রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের জনপদ নওগাঁর রাণীনগরে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। পুষ্টি ও রসে ভরা সি ভিটামিন খ্যাত এই মাল্টা গাছের ডগায় থোকায় থোকায় ঝুলছে। ইতোমধ্যে পরিপক্ক হওয়ার কারণে বাজারজাত করতে শুরু করেছে রাণীনগরে একমাত্র কৃষিভিত্তিক সমবায় প্রতিষ্ঠান “সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট”।
শেষ মুহূর্তে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন হবে এমনটাই বলছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সুফলা নওগাঁ বর্তমানে নতুন উচ্চমূল্যের রকমারি কৃষি ফসল ও উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তারা বলছেন, ফলন ভালো হলেও বাজার মূল্য কম থাকায় লাভের পরিমাণ নিয়ে তারা চিন্তায় আছেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালে ১৫ জন বেকার যুবক ও প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে সুফলা এগ্রো যাত্রা শুরু হলেও নানা কারণে ৫ জন উদ্যোক্তা এই বাগান থেকে চলে যায়। পরে ১০ জন যুবক মিলে এই উদ্যোগ গ্রহণ করে। যার প্রধান পরিচালক ছিলেন হাবিব রতন।
তিনি একজন কৃষি ডিপ্লোমাধারী। তার সৃজনশীল চিন্তায় শুরু হয় অভ্যন্তরীণ শেয়ারের অর্থ সংগ্রহ। প্রতি মাসে একটি শেয়ারের ১ হাজার টাকা সঞ্চয় হিসেবে ১০ জনের শেয়ারে ১০ হাজার টাকা সংগ্রহ হয়। প্রায় ৬ মাস অর্থ সংগ্রহের পর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের চকাদিন গ্রামে ২একর জমি ১০ বছরের জন্য লীজ নিয়ে শুরু হয় প্রাথমিক পর্যায়ে মিশ্র ফল বাগান।
সেখানে শোভা পাচ্ছে বাউ-৩ ও বারি-১ জাতের মাল্টা, হাবিব রতনের আধুনিক প্রযুক্তি সম্মিলিত পরামর্শ ও সকল সদস্যের একনিষ্ট পরিশ্রমে অল্প সময়ের মধ্যে ’সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট’ রাণীনগরে একটি মডেল মিশ্র ফল বাগান হিসেবে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠে।
এই প্রজেক্টের অর্থ সম্পাদক মোকাদ্দেস সরদার বলেন, চলতি মৌসুমে আমরা মাল্টা বিক্রয় করেছি ২লাখের বেশি। অন্যান্য ফলগুলো ও বিক্রয়ের প্রক্রিয়া চলছে। সব মিলে ভালো লাভ হবে বলে মনে করছি। প্রজেক্টের পরিচালক হাবিব রতন বলেন, তরুণ বেকার এবং প্রান্তিক উদ্যোগতাদের সাথে নিয়ে ২০১৯ সালে সম্মিলিতভাবে গড়ে তোলা হয় “সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট” নামের ব্যতিক্রমী কৃষি প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে নতুন করে আশা জাগাচ্ছে উচ্চ ফলনশীল মাল্টা চাষ। রোগবালাই প্রতিরোধী ও রপ্তানি যোগ্য মাল্টা লাভজনক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা হক বলেন, সুফলা নওগাঁ এগ্রো প্রজেক্ট কৃষির জগতে এক ব্যতিক্রমী নাম।
আধুনিক কৃষির অনুপ্রেরণা হচ্ছে সমবায় ভিত্তিক এই প্রজেক্টটি। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাল্টা চাষের জন্য সুফলা নওগাঁকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রেখেছি। এখানে ১ একর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে।
কোন রোগবালাই না থাকার কারণে ফলন ভালোসহ আশানূরুপ দাম পেলে তারা লাভবান হবে। ইতোমধ্যে তারা বাজারজাত শুরু করেছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।