অভি মঈনুদ্দীন: ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সিনেমার রাজপুত্র অমর নায়ক সালমান শাহ ইন্তেকাল করেছিলেন। মৃত্যুর এতো বছর পরও তার মৃত্যুর রহস্যের উদঘাটন হয়নি। এখনো কেউ বলছেন তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, কেউ বলছেন তাকে খুন করা হয়েছে আবার কেউ কেউ বলছেন তিনি আত্নহত্যা করেছেন। যে মানুষটা মৃত্যুর দু’দিন আগেও হাস্যোজ্জ্বলভাবে একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার গ্রহন করেছিলেন, কী এমন ঘটেছিলো যে তাকে মৃত্যু বরণ করতে হলো।
১৯৯৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহবাগস্থ পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে এস সরকার বাবুর আয়োজনে ‘ইয়ূথ অ্যাণ্ড সোসাল ডেভেলপম্যান্ট অর্গানাইজেশন’-এর উদ্যোগে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সালমান শাহ’র সঙ্গে আইয়ূব বাচ্চু, জাহিদ হাসান, শুভ্র দেব, আফসানা মিমি’সহ আরো অনেকেই সম্মাননা গ্রহন করেন। অনুষ্ঠানে শাবনূরের যাবার কথা থাকলেও তিনি শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে যাননি। অনুষ্ঠানটি ‘ষ্টার টেইলার্স’র মালিক মোজাম্মেল হোসেন ভুলু’র সৌজন্যে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়া জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক আজকের কাগজ’র সম্পাদক ক্জাী শাহেদ ও দানবীর কাজী সাহাবুদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছিলেন নওশীন শাহরীন পূরবী। বিষয়টি প্রথম নিশ্চিত করেন মডেল, অভিনেত্রী রেবেকা সুলতানা দীপা। পরবর্তীতে বিষয়টি আরো নিশ্চিত করেন সেই অনুষ্ঠানে যিনি ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছিলেন ফিরোজ দেওয়ান। পরবর্তীতে দীপার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করা হয় পূরবীর সঙ্গে। পূরবীকে খোঁজা হচ্ছে , বিষয়টি জেনে তিনিও বিষ্মিত হন। এতো বছর পর কোন খোঁজ করা হলো এ নিয়ে যেন তারও মাঝে বেশ কৌতুহল ছিলো। বিয়ষটি এমন যে সালমান শাহ এমন একজন নায়ক ছিলেন তারসঙ্গে যে কারো স্মৃতিচারণ দর্শকের কাছে ভালোলাগার সৃষ্টি করে। তাই তাকে খুঁজে বের করা। পূরবী একজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ। সেই অনুষ্ঠানের এক বছর পর সালমান শাহকে নিয়ে ১৯৯৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানেরও উপস্থাপনা করেছিলেন পূরবী।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস,এমসিপিএস করা পূরবী রাজধানীর ‘পাভা হেলথ’ সেন্টারে বসেন। তার একমাত্র সন্তান আয়ান। পূরবী স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন,‘ যে সময়টাতে আমি ঐ অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছিলাম সেই সময়টাতে আমি সালমান ভাইয়ার কেয়ামত থেকে কেয়ামত-সহ তার অভিনীত আরো বেশকিছু সিনেমা হলে গিয়ে দেখেছি। আমার যতোদূর মনেপড়ে পুরো আয়োজনে তিনিই যেন আলো ছড়িয়েছিলেন। তাকে ঘিরেই ছিলো সবার মধ্যে প্রবল উচ্ছ্বাস আনন্দ। যেহেতু আমার উপর উপস্থাপনার দায়িত্ব ছিলো তাই তারসঙ্গে ছবি তোলার তেমন সুযোগ ছিলোনা। কিন্তু একদিন পরই যখন তার মৃত্যুর খবরটা শুনলাম, কোনোভাবেই তা বিশ্বাস হচ্ছিলো না। খুব কষ্ট হয়েছিলো মেনে নিতে।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।