সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রায় দু’বছর পর উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি। এই অনুমোদনের ছ’মাস পর অর্থাৎ তিন বছর মেয়াদী কমিটির মেয়াদ শেষের মাত্র কয়েক মাস আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ করলো উপজেলা আওয়ামী লীগ। পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ নিয়ে কেন এমন লুকোচুরি তা বলতে নারাজ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম মন্টুকে সভাপতি ও আব্দুল খালেক দুলুকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন।
তখন থেকেই দীর্ঘ আড়াই বছর সারিয়াকান্দিতে কোনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল না। এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হতাশ ছিলেন, ছিল নীরব ক্ষোভও। অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গতকাল রোববার পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু ৭১ সদস্যবিশিষ্ট এই পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেন চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি। এই অনুমোদনের ছ’মাস পর প্রকাশ করা হলো এই কমিটির পদ-পদবি পাওয়া নেতাদের নামের তালিকা। অনুমোদনের ছ’মাস পর কেন কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হলো তা পরিস্কার করেননি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ এই কমিটিতে সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান, গত সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া শাহাজাদী আলম লিপি ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাককে সদস্য করা হয়েছে। এছাড়াও কমিটির সহ-সভাপতি ৯ জন। তারা হলেন-আব্দুর রশিদ ফারাজী, আনোয়ারুত তারিক মোহাম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সুরুতজ্জামান, এড. মন্তেজার রহমান মন্টু, অধ্যক্ষ সাহাদত হোসেন, আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা টুকু, মতিউর রহমান মতি, আপেল মাহমুদ লাভলু ও নাজমুল হক জামি।
কমিটিতে তিনজনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তারা হলেন-সাখাওয়াত হোসেন সজল, ইউনুস আলী ও আইয়ুব আলী তরফদার। নবগঠিত এ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকও তিনজন। তারা হলেন-আশিক আহম্মেদ, রাশেদুল ইসলাম রিপন ও প্রভাষক সুলতান মাহমুদ প্রিন্স।
কমিটিতে রিয়াজুল জান্নাত প্রিন্সকে আইনবিষয়ক সম্পাদক, শাহাদৎ হোসেনকে কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক, নূর মেহেদী হাসান আলোকে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, মজিবুর রহমানকে ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, মিজানুর রহমান মিজানকে দপ্তর সম্পাদক, জহুরুল হক চিশতিকে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এএসএম সিরাজুল ইসলামকে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, রাশেদ মোশারফকে বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক, জাহেদুল ইসলাম আকন্দকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, সাবিনা ইয়াসমিনকে মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ বাদশাকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক, মাশেদুল হক ঠান্ডাকে যুব ও ক্রিড়াবিষয়ক সম্পাদক, প্রভাষক রফিকুল ইসলামকে শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক, ওহেদুল ইসলামকে শ্রম সম্পাদক, মামুন জিয়াউল হক রতনকে সাংস্কৃতিক সম্পাদক, আবু বক্কর সিদ্দিককে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক, মাশেদুল হক হিরুকে সহ-দপ্তর সম্পাদক, আহসান হাবিব বিপ্লবকে সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং নাঈম রহমানকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন-সাহাদারা মান্নান এমপি, ম. আব্দুর রাজ্জাক, আবুল কালাম আজাদ, আনিসুজ্জামান মিন্টু, মোজাহেদুল ইসলাম বিপ্লব, মমতাজুর রহমান মন্ডল, রেজাউল ইসলাম, আশরাফ আলী, শাহাজাদী আলম লিপি, শোয়েব উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলীসহ রয়েছেন আনছার আলী মাস্টার।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম মন্টু বলেন, নানা জটিলতায় এতদিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করতে না পারায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।