অভি মঈনুদ্দীন: রথীন্দ্রনাথ রায়, বাংলাদেশের প্রখ্যাত একজন লোকসঙ্গীত শিল্পী। অনেক দেশাত্ববোধক গান গেয়ে তিনি এদেশের শ্রোতা দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতারের নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী হিসেবে গান পরিবেশন করে অনন্য ভূমিকা পালন করেন এবং কণ্ঠ যুদ্ধশিল্পী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক’প্রাপ্ত উপমহাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার, প্রযোজক, পরিচালক, কাহিনীকার প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা তিনটি গান রথীন্দ্র নাথ রায়ের কন্ঠে সারা দেশের সঙ্গীতপ্রেমী শ্রোতা দর্শকের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো।
গান তিনটি হচ্ছে ‘খোদার ঘরে নালিশ করতে দিলোনা আমারে’,‘ তুমি আরেকবার আসিয়া যাও মোরে কান্দাইয়া’ ও ‘সবাই বলে বয়স বাড়ে আমি বলি কমেরে’। গান তিনটি যথাক্রমে ‘নালিশ’,‘নাগরদোলা’ ও ‘ফকির মজনুশাহ’ সিনেমার। গানগুলোর সুর সৃষ্টি করেছেন প্রয়াত আলাউদ্দিন আলী। চ্যানেল আইতে টানা পাঁচ বছর গাজী মাজহারুল আনোয়ার বেঁচে থাকাকালীন সময়ে ‘পালকি’ শিরোনামের একটি অনুষ্ঠান হতো। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা করতেন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে গায়িকা, উপস্থাপিকা দিঠি আনোয়ার। তার বাবার মৃত্যুর পর অনুষ্ঠানটির প্রচারণা বন্ধ হয়ে যায়। তবে ‘পালকি’ অনুষ্ঠান চলাকালে আমেরিকা থেকে এসে এই আয়োজনে অংশগ্রহন করেছিলেন রথীন্দ্রনাথ রায়। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সামনে বসেই দিঠি আনোয়ারের উপস্থাপনায় রথীন্দ্রনাথ রায় গানগুলো নিয়ে স্মৃতি চারণ করেছিলেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ারও গানগুলো নিয়ে পিছনের গল্প করেছিলেন। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে রথীন্দ্রনাথ রায়ের এই পর্বটি প্রচারিত হয়েছিলো। এখনো ইউটিউবে পর্বটি আছে।
রথীন্দ্রনাথ রায়ের কন্ঠে আরো বেশকিছু জনপ্রিয় গান আছে। কিন্তু তারপরও গাজী মাজহারুল আনোয়ারেলর লেখা এই তিনটি গান অধিক জনপ্রিয়, যা এখনো এই প্রজন্মের শিল্পীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেয়ে থাকেন। দিঠি আনোয়ার বলেন,‘ আব্বু, আলাউদ্দিন আলী চাচা, কিরণ চাচার মধ্যে একটা অন্যরকম আত্নার সম্পর্ক ছিলো। তাদের তিনজনের সমন্বিত এই তিনটি গান এখনো অনেক জনপ্রিয়। আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো আব্বু এবং কিরণ চাচাকে নিয়ে পালকি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করার এবং গানে গানে গল্প করার। অনেক কথা উঠে এসেছে স্মৃতিচারণে। আব্বুর লেখা আরো বেশ কয়েকটি গান কিরণ চাচা গেয়েছেন। তবে এই তিনটি গান অধিক জনপ্রিয়। আমারতো মনে হয় বাংলাদেশে যতোদিন থাকবে এই গানগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্মের গায়ক-শ্রোতা-দর্শকের মধ্যে বেঁচে থাকবে। কারণ এই গানগুলো মানুষের মনের গভীরে গেঁথে থাকার মতো গান।’
এদিকে দিঠির বড় ছেলে আদিয়ান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ‘জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি’তে বিজনেজ ম্যানেজম্যান্টে ভর্তি হয়েছেন। ছেলের পড়াশুনা শুরুর যাবতীয় কাজ শেষে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন দিঠি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।