অভি মঈনুদ্দীন: শাবানা, শাবনাজ, শাবনূর-বাংলাদেশের সিনেমার নন্দিত এই তিন নায়িকা নিজেদের পারিবারিক নাম ‘রত্না’,‘ তানিয়া’ ও ‘নূপুর’ পরিবর্তন করেই পরিচালক এহতেশামের দেয়া নাম দিয়েই সিনেমার নায়িকা হিসেবে দর্শকের কাছে পরিচিত হন।
চিত্রনায়িকা শাহনূরের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটিই হয়েছে। শাহনূরের পারিবারিক নাম ছিলো মৌসুমী। বাবা মা আদর করে মৌসুমী বলেই ডাকতেন। কিন্তু ১৯৯৯ সালে এম এ খালেক পরিচালিত ‘ফাঁসির আদেশ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নায়িকা হিসেবে মৌসুমীর যাত্রা শুরু হলে সেই সময় মৌসুমী নামেই শীর্ষ একজন নায়িকা থাকায় পারিবারিক নাম মৌসুমী বাদ দিয়ে পরিচালক এম এ খালেক তার নাম রাখেন শাহনূর। সেই থেকে মৌসুমী হয়ে গেলেন শাহনূর। কিন্তু শাহনূর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ফাঁসির আদেশ’ পরে আর মুক্তি পায়নি।
২০০০ সালের ৯ জানুয়ারি জিল্লুর রহমান ময়না পরিচালিত ‘জিদ্দি সন্তান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় তার অভিষেক ঘটে। সিনেমাটিতে তার বিপরীতে ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম ব্যস্ত নায়ক রুবেল। দেখতে দেখতে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পথচলায় শাহনূর এরইমধ্যে দুই যুগ পার করেছেন। জিদ্দি সন্তান’র পর নানা সময়ে তার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে ‘স্বপ্নের বাসর’, ‘হাজার বছর ধরে’, ‘মায়ের জন্য যুদ্ধ’, ‘শেষ যুদ্ধ’, ‘রাজধানী’, ‘নয়ন ভরা জল’, ‘লাভ স্টেশন’, ‘প্রেম সংঘাত’, ‘কারাগার’, ‘ইন্দুবালা’ ইত্যাদি। তার অভিনীত ৫০তম চলচ্চিত্র হচ্ছে বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘রাজা বাবু’।
এদিকে শাহনূর অভিনীত মুক্তি প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে ‘জীবন যন্ত্রণা’, ‘অপহরণ’, ‘হবারতো হবেই প্রেম’, ‘কে আমার শত্রু’, এবং ‘কাকতাড়ুয়া’। এরইমধ্যে শাহনূর শিগগিরই নতুন নতুন কাজে অংশ নিতে যাচ্ছেন। তারমধ্যে রয়েছে নতুন সিনেমা, নতুন ধারাবাহিক নাটক। শাহনূর অভিনীত প্রথম নাটক ‘কুয়াশার শেষ চিঠি’। তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক জাহাঙ্গীর আলম সুমন পরিচালিত ‘তামাদি’। শাহনূরের পারিবারিক নাম সৈয়দা কামরুন্নাহার মৌসুমী। তার বাবা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মোজাফফর আলী এবং মা তাসলিমা খানম। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ তার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তি হয়নি। তবে এই নিয়ে তার কোনো দুঃখবোধও নেই। কারণ অভিনয় জীবনে চলার পথে তিনি পেয়েছেন অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা। পেয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রতিথযশা সংগঠন কর্তৃক সম্মাননা। যেসব সম্মাননা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হাত থেকে তিনি গ্রহন করেছেন।
শাহনূর বলেন,‘ আজ ফেলে আসা দিনের অনেক স্মৃতিই মনে পড়ছে। চলার পথে যারা শুরু থেকে অনুপ্রেরণা দিয়ে এসেছিলেন, তাদের কেউই আজ নেই। জীবনে অনেক মানুষ হারিয়ে গেছে। মাঝে মাঝে তাদের খুব মিস করি। সত্যি বলতে কী আমাদের ছোট্ট একটা জীবন, অথচ কতো শত চাওয়া। আমার কিন্তু জীবনে খুউব বেশি চাওয়া নেই। এই এখন যেমন আছি ভালো আছি। বাবা নেই, খুব মিস করি। আম্মা সঙ্গে আছেন। মাকে নিয়েই আমার সুখের পৃথিবী। ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা আমার চলচ্চিত্র জীবনে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, ধন্যবাদ সকল দর্শক ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতি।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।