ভিডিও

রংপুর বিভাগের বন্ধ চারটি চিনিকলের মূল্যবান যন্ত্রাংশ মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে

শ্রমিক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন যাপন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৭:০১ বিকাল
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৭:০১ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

রংপুর প্রতিনিধি : তিন বছরের অধিক সময় ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে রংপুর বিভাগের চারটি চিনিকল। মিলগুলো হচ্ছে- রংপুরের শ্যামপুর সুগারমিল, দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ সুগার মিল, গাইবান্ধা জেলার রংপুর সুগার মিল ও পঞ্চগড় সুগার মিল।

বন্ধ হওয়া এই চারটি চিনিকলের শ্রমিক, কর্মকর্তা কর্মচারী সংখ্যা ছিল এক লাখের ওপর। মিল বন্ধ থাকায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কবে নাগাদ মিলগুলো চালু হবে তা কেউ বলতে পারছে না।

লোকসানের অযুহাত এবং আধুনিকায়নকরণের নামে এসব চিনিকল চালুর কথা বলা হলেও দীর্ঘ সময় তা আর আলোর মুখ দেখেনি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার কারণে মিলের যন্ত্রাংশগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাতের আঁধারে চুরি হচ্ছে বিভিন্ন জিনিসপত্র।

এদিকে চিনিকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুধু স্থানীয় অর্থনীতি সংকটে পড়েনি, সংকটে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা। শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করতেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তৎকালীন সরকারের সাথে আঁতাত করে পরিকল্পিতভাবে এসব চিনিকল বন্ধ করেছে, যার প্রভাব পড়েছে ভোক্তা পর্যায়ে।

রংপুরের শ্যামপুর চিনিকল গিয়ে দেখা গেছে, কারখানার টিনের চাল ফুটো হয়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ছিদ্র, আবার কোথাও কোথাও পুরোপুরি নষ্ট। মরিচা পড়েছে অধিকাংশ যন্ত্রপাতিতে। আবার কোন কোনটি বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষায় ঢেকে রাখা হয়েছে পলিথিন দিয়ে। এক সময়ের কর্মমুখর শ্যামপুর সুগার মিলের বর্তমান চিত্র।

বাইরের চিত্র আরও ভয়াবহ। পুরো কারখানাকে আবৃত করে রেখেছে ঝোপঝাড়, জঙ্গলে। অলস পড়ে থাকতে থাকতে নষ্টের পথে অসংখ্য যনবাহন। যে ক'জন কারখানা দেখভালের দায়িত্বে আছেন তাদেরও বেতন বন্ধ পাঁচ মাস ধরে। অথচ ষাটের দশকে গড়ে ওঠা এসব কারখনাই উত্তরের অর্থনীতির বড় শক্তি ছিলো। ২০২০ সালে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের ৬ টি রাষ্ট্রয়াত্ত চিনিকল। যার ৪ টি রংপুর বিভাগে। আধুনিকায়নের মধ্যদিয়ে এসব সুগার মিল চালুর কথা থকলেও দীর্ঘ সময়েও তার উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

বন্ধ হওয়া এসব চিনি কলের দৈনিক আখ মাড়াইয়ের সক্ষমতা ছিলো গড়ে দেড় হাজার মেট্রিক টন। আর বছরে চিনি উৎপাদন সক্ষমতা ১১ হাজার মেট্রিক টন। ফলে চাহিদার বড় অংশ যোগান আসতো এসব চিনি কল থেকে। শ্যামপুর আখ চাষি কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুজ্জামান মানিক জানান, কর্পোরেট কোম্পানিগুলো বাজার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়গুলোর যোগসাজশে বন্ধ করেছে চিনি কলগুলো।

শ্যামপুর সুগার মিলেল ইনচার্জ মো. মাসুদ সাদিক জানান, এরই মধ্যে কারখানাগুলোর সক্ষমতা, জনবলসহ নানা বিষয় যাচাই বাছাই করেছে একটি তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার মিলগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন। লাখো মানুষের জীবন ও জীবিকা ও দেশিয় শিল্প রক্ষায়, দাবি উঠেছে বন্ধ নয়, যত দ্রুত সম্ভব আধুনিকায়নের মধ্যদিয়ে চিনিকল গুলো চালুর উদ্যোগ নেয়া।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS