ভিডিও

বগুড়ায় বলাৎকারের কথা ফাঁস হওয়ার ভয়ে কিশোর তামিমকে হত্যা করা হয়, খুনি গ্রেপ্তার, স্বীকারোক্তি

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৪, ০৭:৩১ বিকাল
আপডেট: জুলাই ১২, ২০২৪, ১১:৩৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ার শেরপুরে ১৩ বছরের কিশোর তামিম হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। সেইসাথে হত্যাকান্ডের মূল নায়ক এমদাদুল (২২)কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বলাৎকারের কথা ফাঁস হওয়ার ভয়ে এমদাদুল তাকে হত্যা করে বলে স্বীকার করেছে। বগুড়ার নবাগত পুলিশ সুপার জাকির হাসান গতকাল তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান।

প্রেস ব্রিফিংকালে পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত এমদাদুল স্বীকার করে যে, সে  শেরপুরে স্থানিয় মান্নানের পুকুর ও গরুর খামার দেখাশোনার কাজ করে। গত ১০ জুলাই সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে তামিম (১৩) পুকুর পাড়ের ঘর হতে মাছের কিছু খাবার নেয়। বিষয়টি সে দেখে ফেলে এবং তামিমকে বলে তার সাথে কাজ (সেক্স) করতে হবে।

তামিম আসামির প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তামিমকে মালিকের কাছে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখায়। যার ফলে তামিম ভীত হয়ে এমদাদুলের প্রস্তাবে রাজী হয়। তখন তামিমকে পুকুর পাড়ের একটি ঘরে নিয়ে যায় এবং তামিমের সাথে অপ্রকৃতস্থ সংগমের ফলে তামিম এর মলদার ফেটে যায়।

এতে তামিম কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে এমদাদুল দুই হাত দিয়ে তামিম এর গলা চেপে ধরে। তবুও তামিম চিৎকারের চেষ্টা করলে সে তামিমের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

পরবর্তীতে এমদাদুল ওই ঘরে থাকা পাটের তৈরি ভুষির বস্তার মধ্যে তামিমের লাশ তুলে বস্তার মুখ শক্ত করে বেঁধে ঘরের পাশের পুকুরে থাকা প্লাস্টিকের ড্রামের তৈরী নৌকায় তুলে পুকুরের মাঝখানে নিয়ে ফেলে দেয় এবং প্রতিদিনের ন্যায় স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে থাকে। নিহত তামিম শেরপুর উপজেলার দক্ষিণ আমইন গ্রামের মুকুল আকন্দের ছেলে।

এদিকে, তামিম নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার মা সুফিয়া খাতুন শেরপুর থানায় উপস্থিত হয়ে একটি জিডি করেন। জিডিতে তার মা উল্লেখ করেন তার ছেলে তামিম (১৩)  গত ১০ জুলাই সকাল ৭ টার দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আর বাড়ি ফিরে আসেনি। এরপর থেকে তামিমকে খোঁজাখুজি করতে থাকে পুলিশ ও তার পরিবার।

এ অবস্থায় গত ১১ জুলাই সকাল ৮ টার দিকে পুকুরের পাহাড়াদার এমদাদুল (২২) পুকুর মালিক মান্নানকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংবাদ দেয় যে, পুকুরে একটি পাটের বস্তা ভাসছে। এতে পুকুর মালিক আব্দুল মান্নান তার সঙ্গীয় মোঃ বাদশাসহ পুকুরের উত্তরপাড়ে এসে ভাসমান চটের বস্তাটি পানি হতে তুলে বস্তার মুখ খুললে মানুষের পা দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে বস্তার মধ্যে থেকে কিশোর তামিমের লাশ উদ্ধার করে।

এরপর জেলা পুলিশ সুপার জাকির হাসান, পিপিএম এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শেরপুর সার্কেল সজীব শাহরীন এর তত্ত্বাবধানে ডিবি বগুড়া এবং শেরপুর থানার পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান শুরু করে।

অভিযানকালে নিঁখুত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায় গতকাল বৃহস্পতিবার শেরপুর উপজেলার আব্দুল মান্নানের পুকুর পাড় হতে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত মোঃ এমদাদুল হক (২২)কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

সে শেরপুরের দক্ষিণ আমইন গ্রামের মোঃ খাদেমুল ইসলামের ছেলে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে তামিম হত্যার কথা স্বীকার করে হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেয়। সেইসাথে হত্যাকান্ডের আলামত হিসাবে চটের ১টি বস্তা, গরু বাঁধার একটি রশি, কালো একটি স্যান্ডেল, একটি বেডসিট ও নীল রঙের প্লাস্টিকের ড্রাম কেটে বানানো নৌকা (যার মাঝখানে একটি কাঠের তক্তা রয়েছে) উদ্ধার করা হয়।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS