ভিডিও

কক্সবাজারে মাদক মামলা দ্রুত নিষ্পতির নির্দেশনা প্রধান বিচারপতির

প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২৪, ০৭:০০ বিকাল
আপডেট: মে ১৮, ২০২৪, ০৭:০০ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

কক্সবাজারে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত হচ্ছে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’। আইন ও বিচার বিভাগের তত্বাবধানে ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার আদালত পাড়ায় গণপূর্ত বিভাগ কাজটি বাস্তবায়ন করছে। শনিবার (১৮ মে) সকালে ‘ন্যায়কুঞ্জের’ ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

এ সময় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আদালতে বিচার প্রার্থীরা ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্যই আসেন। ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার বাংলাদেশের সকল নাগরিকের রয়েছে। এটা মানুষের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। আদালতের কর্তব্য হচ্ছে বিচারপ্রার্থী সব নাগরিকের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা।’

 

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আদালতে আসা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন। ন্যায়কুঞ্জ বিচারপ্রার্থীদের স্বস্তি ও নিরাপত্তা বাড়াবে। পাশাপাশি অযথা বিড়ম্বনা ও হয়রানি কমাবে।’

এ সময় কক্সবাজারের মাদকের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।

 
 

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আপীল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, আপীল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, আপীল বিভাগের সদ্য সাবেক বিচারপতি বোরহানউদ্দিন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাঈমা হায়দার, মো. হাবিবুল গণি, শেখ হাসান আরিফ, জে.বি.এম হাসান, জাফর আহমেদ, ভীষ্মদেব চক্রবর্তী, মো. ইকবাল কবির, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এস.এম কুদ্দুস জামান, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ছিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. রেজাউর রহমান প্রমুখ।

জানা যায়, নির্মাণাধীন ন্যায়কুঞ্জের আয়তন এক হাজার বর্গফুট। অত্যাধুনিক নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীতে ডিজাইন করা সুপরিসর আধুনিক বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জে একত্রে ৬০/৭০ জন বিচারপ্রার্থীদের বসার জায়গা, ওয়াশরুম, ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার, ফাস্টফুডের দোকান, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা কক্ষে বসার ব্যবস্থাসহ বহুমুখী সুবিধা থাকবে।

নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ সম্পর্কে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. রেজাউর রহমান বলেন, ‘মানুষ দূর-দূরাস্ত থেকে আদালতে আসেন, কেউ আসেন বিপদে পড়ে, আবার কেউ বিপদ থেকে উদ্ধার হতে এখানে আসেন। এসব বিচারপ্রার্থীরা আইনজীবীর চেম্বারে গিয়ে সাক্ষাতের পর এবং আদালতে যাওয়ার আগে-পরে আর বিশ্রামের জন্য কমন কোনো জায়গা পাননা। বিশেষ করে নারী ও বয়স্ক বিচারপ্রার্থীদের আদালত পাড়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ বিচারপ্রার্থীদের সেই দুর্ভোগ লাগবে সহায়ক হবে।’

কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীদের বসার জন্য একটি স্থান খুবই প্রয়োজন ছিল। কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট বিচারব্যবস্থার অংশ।’

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে আমাদের কাছে আসেন। জুডিসিয়ারির স্টেকহোল্ডার হচ্ছেন তারা। তাদের জন্য বিচার। কিন্তু তাদের বসার জন্য, জরুরি প্রয়োজন সারার জন্য কোনো ব্যবস্থা (ওয়াশরুম) আদালত প্রাঙ্গণে নেই। আবার বিচারপ্রার্থীরা আদালত এলাকায় বিভিন্ন সময় টাউট বাটপারের খপ্পরে পড়ে অযথা হয়রানির শিকার হন। নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ বিচারপ্রার্থীদের একদিকে, হয়রানি থেকে মুক্ত করবে, অন্যদিকে নিরাপদে বসার জায়গা হবে। তবে ন্যায়কুঞ্জ যেন দালাল, টাউট, বাটপারের দখলে চলে না যায়, তাদের ব্যবসার ক্ষেত্র বানিয়ে না ফেলে। সেদিকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুনজর রাখতে হবে।’

সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতি, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও ৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ শুক্রবার সপরিবারে প্রধান বিচারপতি দুইদিনের সফরে কক্সবাজার এসেছেন। এর আগে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান টেকনাফ উপজেলার শীলখালীতে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জন্য নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করেছেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS