ভিডিও

বিএনপি নেতার লুট করা ত্রাণ উদ্ধার করলো সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০৩:৩৮ দুপুর
আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০৩:৩৮ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

নিউজ ডেস্ক:  বন্যার্তদের দেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে শিক্ষার্থীদের ত্রাণের গাড়ি থেকে দলবল নিয়ে ৬০০ প্যাকেট ত্রাণ লুট করে নেন এক বিএনপি নেতা। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে লুট হওয়া ত্রাণ উদ্ধার করে ছাত্রদের ফিরিয়ে দেয়।

অভিযুক্ত এই বিএনপি নেতার নাম মো. একরাম। তিনি সুন্দলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও কালামুন্সি বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে সুন্দলপুর ইউনিয়নের কালামুন্সি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মো. সৌরভ (১৮) নামে একজনকে আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয়রা। আটক সৌরভ সুন্দলপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জাহের হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ দিতে যান। মঙ্গলবার সকাল থেকে কবিরহাটের কয়েকটি ইউনিয়নে তারা ত্রাণ বিতরণ করেন। বিকেলের দিকে সুন্দলপুরের কালামুন্সি বাজারের যান শিক্ষার্থীরা। এসময় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একরাম তার লোকজন দিয়ে ৬০০ প্যাকেট ত্রাণ গাড়ি থেকে নামিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আটক করে রাখেন। পরে শিক্ষার্থীরা কোনো উপায় না পেয়ে কবিরহাট থানায় অভিযোগ করেন। রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে ত্রাণগুলো উদ্ধার করে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করে।

শিক্ষার্থী তাসরিফুর রহমান নিহাদ বলেন, ত্রাণ লুটে বাধা দেওয়ায় হামলাকারীরা মো. মাঈন উদ্দিন আকাশ (১৬) নামে এক ছাত্রকে কুপিয়ে ও নিহাদ (১৬) নামে আরেক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেছে। পরে সেনাবাহিনী-পুলিশ আমাদের অভিযোগ শুনে ত্রাণগুলো উদ্ধার করে দেয়। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা একরামের অনুসারী ছাত্রদল নেতা সোহেলের নেতৃত্বে সৌরভ, রিফাত, নোমান, বাপ্পীসহ অনেকে ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। আমরা তাদের বিচার চাই।

স্থানীয়রা জানান, এতদিন একরাম নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ও তার স্ত্রী কবিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুন নাহার শিউলির আজ্ঞাবহ হিসেবে এলাকায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা করে চলতেন। শিউলিকে দিয়ে কালামুন্সি বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির পদও ভাগিয়ে নেন একরাম। এমনকি নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকেও ভয় দেখাতেন। ৫ আগস্টের পর বিএনপির হয়ে এলাকায় নিজের লোকজন দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছেন একরাম।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বা আমার লোকজনের বিরুদ্ধে ত্রাণ লুটের অভিযোগ সত্য নয়। ঢাকা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ত্রাণ স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীরা বিতরণের কথা বলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমি উদ্ধারের ব্যবস্থা করি। এখন একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। অন্যদিকে কালামুন্সি বাজার কমিটির সভাপতি হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শিউলি একরামকে ফুল দিয়েছি। আর এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে শামীম ওসমানের সঙ্গে দেখা হলে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছি।

জানতে চাইলে কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযুক্ত নেতার কাছে সাংগঠনিকভাবে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে। অসাংগঠনিক কোনো বিষয় প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এছাড়া বিভিন্নস্থানে হামলার বিষয়ে বিএনপির এ নেতা বলে, ৫ আগস্টের আগে যারা ছাত্রলীগের সঙ্গে ছিল, তারাই এখন আমাদের লোকজনের ওপর ভর করে অনিয়ম করে বেড়াচ্ছে।

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ন কবির বলেন, খবর পেয়ে ছাত্রদের ত্রাণগুলো উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হয়েছে। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। সবাই একই এলাকার হওয়ায় শিক্ষার্থীরা মীমাংসার কথা জানিয়েছেন। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS