ভিডিও

বিদেশিদের কথায় দেশ চলবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: মার্চ ০৬, ২০২৪, ১১:১২ দুপুর
আপডেট: মার্চ ০৬, ২০২৪, ১২:১১ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন,‘বিদেশিদের কাছে নালিশ  করে কোনো লাভ হবেনা।  আর বিদেশিদের কথায় দেশ চলবে না। আমরা প্রতিটি দেশের নির্বাচন দেখেছি। বরং গণতান্ত্রিক  ধারা  বজায়  রেখে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।

গতকাল মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সুষ্ঠুভাবে চলবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে যাবে। সংসদকে সুষ্ঠু ও কার্যকরভাবে পরিচালনার  লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ৫০টি সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং সংসদে পাস হয়েছে।

চলতি  অধিবেশনের শেষ দিনে অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনের নামে দেশে অগ্নিসংযোগের মতো তাণ্ডব চালানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত চক্রের কড়া সমালোচনা করেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) এখন বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে যে, রাজনৈতিক কারণে তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও পৃষ্ঠপোষকতা, অর্থায়ন এবং অগ্নিসংযোগের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা নৃশংস তাণ্ডব চালিয়ে কয়েকশ নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে এবং তাদের অনেককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়।

২০১৩-২০১৫ এবং ২০২৩  সালের ২৩ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের ওপর একটি ভিডিও ক্লিপ জাতীয় সংসদে প্রদর্শন করা হয়। যাতে তাদের বর্বরতা ফুটে ওঠে। ভিডিও ক্লিপ দেখানোর পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে যা দেখানো হয়েছে তা খুবই নগণ্য। দিনের পর দিন তারা এটা করেছে। যারা এ ধরনের জঘন্য কাজের সাথে জড়িত তাদের ক্ষমা করা  হবে না। তাদের বিচারের  মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তাদের কাউকেই রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হয়নি। যারা এ সব কাজে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে, অর্থায়ন করেছে এবং এই ধরনের কাজের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের আর ছাড় দেওয়া  হবে না।

প্রধানমন্ত্রী আইন প্রণেতাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এবং অপরাধীরা যাতে তাদের অপকর্মের শাস্তি পায় তা নিশ্চিত করতে বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি বোমা হামলায় এমনকি নারী ও শিশুও মারা গেছে। একই চরিত্র... গাজায় যা  ইসরায়েল করছে, বিএনপি এখানে (বাংলাদেশে তাই করছে)। বিএনপি বাংলাদেশের জন্য আজরাইল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিএনপির চরিত্রই হচ্ছে মানুষ হত্যা করা এবং দুর্নীতি করা।

তিনি বলেন, বিএনপি কর্মীরা লন্ডন থেকে নির্দেশ পেয়ে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করছে এবং হামলার ছবি লন্ডনে পাঠিয়েছে। কী ধরনের নেতা? এবং কী ধরনের কর্মী তারা? কীভাবে তারা মানুষকে হত্যা করে?

প্রধানমন্ত্রী এ সব নৈরাজ্যকর কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য জনগণের প্রতিও আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না কারণ তারা জানে যে তারা ভোট এবং জনসমর্থনও পাবে না। জনগণের প্রতি তাদের আস্থা নেই।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা জি এম কাদেরের এক মন্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে এ ধরনের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ কোনো নির্বাচন হয়নি।

তিনি বলেন, এই নির্বাচনের সবচেয়ে স্বীকৃত বিষয় হলো নির্বাচনে জনগণ বিশেষ করে নারী, নতুন ও তরুণ ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ।

২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২৩৩টি আসন পেয়েছিল এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ৩০০টির মধ্যে ৩০টি আসন পেয়েছিল।এরপর থেকে বিএনপি নির্বাচনকে এড়িয়ে আন্দোলন শুরু  করে।

 শেখ হাসিনা বলেন, জিএম কাদের দুই স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও তার ভাই এইচএম এরশাদের সময়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরিসংখ্যান দেখাননি। একজন সামরিক স্বৈরশাসক নির্বাচনে কারচুপির পথ দেখিয়েছিলেন, আরেকজন একই পথে হেঁটেছেন।

এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৬ সালের নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, তৎকালীন সরকার ভোটের বাক্স তালাবদ্ধ করে এবং ৪৮ ঘণ্টা পর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছিল। কারণ, নির্বাচনে প্রকৃতপক্ষে জয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, আমি খুশি হব যদি তিনি (জিএম কাদের) তার ভাইয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলের পরিসংখ্যানও দেখান।

বিএনপি সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের মতো ১৯৮৬ সালের নির্বাচনও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। ভোট কারচুপির জন্য জনগণের আন্দোলনের  মুখে খালেদাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ এতগুলো আসন কীভাবে পেল তা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। আওয়ামী লীগ বারবার জনসমর্থন পেয়েছে কারণ এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এ দলটি যখনই ক্ষমতায় আসে, তারা জনগণের সেবা করে এবং মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে। আগামী পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার ২০২৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS