ভিডিও

নানা সমস্যায় এবার ঠাকুরগাঁওয়ে তিন ভাগের এক ভাগও পাট চাষ হয়নি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৪, ১০:৫৭ রাত
আপডেট: সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৪, ১০:৫৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : সোনালী আঁশের দেশ বাংলাদেশকে বলা হলেও বর্তমানে অর্থকরি ও জাতীয় ফসল পাটচাষ ঠাকুরগাঁওয়ে অনেক কমে গেছে। যেখানে আগে অনেক পাট চাষ হতো এই জেলায়। সেখানে এখন পাটের আবাদ হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রকৃত চাষিরা প্রণোদনা না পাওয়ায় ও পাটের ফলন, জাগ দেওয়ার ব্যবস্থার অভাবে ও দামের কারণে গত বছরের তুলনায় এবার তিন ভাগের এক ভাগও পাট চাষ হয়নি, বলছেন কৃষকরা।

অন্যদিকে পাট অধিদপ্তর ও কৃষিবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রমান্বয়ে চাষ কমলেও কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে পাট চাষে আগ্রহ বৃদ্ধির কারা হচ্ছে। তবে অন্তরায় হিসেবে পাটের ন্যায্য মূল্য ও জাগ ব্যবস্থাপনাকে দায়ি করছেন তারা। একটা সময় পাটের সোনালী দিন থাকলেও বর্তমানে এর চিত্র ভিন্ন। চলতি বছর পাটের মৌসুমে জেলায় দেখা যায়, ভালো মানের বীজ, পরামর্শ ও ক্ষেতের সঠিক পরিচর্যার অভাবে দিন দিন পাটের চাষাবাদ কমেই চলেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালকের তথ্য মতে, বিগত পাঁচ বছর অর্থ্যাৎ ২০১৯ সালে জেলায় পাটের আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে আর উৎপাদন হয়েছিল ১৩ হাজার ১৩৭ মেট্রিকটন কিন্তু ২০২৪ সালে আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে ও পাট উৎপাদন হয়েছে মাত্র ১২ হাজার ৮৭৪ মেট্রিক টন। ১৯ সালের তুলনায় এবছর ৩১০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হলেও বিগত ১৯ সালের ফলন অনুযায়ী ২৬৩ মেট্রিক টন পাট কম উৎপাদন হয়েছে।

জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তার তথ্য মতে, জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে শুধু চারটি উপজেলার ১০ হাজার ১৯৩ জন চাষিকে পাট চাষের জন্য প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। এতে প্রত্যেককে ১ কেজি করে বীজ, ৬ কেজি ইউরিয়া, ৩ কেজি টিএসপি ও ৩ কেজি এমওপি সার ছাড়াও প্রশিক্ষণ বাবদ ৫শ’ টাকা সম্মানিসহ, ৩শ’ টাকা খাওয়া বিল, নাস্তা বাবদ ৮০ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।

তাছাড়াও খাতা, কলম ও ব্যাগও প্রদান করা হয়। অন্যদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকেও ৩ হাজার ৬শ’ জন কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। প্রতিবছর হাজার হাজার কৃষককে পাট চাষ বৃদ্ধির জন্য প্রণোদনা হিসেবে বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ প্রদান বাবদ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও এর কোনো উল্লেখযোগ্য সুফল দেখা যায়নি।

পাট চাষি হামিদুল রহমান বলেন, কিছু আগে ২ হাজার ৬শ’-৭শ’ টাকা পাটের মণ ছিল কিন্তু তা কমে এখন ২ হাজার ৫শ’ টাকায় এসেছে। এতে বিঘা প্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা লস হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. আলমগীর কবির বলেন, পাটের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কৃষকদের প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে।

কৃষকদের রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ প্রদানসহ কারিগরি সহায়তা প্রদান অব্যাহত আছে। বন্ধ পাট কলগুলো চালু করা। ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত ও উন্নত প্রযুক্তি মাধ্যমে পাট পচানোর কারিগরি সহায়তা এবং কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে পাটের হারানো সেই সোনালী দিন ফেরানো সম্ভব।

এছাড়াও আগামীতে অধিকতর স্বচ্ছতার মাধ্যমে কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন। অ্যাপসভিত্তিক ও ওয়েবসাইডে তালিকা প্রকাশ করার ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেন তিনি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS