ভিডিও

এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষা বাতিল, ফল কীভাবে সিদ্ধান্ত পরে

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৪, ১১:২৫ রাত
আপডেট: আগস্ট ২১, ২০২৪, ১০:৩৪ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা অফিস : আরেকবার বিজয়ী হলেন শিক্ষার্থীরা। টানা আন্দোলন করে গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতা মিলে পতন ঘটিয়েছিলেন স্বৈরচার শেখ হাসিনা সরকারের। এরপর আন্দোলন করেই প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিলেন শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি অনুযায়ীই নিয়োগ দেয়া হয়েছিল নতুন প্রধান বিচারপতি। এবার শিক্ষার্থীরা আদায় করে নিলেন আরেকটি দাবি। এইচএসসি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল ঘোষণা করে আদেশ জারি করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।

একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে ফল তৈরি ও প্রকাশ কীভাবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কিছু জানায়নি বোর্ড। আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে এ আদেশ জারি করা হয়। এতে সই করেছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

এতে বলা হয়েছে, অনিবার্য কারণবশত এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৪-এর স্থগিত পরীক্ষাসমূহ বাতিল করা হলো। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো। জানতে চাইলে অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, কীভাবে ফল তৈরি ও প্রকাশ করা হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আপাতত পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সব বোর্ড এটা নিয়ে আলোচনা করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবে। তারপর কীভাবে ফল তৈরি ও প্রকাশ করা হবে, তা চূড়ান্ত হবে।

এর আগে আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে শিক্ষা উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বৈঠকে বসেন সব বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। সেখানে অর্ধেক প্রশ্নপত্রে স্থগিত পরীক্ষাগুলোর নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পরপরই সচিবালয়ের আশপাশে আগেই জড়ো হওয়া বিক্ষুব্ধ এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে পড়েন।

তারা এক পর্যায়ে স্থগিত পরীক্ষা বাতিল করে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশের দাবিতে ১ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে শিক্ষা সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা তাৎক্ষণিক বৈঠক করে স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দেন।

এরপর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে ফিরে যান। তারও আগে পরীক্ষা বাতিলের এক দফা দাবিতে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘আমাদের দাবি একটাই-পরীক্ষা বাতিল চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই-পরীক্ষা বাতিল চাই’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম-সংগ্রাম’, ‘পরীক্ষা না বিকল্প, বিকল্প-বিকল্প’, ‘যুক্তি দিয়ে আন্দোলন-বন্ধ করা যাবে না’, ‘চলছে লড়াই-চলবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সকাল থেকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হন পরীক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে দুপুরের দিকে তারা সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দশ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান এবং আলোচনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন। সে সময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশ্বাস দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম দফায় প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

এরপর আর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার। সূচি অনুযায়ী, এখনও ১৩ দিনের মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ বাকি ছিল। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা আটকে গেছে। যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) এবং আইসিটি। ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (অপশনাল)।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শপথ বাক্য বদলে গেল, দেশের সব বেসরকারি স্কুল-কলেজের কমিটি ভেঙে দেওয়া হলো :-

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা অফিস : দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন থেকে নতুন শপথ বাক্য পাঠ করাতে হবে। দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পিটিআইয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর নতুন শপথবাক্য পাঠের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশে এ তথ্য জানা গেছে।

আদেশে বলা হয়, সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পিটিআই-এর প্রাত্যহিক সমাবেশকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর সরকার নিম্নোক্ত শপথবাক্য পাঠের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নতুন শপথ বাক্য, আমি শপথ করিতেছি যে, মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখিবো।

দেশের প্রতি অনুগত থাকিবো। দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকিব। হে মহান আল্লাহ/মহান সৃষ্টিকর্তা, আমাকে শক্তি দিন, আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করিতে পারি এবং বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ও আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে গড়িয়া তুলিতে পারি। আমিন।

দেশের সব বেসরকারি স্কুল-কলেজের কমিটি ভেঙে দেওয়া হলো : দেশের সব বেসরকারি স্কুল ও কলেজের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিদের অপসারণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ইউএনওরা। তবে সভাপতি অপসারণ হলেও কমিটির অন্যান্য সদস্যরা নিজ নিজ পদে বহাল থাকবেন।

আজ মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জহিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের সব বেসরকারি স্কুল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিকে অপসারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বেসরকারি স্কুল ও কলেজের সভাপতিদের অপসারণ করা হয়েছে। তবে কমিটির অন্যান্য সদস্য নিজ নিজ পদে বহাল থাকবেন। জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসকের মনোনীত প্রতিনিধি, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং মহানগর পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনার ও বিভাগীয় কমিশনারের মনোনীত প্রতিনিধিকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির প্রবিধান ২০২৪ এর ৬৮ অনুযায়ী সভাপতি পদে থাকা সবাইকে অপসারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও, জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনাররা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করবেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS