ভিডিও

মধ্যরাতে উত্তাল রাবি জবি শেকৃবি ও শাবিপ্রবি, রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৪, ০২:৩৫ রাত
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২৪, ০৯:১৭ সকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

‘সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তবে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে’- প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে রাতে হল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর একে একে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে এসেছেন।  মধ্যরাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এর শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছেন।
মধ্যরাতে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
‘সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা পাবে না, তবে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে’- প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে মধ্যরাতে হল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৪ জুলাই) দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’ এমন স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে আসেন। এসময় তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। ছাত্রীদের হলগেটে তালা থাকলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে প্রহরীরা তালা খুলে দেন। পরে মেয়েরাও রাস্তায় বের করে আসেন।
পরে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে- সরকার সরকার’ এসব স্লোগান দিতে থাকেন।


জবির হল থেকে মিছিল নিয়ে রাজপথে শিক্ষার্থীরা
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৪ জুলাই) দিনগত মধ্যরাতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হন। এসময় তারা ‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি- রাজাকারের ঘাঁটি’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
জবির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের মেয়েরাও বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন। এরপর তারা মিছিলটি নিয়ে পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার মোড়ে অবস্থান নিয়ে সেখান থেকে আবারও ক্যাম্পাসের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।
রোকসানা তৃষ্ণা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আজকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরূপ মন্তব্যের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। দেশের একজন অভিভাবকতুল্য মানুষের কাছে থেকে এমন বক্তব্য কখনোই আশা করা যায় না।
এদিন বিকেলে গণভবনে চীন সফরের বিস্তারিত তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নে কোটা আন্দোলনকারীদের নিয়ে কথা বলেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।

উত্তাল শেকৃবি 
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ক্যাম্পাস।
রোববার (১৪ জুলাই) রাত ১১টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে ‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন হল শেখ লুৎফর রহমান হল থেকে মিছিল নিয়ে বের হন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি- রাজাকারের ঘাঁটি’, ‘শেরেবাংলার মাটি, রাজাকারের ঘাঁটি’, ‘চাইলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ন্যায্য অধিকারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে সম্বোধন করেছেন, যা শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের জন্য লজ্জার। তারা এ বক্তব্যের প্রতিবাদে মধ্যরাতে হল ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন। 
স্লোগানে প্রকম্পিত শাবিপ্রবি
‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উক্তি ঘিরে এ স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৪ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে এ স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতেও এ স্লোগান দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের চারটি ব্লকের শিক্ষার্থীরা হঠাৎ বের হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে হল। সৈয়দ মুজতবা আলী হল থেকে বড় একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু হলের সামনে গিয়ে স্লোগান দেয় এবং তাদের মিছিলে যোগ দিতে ‘রাজাকার বের হ, রাজাকার বের হ’ বলে স্লোগান দেয়।
পরে মিছিলটি শাহপরান হলের সামনে দিয়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে চায়। এসময় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলের সামনে অবস্থান নেন।
একদিকে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ আর অন্যদিকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শাহপরান হলের সামনে অবস্থান দেখে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সামনে না এগিয়ে সেখানে থেকে চলে যান।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS