ভিডিও

বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে জবাই করে হত্যা : সন্তানের মস্তক ফেলে দেয়া হয় করতোয়া নদীতে

নৃশংস হত্যাকান্ড বাড়ছে

ময়মনসিংহ ব্রিজের নিচে লাগেজে মিলল শিক্ষার্থীর খন্ডিত মরদেহ, বাইরে মাথা

প্রকাশিত: জুন ০২, ২০২৪, ০৯:৫৮ রাত
আপডেট: জুন ০৩, ২০২৪, ০২:১৮ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

করতোয়া ডেস্ক : সম্প্রতি ভারতের কলকাতায় খুন হয়েছেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ঝিনাইদহ-৪ আসনের এই সংসদ সদস্যকে ফ্ল্যাটে হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে তাতে মসলা মিশিয়ে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়া হয়। তার মরদেহ ৮০ টুকরা করা হয় বলে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছেন। যে অ্যাপার্টমেন্টে তাকে হত্যা করা হয় সেই সঞ্জীভা গার্ডেনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু হাড় এবং মাংসের টুকরো। ধারণা করা হচ্ছেÑসেটি এমপি আনারের দেহাংশ। এমন নৃশংস হত্যাকান্ডে রীতিমত হতবাক দুই দেশের মানুষ। কি করে এতটা নিষ্ঠুরতার সাথে কেউ কাউকে খুন করতে পারে? এখনও এই হত্যকান্ডের কুলকিনারা হয়নি। এ নিয়ে চলছে আলোচনা। 

* পাবনায় প্রকাশ্যে সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে নারী নিহত
* গোপালগঞ্জে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গলা কেটে হত্যা 
এদিকে, এর রেশ কাটতে না কাটতে দেশের কয়েকটি জেলায় এমন নৃশংস হত্যাকান্ডের খবর পাওয়া গেছে। বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে জবাই করে হত্যা করেছেন সেনাসদস্য স্বামী। শুধু তাই নয়, হত্যার পর সন্তানের মস্তক ফেলে দেয়া হয় করতোয়া নদীতে। এমন খুনের খবরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে সারাদেশেই। বগুড়ার বাইরে আরও কয়েকটি জেলায় খুন হয়েছেন কয়েকজন। ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কের মনতলা ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা লাগেজ থেকে এক শিক্ষার্থীর খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ সময় লাগেজের পাশে পড়ে ছিল ওই যুবকের মাথা। 
পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় সাবেক স্বামী মিলন হোসেনের ছুরিকাঘাতে রিনা বেগম (৩০) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় ঈশ্বরদী ইপিজেড গেট এলাকায় সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকেও গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার ভোরে কোটালীপাড়া উপজেলার চৌধুরীর হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 
এদিকে, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আরিফুল ইসলাম নামের এক জাপান প্রবাসীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কানাডা প্রবাসী এক নারী কৌশলে তাকে বাংলাদেশে এনে খুন করে ফের কানাডা চলে গেছেন। 
বিস্তারিত আমাদের স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে-
বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে জবাই করে হত্যা : সেনাসদস্য স্বামী আটক : বগুড়ার শাজাহানপুরের বনানীতে শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে স্ত্রী ও শিশু পুত্রকে জবাই করে হত্যা করে পালানোর সময় স্বামী সেনা সদস্য আজিজুল হককে (২৪) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। আটক আজিজুল হক (২৪) বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমানের ছেলে। এই নৃশংস হত্যাােন্ডর শিকার নারী ও তার শিশু সন্তানের খন্ডিত দেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হলেও খন্ডিত মস্তক গতরাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি। তবে ঘাতক বাবার জবানবন্দী অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল করতোয়া নদীতে অনুসন্ধান চালালেও খন্ডিত মাথা এখনও উদ্ধার করতে পারেনি। 
হোটেলের ম্যানেজার রবিউল ইসলাম জানান, স্ত্রী আশা মনি (২০) ও শিশুপুত্র আব্দুল্লাহ আল রাফি (০১) কে নিয়ে ৩ দিন হোটেলে থাকবেন এমন কথা বলে শনিবার সন্ধ্যায় বনানীস্থ শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষে উঠেন আজিজুল হক। আজিজুল নিজেকে মিরাজ এবং তার স্ত্রীকে তমা এবং তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ পরিচয় দিয়ে হোটেলের ওই কক্ষ ভাড়া করেন। রাত ১০টার দিকে স্ত্রী-সন্তানকে রেখে বাড়িতে যান আজিজুল। পরদিন সকাল ৯টার দিকে হোটেলে ফিরে ম্যানেজারকে ভাড়া পরিশোধ করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আজিজুল। কিন্তু তার সাথে স্ত্রী-সন্তান না থাকায় হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে আজিজুলকে আটক করে পুলিশকে সংবাদ দেয়। 
স্থানীয়রা দেখতে পান, শিশুপুত্র রাফি’র মস্তকবিহীন লাশ ৩০১ নম্বর কক্ষের খাটের নিচে এবং স্ত্রী আশা মনির লাশ বস্তাবন্দী অবস্থায় টয়লেটে পড়ে আছে। এরপর থেকেই জোড়া খুনের বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। 
নিহত আশা মনির বাবা বগুড়া শহরের নারুলী পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা আশাদুল জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার মেয়ে জামাই তার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে শনিবার বিকালে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আজিজুল। এরপর রাত ১০টার দিকে আজিজুল তার শ্বশুরকে ফোন করে জানায়, শরীর খাারাপ লাগায় আশা মনিকে বাড়িতে পঠিয়ে দিয়ে সে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল। এরপর বাড়িতে ফোন করে জানতে পায় আশা মনি বাড়িতে যায়নি। সারারাত চলে খোঁজাখুঁজি। এরপর সকাল ১১টার দিকে লোকমুখে জানতে পান মেয়ে আশা মনি ও নাতি রাফিকে বনানীস্থ একটি আবাসিক হোটেলে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। 
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম, শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলামসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী-সন্তানকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে আজিজুল হক। সে আরও জানায়, শিশুপুত্রের মাথা বিচ্ছিন্ন করে করতোয়া নদীতে ফেলে দিয়েছে। 
এদিকে, আশামনির বাবা আসাদুল আরও জানান, তিন বছর আগে আজিজুল হকের সাথে তার মেয়ের বিয়ে হয়। সন্তান প্রসবের আগে থেকেই তার মেয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করে। জামাই দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি আসে। রোববার তার কর্মস্থলে চলে যাওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার জামাই আজিজুল নারুলীতে শ্বশুরবাড়ি আসে। সেখানে দুই দিন থাকার পর শনিবার বিকেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে শহরে শপিং করার জন্য বের হয়। রাত ১০ টার দিকে আজিজুল হক ফোন করে তার শ্বশুরকে জানান, রাত ৮ টার দিকে তিনি স্ত্রী সন্তানকে নারুলী যাওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দিয়েছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর থেকে স্ত্রীর ফোন বন্ধ পাচ্ছে বলে সে উল্লেখ করে। পরদিন রবিবার সকালে আসাদুল তার মেয়ের সন্ধান চেয়ে শহরে মাইকিং করার ব্যবস্থা করেন এবং সদর থানায় জিডি করতে গেলে বনানীতে হোটেলে মা এবং সন্তানের লাশ উদ্ধারের খবর পান। 
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, রাতে যে কোন সময় আজিজুল তার স্ত্রী ও সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দী করে কক্ষের বাথরুমে রাখে এবং ছেলের মাথা বিচ্ছিন্ন করে সকালে শহরের চেলোপাড়ায় করতোয়া নদীতে রেল ব্রীজের নিচে ফেলে দেয়। পুলিশের একটি দল মাথা উদ্ধারের জন্য আজিজুলকে সাথে নিয়ে নদীতে তল্লাশি শুরু করে। পরে শিশুটির মস্তক উদ্ধারের জন্য রাজশাহী থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল আনা হয় এবং তারা সন্ধ্যা ৬টা থেকে সন্ধ্য সাড়ে ৭টা পর্যন্ত শহরের রেল ব্রিজের আশেপাশে করতোয়া নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। সর্বেেশষ গতকালের মত অভিযান স্থগিত করা হয় এবং আজ সকাল থেকে এই অভিযান আবার শুরু হবে বলে তিনি জানান। 
তিনি আরো বলেন, আবাসিক হেটেলের ওই কক্ষ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি রাম দা এবং একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। 
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আজিজুল হক পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে তার স্ত্রী- সন্তানকে হত্যা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক বলেছে, দাম্পত্য কলহের কারনে সে স্ত্রী সন্তানকে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
গোপালগঞ্জে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গলা কেটে হত্যা : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার ভোরে কোটালীপাড়া উপজেলার চৌধুরীর হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ ফিরোজ আলম। তিনি জানান, কোটালীপাড়ার চৌধুরীর হাটের মাছের চান্দিনায় ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারী প্রায় চার বছর ধরে অবস্থান করে আসছিলেন। 
তিনি আরও জানান, ভোর রাতে ওই নারীকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে সকালে এলাকাবাসী দেখে পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় বলেও জানান তিনি। 
এদিকে, হত্যার শিকার ওই নারীর নাম পরিচয় জানা যায়নি। কি কারনে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে এ বিষয়েও এখন পর্যন্ত কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ। 


ময়মনসিংহ ব্রিজের নিচে লাগেজে মিলল শিক্ষার্থীর খন্ডিত মরদেহ, বাইরে মাথা : ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কের মনতলা ব্রিজের নিচে পড়ে থাকা লাগেজ থেকে এক শিক্ষার্থীর যুবকের খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ সময় লাগেজের পাশে পড়ে ছিল ওই যুবকের মাথা। জেলার সুতিয়া নদী থেকে উদ্ধার হওয়া লাগেজবন্দি চার খন্ড মরদেহটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভের। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। 
তার বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইগবাজ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামে। তবে নিহত সৌরভ পরিবারের সঙ্গে ঢাকার উত্তরা এলাকায় বসবাস করতেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বোরহান উদ্দিন। রোববার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউপি সদস্য মো. বোরহান উদ্দিন। 
এর আগে, এদিন সকালে ময়মনসিংহ সদর ও মুক্তাগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদী থেকে এক অজ্ঞাত তরুণের খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় নদী থেকে কালো রঙয়ের একটি ট্রলি লাগেজ থেকে মরদেহের তিন খন্ড এবং পাশেই একটি বাজারের ব্যাগে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় খন্ডিত মাথা উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন। 
তিনি বলেন, খুন হওয়া তরুণের নাম সৌরভ। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইগবাজ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামে বাসিন্দা ও ডাক বিভাগের কর্মচারী মো. ইউসুফের ছেলে। 
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, সৌরভ পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএতে লেখাপড়া করতেন বলে খোঁজ নিয়ে জেনেছি। তাদের কেউ গ্রামে থাকেন না। এরমধ্যে সৌরভের বাবা ঢাকায় এবং এক চাচা মো. ইলিয়াস ময়মনসিংহ শহরে বসবাস করেন বলে জেনেছি। তবে কেন বা কি কারণে ছেলেটা খুন হয়েছে তা এলাকার কেউ জানে না। খুনের ঘটনাটি পুলিশ আমাকে জানিয়েছে। 
তবে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই তরুণকে খুন করে মরদেহ চার খন্ড করে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে ইতোমধ্যে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশসহ কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন। 
পাবনায় প্রকাশ্যে সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে নারী নিহত : পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় প্রকাশ্যে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে; এ সময় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 
রোববার সকালে ঈশ্বরদী ইপিজেড মোড় এলাকার এ ঘটনা ঘটে বলে ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান। নিহত রিনা বেগম (৩৫) রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকসিংগীপাড়া গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মিলন হোসেনের স্ত্রী। রিনা ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসাঁ বারিন্দ লিমিটেড নামে একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। 
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পরিদর্শক মনিরুল বলেন, সকালে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে কাজে যাওয়ার সময় ঈশ্বরদী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে রিনাকে তার স্বামী মিলন আটকিয়ে রাস্তায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় রিনা। এ সময় স্থানীয়রা মিলনকে আটক পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিলনকে গ্রেফতার করে এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 
মনিরুল বলেন, ২০০৮ সালে রিনার সঙ্গে মিলনের প্রথম বিয়ে হয়। মাঝে বনিবনা হওয়ায় তাদের মেধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়। তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। ২০২০ সালে আবারও বিয়ে করে সংসার শুরু করলে মিলনের নির্যাতন শুরু হলে নিজের মত জীবনযাপন করতে রিনা ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরি নিয়ে আলাদা থাকতেন। 
তিনি বলেন, মাদকাসক্ত মিলন রিনার সঙ্গে থাকতে চাইলে তিনি আপত্তি করেন। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বিবাদ লেগেই থাকত। এরই জেরেই রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মিলন উত্তেজিত হয়ে তার স্ত্রী রিনাকে ছুরিকাঘাত করেন। 
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, দাম্পত্য কলহের কারণে রাগের মাথায় এমনটি হয়েছে, তবে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে ছুরিকাঘাত করেননি বলে পুলিশের কাছে জানান গ্রেফতার মিলন। 

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS