ভিডিও

বেইলি রোডে বহুতল ভবনে আগুনে অন্তত ৪৩ মৃত্যু

প্রকাশিত: মার্চ ০১, ২০২৪, ০২:১১ রাত
আপডেট: মার্চ ০১, ২০২৪, ০১:০৩ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

১০ জন মারা যান শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে, ঢাকা মেডিকেলে মারা যান ৩৩ জন।

রাজধানীর বেইলি রোডের ছয়তলা ভবনে আগুনে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিন জনের, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ১১ জনের মৃত্যুর কথা জানান।

এরপর ২০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. আলাউদ্দিন।


এক বন্ধুর মৃত্যুর কথা শুনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কান্নাকাটি করছিলেন এই তরুণ।
পরে রাত ১ টা ৫৫ মিনিটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন ৪৩ জনের মৃত্যুর তথ্য জানান। এর মধ্যে ১০ জন মারা যান শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে, ঢাকা মেডিকেলে মারা যান ৩৩ জন।

মন্ত্রী আরো জানান, এখনো ২২ জনকে নিয়ে তারা শঙ্কায়। তাদের সবার কণ্ঠনালী পুড়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে বারোটা থেকে একটার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে থাকে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স। সেগুলোতে থাকা মানুষের দেহের বেশিরভাগই নিথর। 


বেইলি রোডে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে আনা রোগী
রাত দেড়টার পর ট্রাকে ভরে আনা হয় মরদেহ। তাৎক্ষণিকভাবে গুনে ৩৫টি মরদেহ পাওয়ার কথা বলছেন কর্মীরা।

দেহগুলোকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ঢাকা মেডিকেলের ৭ নম্বর অবজারভেশন ওয়ার্ডে। সেখান থেকে পাঠানো হতে থাকে মর্গে।

হাসপাতাল জুড়ে স্বজনদের কান্না, ভিড় সামলাতে বাঁশির শব্দ আর মাঝে মাঝে আসতে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ।


একেকটা অ্যাম্বুলেন্স আসার পর শুরু হচ্ছে হাসপাতাল কর্মীদের ছোটাছুটি। 'সরেন সরেন', ‘রাস্তায় কেউ দাঁড়াবেন না’, এমন কথা বলতে বলতে সমানে দৌড়াদৌড়ি করে চলেছেন হাসপাতালে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসারেরা। প্রস্তুতি আরও অ্যাম্বুলেন্সর।

কাঁদতে কাঁদতে বন্ধুদের কাছে ভর দিয়ে হাসপাতালে ঢুকছিলেন এক তরুণ। ঢোকার মুখেই আর এক বন্ধুর কাছে শুনলেন প্রিয়জনটি শুয়ে আছে মর্গে। সেটি শুনে মেঝেতেই লুটিয়ে কাঁদতে শুরু করলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগুন লাগে। ভবনটিতে কাচ্চি ভাই, ইলিয়েনসহ বেশ কয়েকটি দোকান আছে।

কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আর এ সময় বেশ কজনকে জীবিত, বেশ কয়েকজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।


কিছুক্ষণ পরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বার্ন ইউনিটে আসছিল অ্যাম্বুলেন্স
রাত একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাহবাগ থানার এস আই মহিদুল ইসলাম জানান, রাত একটা পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিকেলে আসা ১১ জনের লাশ গুনেছেন। নিহত ব্যক্তিদের ছবি তুলে রাখছেন তিনি। ঘটনাস্থলে আরো কতজন আছে তারা তারা এখনো জানেন না।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুহিত উদ্দিন বলেন, “বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। এখনো সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।”

রাত সোয়া একটার দিকে পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “৪২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা তাদের বিষয়ে শঙ্কিত। তাদের চিকিৎসা ও জীবন রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি।“


সব মিলিয়ে ভবনটি থেকে ৭৫ জনকে উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।

নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্যের মেয়ে আছে বলেও উল্লেখ করেন আইজিপি।

রাত সোয়া একটার দিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে ফায়ারের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়া জেনারেল মঈন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা তিনজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি এবং অচেতন অবস্থায় ৪২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মহিলা ২১ জন, চার জন শিশু, বাকি ছিল পুরুষ।


বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগুন লাগে।
তিনি বলেন, “দ্বিতীয় তলা ছাড়া প্রতিটি তলাতে এমনকি সিঁড়িতে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল। এ জন্য এটা বিপজ্জনক।”

আগুনের কারণ কী- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার ধারণা চুলা থেকে অথবা গ্যাস লিক থেকে আগুন হতে পারে।”

এই ভবনে কেবল একটি সিঁড়ি ছিল বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের প্রধান।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS