ভিডিও

সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গেছে : গণতন্ত্র মঞ্চ

প্রকাশিত: আগস্ট ০১, ২০২৪, ০৫:৪৫ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ০১, ২০২৪, ০৫:৪৫ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

‘সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গেছে’বলে মন্তব্য করেছে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম গণতন্ত্র মঞ্চ। একইসঙ্গে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সঙ্গে থাকার ঘোষণাও দিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের নতুন সমন্বয়কারী নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যে বাঁধার বিন্দাচল ছিল, যে ভয়ের পাহাড় ছিল, যে ভয়ের চাঁদর ছিল ওগুলো চলে গেছে। যেভাবে লড়াই করছে শিক্ষার্থীরা, যেভাবে লড়াই করছে শিক্ষকরা, গুণীজন, মুরুব্বিরা, আইনজীবীরা, সাংবাদিকরা… সবাই যেরকম করে নেমেছে তাতে এ সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এই পরিস্থিতি ওরা (সরকার) গায়ের জোরে মোকাবিলা করতে পারবেন না। বাংলাদেশের টোটাল ফোর্স নামানো হয়েছে মুভমেন্ট যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে। থামতো তো পারেননি। সরকার সব রকম নির্যাতন করবার পরেও পারেনি এই আন্দোলন বন্ধ করতে। এই আন্দোলন বাড়ছে, আন্দোলন আরও বাড়বে। গণতন্ত্রমঞ্চ তার সঙ্গে শুরু থেকে ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত এই সরকারের পরাজয় না হয়।’

 

তোপখানা রোড়ে নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে গতকাল পুরানা পল্টনে সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকে গণতন্ত্র মঞ্চ।

 

মঞ্চের নতুন সমন্বয়কারী মান্না বলেন, ‘আমরা ‍শুরু থেকে বলেছি, তোমরা অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছ, নির্বাচন করছ না। অতএব নির্বাচন না করে ক্ষমতায় থাকতে গেলে আরও বল প্রয়োগেই তোমাকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। একদম চূড়ান্ত নিষ্ঠুরতা-হত্যাকারীর জায়গায় পৌঁছাবার আগেই ক্ষমতা থেকে চলে যাও।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আজকে একই আবেদন, এখনো হয়তো সময় আছে… আমি বলছি, এখনো হয়তো সময় আছে পদত্যাগ করো। তারপরে দেশ কিভাবে চলবে সেটা এদেশের জনগন বুঝবে। তোমরা জনগনের দুশমনে পরিণত হয়েছো, তোমরা জনগনের জন্য কিছু করতে পারবে না। বোধ-বুদ্ধি যদি এখনো থাকে তাহলে জনগণের কথা শুনে, দেয়ালের কথা শুনে পদত্যাগ করেন। যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবেন ততই ভালো।’

মান্না বলেন, ‘এই আন্দোলন কেবলমাত্র কোটার আন্দোলন নয়, এটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলন এখন সরাসরি এসব হত্যার বিচার চায়, ওই সব মন্ত্রী যারা গুলির নির্দেশ দিয়েছেন, উসেক দিয়েছেন ছাত্রলীগকে তাদের পদত্যাগ চায় দল থেকে এবং সরকার থেকে। খোদ প্রধানমন্ত্রী সব হত্যাকান্ডের দায় নিয়ে যাতে জনগনের কাছে ক্ষমা চান সেজন্য তারা (শিক্ষার্থীরা) দাবি করেছে। এগুলো মানতে হবে।

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারের মধ্যে দেখছেন এক ধরনের গৃহদাহ শুরু হয়েছে। গতকাল সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদককে (ওবায়দুল কাদের) নিজের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতার কাছ থেকে ভুয়া ভুয়া শুনে সভাস্থল তাকে ত্যাগ করতে হয়েছে। তার মানে সরকারের যখন শেষ দিনগুলো পার করে হয়তো আমরা আগামীতে এই ধরনের অনেক ঘটনা দেখব।

তিনি আরও বলেন, সরকারকে আমরা খুব করে বলতে চাই যে, আমাদের বাহিনীগুলো কোনো ভাড়াটিয়া বাহিনী না, তারা এদেশের বাহিনী। এই বাহিনীগুলোকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ নাই।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে এরকম একটি হত্যাযজ্ঞ চালানোর পরে এই লাশের কারবালায় দাঁড়িয়ে এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো অধিকার নেই… এই কথা এখন বাংলার ঘরে ঘরে প্রতিধ্বনি হচ্ছে। দেখেছেন তাদের (সরকার) রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে সারা দেশের মানুষ লাল কাপড়ে, লাল ফিতায়, ফেসবুক লাল প্রতীকে ভরে দিয়েছে। এই যে গণ অনাস্থা এটা জনগণের এই সরকারের প্রতি চূড়ান্ত অনাস্থা জানিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই অবস্থা আর চলতে পারে না। আমরা সরকারকে বলি, এটা একটা রাজনৈতিক সংকট। রাজনৈতিক সংকটের রাজনৈতিক সমাধান করতে হবে। সমাধান হচ্ছে পদত্যাগ করুন এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। রাজনৈতিকভাবে আলাপ-আলোচনা করে সেটা ঠিক করতে পারব এবং দেশে গণতান্ত্রিক সরকার একমাত্র ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, এদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবেই। ‘

সংবাদ সম্মেলনে ভাসানী অনুসারি পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম ও জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বক্তব্য রাখেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS