ভিডিও

এমপি আনার হত্যার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ সম্পর্কে যা জানা গেল!

প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৪, ০৪:১৫ দুপুর
আপডেট: মে ২৩, ২০২৪, ০৯:৫৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় পরিকল্পিত ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের এক ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। 

তদন্ত সংশ্লিষ্টদের দাবি, ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বের জের ধরে এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়ীক পার্টনার আখতারুজ্জামান শাহীন! সে ঝিনাইদহের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তার ভাই সহিদুজ্জামান ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর মেয়র। কলকাতার নিউটাউনে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিম খুন হয় সেটিও ভাড়া নেয় শাহীন।

তারা জানান, গত ৩০ এপ্রিল আখতারুজ্জামান শাহীন চরমপন্থি নেতা আমান ও শিলিস্তা রহমান নামে নিজের এক বান্ধবীকে নিয়ে কলকাতা যান। সেখানে আগে থেকেই ভাড়া করে রাখা নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে ওঠেন তারা। কলকাতায় আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন আখতারুজ্জামানের দুই সহযোগী সিয়াম ও জিহাদ। সেখানে বসে তারা এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যার পুরো দায়িত্ব আমানকে বুঝিয়ে দিয়ে ১০ মে দেশে ফিরে আসেন আখতারুজ্জামান। আনোয়ারুল আজিম নিখোঁজের বিষয়টি দেশে আলোচিত হলে তিনি ১৮ মে আবারও ভারত হয়ে নেপালে চলে যান। ২১ মে নেপাল থেকে চলে যান দুবাই। ২২ মে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। অন্যদিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী ১১ মে আমান বাংলাদেশ থেকে ফয়সাল শাজী ও মোস্তাফিজ নামে আরও দুই ভাড়াটে খুনিকে কলকাতায় নিয়ে যান।

আমানকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, এমপি আনার যে ১২ মে কলকাতায় যাবেন তা আগে থেকেই জানতেন আখতারুজ্জামান। ১২ মে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় যান এমপি আনার। প্রথম দিন তিনি তার বন্ধু গোপালের বাসায় থাকেন। পরদিন ১৩ মে কৌশলে এমপি আনারকে নিউটাউনের সেই ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে যায় হত্যাকারীরা। বিকেলের দিকে এমপি আনার সঞ্জিভা গার্ডেনের সেই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। এরপর আমান তার সহযোগী ফয়সাল, মোস্তাফিজ, সিয়াম ও জিহাদ মিলে এমপিকে চাপাতির মুখে জিম্মি করেন। এ সময় তারা এমপির কাছে আখতারুজ্জামানের পাওনা টাকা পরিশোধের কথাও বলেন। বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সবাই মিলে আনারকে জাপটে ধরে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর আমান বিষয়টি আখতারুজ্জামানকে জানান।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আরও জানান, আখতারুজ্জামানের পরামর্শমতো লাশ গুম করতে এমপি আনারকে টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর ফ্ল্যাটের কাছেই শপিংমল থেকে আনা হয় দুটো বড় ট্রলিব্যাগ ও পলিথিন। পরে টুকরোগুলো পলিথিনে পেঁচিয়ে ট্রলিব্যাগে ভরা হয়। ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে ঘরের রক্তের দাগ পরিষ্কার করে তারা। আমানের স্বীকারোক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পরদিন বিকেলে একটি ট্রলিব্যাগ হাতে নিয়ে বাসা থেকে বের হন আমান। জিজ্ঞাসাবাদে তিন পুলিশকে জানিয়েছেন, বাসা থেকে বের হয়ে পাশের একটি শপিংমলের সামনে ট্রলিব্যাগটি তিনি সিয়ামের হাতে তুলে দেন। সিয়াম ব্যাগ নিয়ে আগে থেকেই ভাড়া করে রাখা গাড়ি নিয়ে অজ্ঞাত স্থানের দিকে চলে যান। আমান আরও জানান, আরেকটি ব্যাগ বাসাতেই ছিল। ওই ব্যাগ থেকে দুর্গন্ধও ছড়ানো শুরু করেছিল। সহযোগীদের ট্রলিটি অন্য কোথাও ফেলে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে ১৫ মে শিলিস্তাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS