবাই মিলে মারপিট করে তাকে গত ২৭ মে ঘর থেকে বের করে দেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মর্জিনার স্বামী আল আমিনের সংগে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বলেন, আমি তার কাছে কোন যৌতুক নেয়নি। আর নির্যাতন করেছি তাহলে মামলা করুক, ডাক্তারের সার্টিফিকেট দেখাক। প্রেসের লোকও ডেকেছিল। বিষয়টি পুলিশ ও এলাকাবাসী জানেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।