বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন আজ। একজন শিল্পী হিসেবে তিনি বাস্তববাদী এবং বুদ্ধিদীপ্ত সিনেমা তৈরিতে বিশ্বাস করতেন। তিনি মনে করতেন যে ভারতীয় দর্শকরা নিম্নমানের চলচ্চিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়েছে এবং তাদের আরও ভালো শিল্পের প্রয়োজন।
১৯৮৯ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতীয় দর্শকরা অনেক পিছিয়ে।’ তার এই বক্তব্য সেই সময়ে বিতর্কের ঝড় তুলেছিল। কিন্তু তার মৃত্যুর এত বছর পর এখনও এর প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে বলে মানেন অনেকে।
১৯৮০-র দশকে ভারতীয় সিনেমা জগতে বাণিজ্যিক সিনেমারই আধিপত্য ছিল। সিনেমাকে শিল্প, সমাজের দর্পণ বা মতাদর্শ গঠনের মাধ্যম হিসেবে সেভাবে ভাবা হতো না।
সেই সময় তার ‘দেবী’ সিনেমা ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। কট্টর ধর্মবাদীদের অভিযোগ ছিল, ‘সত্যজিৎ হিন্দুবিরোধী, তাই এমন সিনেমা বানাচ্ছেন।’ কিন্তু সত্যজিৎ যে ধর্মের গোঁড়ামির (ডগম্যাটিজম) বিরুদ্ধে বলছেন, তা ধরতে পারেননি অনেকেই।
এর প্রেক্ষিতে সত্যজিৎ বলেছিলেন, ‘আমি একবার দেবী নামে একটি সিনেমা করেছি; এটা ধর্মীয় গোঁড়ামির সমালোচনা ছিল। এটা ধর্মকে আক্রমণ করেনি, বরং ধর্মীয় গোঁড়ামির চরম রূপকে তুলে ধরা হয়েছিল... কিন্তু, সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, ‘সত্যজিৎ রায় হিন্দু নন; তাই তিনি হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে সিনেমা তৈরি করছেন।’ কিন্তু তারা নির্বোধ, তাদের ধর্তব্যের মধ্যে আনা যাবে না। ভারতে প্রতিনিয়তই এমনটা হয়। ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলন এবং অন্যান্য উদ্যোগ সত্ত্বেও আমাদের এখানে বেশিরভাগই পিছিয়ে পড়া দর্শক রয়েছেন। আপনি যদি বৃহত্তরভাবে দর্শককুলকে বিবেচনা করেন, তবে আমাদের অনেক পিছিয়ে পড়া দর্শকের সংখ্যাই বেশি।’
অনেকেই সেই সময় সত্যজিৎ রায়ের বক্তব্যের সমালোচনা করেছিলেন। তবে আজ এসে তার সেই কথাই মেনে নিচ্ছেন তারা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।