ধুনট (বগুড়া) ও কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : নদী-নালা, খাল-বিল কিংবা জলাশয় না। নেই পানি প্রবাহ। প্রয়োজন নেই পানি নিস্কাশনেরও। কালভার্টের দুই পাশের মুখ বন্ধ। অথচ এমন শুকনো জায়গায় অপ্রয়োজনীয় বক্স কালভার্টটি বর্ধিত কাজে সরকারের গচ্চা প্রায় ৬৯ লাখ টাকা। অপরিকল্পিত এই বক্স কালভার্ট নির্মান করা হচ্ছে বগুড়ার ধুনট-কাজিপুরের ঢেকুরিয়া পাকা সড়কের মাধবডাঙ্গা গ্রামের অংশে।
এই কালভার্ট রাস্ট্রের অর্থের অপচয় বলে মনে করছে স্থানীয়রা। তাদের দাবি, একশ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তি নিজেদের কমিশনের স্বার্থে এলজিইডিতে তদবির করে এসব কাজ ভাগিয়ে আনে। আদতে জনস্বার্থ উপেক্ষিত থাকে।
আজ শনিবার (৩ আগস্ট) সরেজমিন দেখা যায়, ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর বাঁধ সংলগ্ন মাধবডাঙ্গা গ্রাম। ওই গ্রামের মাঝ দিয়ে ধুনট থেকে কাজিপুরের ঢেকুরিয়া বাজরের পাকা সড়ক। ওই সড়কের মাধবডাঙ্গা গ্রামে দীর্ঘদিন আগে একটি বক্স কালভার্ট নির্মান করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ও কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধায়নে এটি নির্মান করা হয়েছে।
পরবর্তীতে কালভার্টটির দুই পাশে বসতবাড়ি গড়ে তোলে স্থানীয়রা। ফলে বক্স কালভার্টটি অকেজো হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পক্ষ থেকে প্রয় ১০ মিটার দৈর্ঘ্য ওই কালভার্টের দুই পাশে বর্ধিত কাজের জন্য ৬৮ লাখ ৫৪ হাজার ১৭৪ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। মেসার্স জুয়েল ইলেট্রনিক্স নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু করেছে।
এ কাজ শেষ করার মেয়াদ ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর। ইতিমধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিতে এসব কাজ এলজিইডিতে তদবির করে ভাগিয়ে আনেন। প্রয়োজনীয়তা না থাকলেও সড়ক, কালভার্ট, সেতুর কাজ এনে কমিশন ভাগিয়ে নিয়ে তারা আড়ালেই থেকে যান।
ফলে সরকারের উন্নয়ন তহবিলের একটা অংশ অকারণেই খরচ হয়। জনগণের স্বার্থ ছাড়া কোনও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে ধরে নিতে হবে সেখানে দুর্নীতির উদ্দেশ্য রয়েছে। কোনও ব্যক্তির স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে এই অপ্রয়োজনীয় বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মাদ জাকির হোসেন বলেন, আপাতত দৃষ্টিতে বক্স কালভার্টটির প্রয়োজন মনে না হলেও ভবিষ্যৎ পরিকল্পা অনুযায়ী এটি বর্ধিতকরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।