স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা এবং প্রথম প্যানেল মেয়র পরিমল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ অফিসে হামলা ও আগুন দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়েরের পর এই দুই নেতা আত্মগোপনে থাকায় পৌরসভার আর্থিক লেনদেনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অচিরেই আর্থিক লেনদেনের জন্য সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিকে দায়িত্ব না দিলে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা, ঠিকাদারি বিল এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সৃষ্ট সহিংসতার অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত ১৮ জুলাই বগুড়ায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, একই সাথে জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনির বাণিজ্যিক অফিসে অগ্নিসংযোগ, বগুড়া টাউন ক্লাবে হামলা, মুজিবমঞ্চে হামলা ভাঙচুর, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে হামলা ও ভাঙচুরের চেষ্টা, জেলা জাসদের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভাঙচুরসহ বিভিন্নস্থানে হামলা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে বগুড়ায় বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৪ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বগুড়া সদর থানায় দায়ের করা এই ১৪ মামলায় ১২৩৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা করা হয়েছে আরও অনেককে।
এর মধ্যে জেলার আওয়ামীলীগের অফিসে হামলার ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, প্যানেল মেয়র জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র দাস এবং প্যানেল মেয়র ৩ শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলার প্রেক্ষিতে পৌরসভার শীর্ষ দুই জনপ্রতিনিধি গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন।
পৌরসভার মেয়র আত্ম গোপনে থাকায় পৌরসভার আর্থিক লেন দেন হচ্ছেনা। আর্থিক লেন দেন না হওয়ায় কর্মচারিরা চলতি মাসের বেতন ভাতা পাওয়া নিয়ে শংকার মধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে ঠিকাদারেরা কাজ শেষে বিল উত্তোলন বিষয়েও রয়েছেন শংকার মধ্যে। আর্থিক লেন দেনের জন্য প্যানেল মেয়র-২ আলহাজ শেখকেও ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। এ কারনে নানাবিধ সমস্যার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বগুড়া পৌরসভা।
প্যানেল মেয়র-২ আলহাজ শেখ জানান, মেয়র রেজাউল করিম বাদশা পৌরসভায় না আসতে পারায় আর্থিক লেন দেন নিয়ে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। আগামী ২/৩ আগস্ট পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন ভাতা দেওয়ার কথা আছে। তিনি পৌরসভায় আসতে না পারলে বেতন ভাতা দেওয়া সম্ভব হবে না। ঠিকাদারী বিল দেওয়া সম্ভব হবে না। এছাড়াও আর্থিক লেন দেন করতে না পারলে পৌর সভার উন্নয়ন কর্মকান্ড বিঘ্নিত হবে।
স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক মো. মাসুম আলী বেগ জানান, পৌরবিধি অনুযায়ী মেয়রের অনুপস্থিতিতে প্যানেল মেয়র-১, তিনি না থাকলে পরবর্তী জনপ্রতিনিধি এই দায়িত্ব পান। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মন্ত্রনালয়ে বিষয়টি তুলে ধরে চিঠি দেওয়া হবে। চিঠির প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চিঠি আসবে। ওই চিঠিতে যে প্যানেল মেয়রকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তিনিই আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।