ভিডিও

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাড়া-কমার মধ্যে যমুনার পানি, বেড়েছে বাঙালিতে

পানিবন্দী ৬৮ হাজার মানুষ

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৪, ০৭:৫৩ বিকাল
আপডেট: জুলাই ১২, ২০২৪, ০৭:৫৩ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে এবং কমছে। তবে বেড়েছে বাঙালি নদীর পানি। কয়েকদিন ধরেই পানি বিপৎসীমার উপর থাকায় বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। এখনো ৬৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী। খাবার সংকটে রয়েছে ৭৫ হাজার গবাদিপশু। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় ১৪৫৭ হেক্টর জমির ফসল।

উপজেলায় সর্বশেষ গত ৪ জুলাই যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। উপজেলায় এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। সেদিন পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৬৩ মিটার। এরপর ৬ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে পানির উচ্চতা হয় ১৬.৮৪ মিটার। যা বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এরপর থেকেই পানি কমতে শুরু করে।

কয়েকদিনে ২৯ সেন্টিমিটার কমে ১০ জুলাই পানির উচ্চতা হয় ১৬.৫৫ মিটার। এরপর থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করে। ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে তার পরদিন ১১ জুলাই পানির উচ্চতা হয় ১৬.৬৭ মিটার। এরপর থেকেই পানি আবারও স্থিতিশীল হয়। তবে এখনো এ নদীতে পানি বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেলে পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৬৬  মিটার। অর্থাৎ পানি বিকেল ৩ টায় ১ সেন্টিমিটার কমেছে। এদিকে যমুনার সাথে পাল্লা দিয়ে বাঙালি নদীর পানিও বাড়ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টায় এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৬১ মিটার। আজ শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৩ টায় পানির উচ্চতা হয়েছে ১৪.৬৮ মিটার।

এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫.৩৬ মিটার। তাই পানি এখনো বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানি গত কয়েকদিন ধরেই বিপৎসীমার উপর থাকায় উপজেলার বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। উপজেলার ৮২ টি গ্রামের ৬৮ হাজার ৪০০ মানুষ গত কয়েকদিন ধরেই পানিবন্দী হয়ে আছে।

ফলে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন উপজেলার ১৭ হাজার ২৫০ টি পরিবার।এতে ১৪৫৭ হেক্টর কৃষি জমির ফসল প্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে। ফলে এ উপজেলার ১১ হাজারের বেশি কৃষক পরিবার দুশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করছেন।

পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার ৪০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান এখনো বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বানভাসি মানুষরা কেউ কেউ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

কেউবা নিজেদের বসতভিটার উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাথরুম পানিতে নিমজ্জিত থাকায় তারা এখন পয়ঃনিষ্কাশন জনিত সমস্যায় রয়েছেন এবং বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছেন।

এছাড়া চরাঞ্চলের মানুষরা তাদের গৃহপালিত পশু নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন। চরের বিশালাকার গো চারণভূমি প্লাবিত হওয়ার কারণে তারা পশুখাদ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না। কামালপুর ইছামারা গ্রামের আর্জিনা বেগম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই বাড়িতে পানি উঠেছে।

তাই বেড়িবাঁধে বাঁধের একটি ঝুপড়ি আশ্রয় নিয়েছি। রান্নাবান্না, টিউবওয়েলের পানি, বাথরুম এবং গরু ছাগলগুলো নিয়ে কষ্টেই আছি। গরু ছাগলের খাদ্য সংকট প্রকট। জমির ফসলগুলো তো পানিতে ডুবে আছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, ১৪৫৭ হেক্টর আক্রান্ত ফসলের মধ্যে ১২৫০ হেক্টর জমির পাটগাছ পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। যেহেতু গত কয়েকদিন ধরেই ফসলগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে, তাই ফসলগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুর রহমান বলেছেন, বন্যা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৬ টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র এবং ৫০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১১ হাজার ২৭০ টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে এবং ৫৫০ টি পরিবারের মধ্যে গো খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS