ভিডিও

সামনে বিশেষ ৩ দিবস

ফাগুনের হাওয়ায় গোলাপে ‘আগুন’

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪, ০৮:০৮ রাত
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ১১:২৫ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

যশোর প্রতিনিধি: বইছে ফাগুনের হাওয়া। সবার মনে অন্যরকম অনুভূতি। প্রকৃতি সেজেছে বাহারি রঙে। গাছে গাছে ফুটেছে শিমুল ও পলাশ। কোকিলের ডাকে, হৃদয়ের বাঁকে বাঁকে প্রিয়জনকে স্মরণ-সুখের বারতা। বসন্ত ও ভালোবাসার যুগপৎ এই উদযাপন ঘিরে ‘আগুন’ লেগেছে গোলাপ, রজনীগন্ধা ও চন্দ্রমল্লিকায়। 
এবার স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি দামে ফুল বিক্রি করছেন ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালী ইউনিয়নের চাষিরা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পয়লা ফাল্গুন, বসন্তের প্রথম দিন একইদিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এরপর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এসব দিবস সামনে রেখে ফুল বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এই তিন দিবসে ৬০-৭০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন তারা। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমে অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা তাদের।  দিবস সামনে রেখে ফুল বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা ।
২০২০ সালে বাংলা একাডেমির সংশোধিত বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, ১৩ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ফাল্গুনের শুরু। ওই দিনে উদযাপিত হয় বসন্ত উৎসব। একই দিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ইতিহাসে যা সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে নামে পরিচিত। দিবসগুলো ঘিরে এরই মধ্যে গোলাপ, জারবেরা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, টিউলিপ ও লিলিয়াম ফুল বেশি দামে বিক্রি করছেন চাষিরা। 
সরেজমিনে গদখালী ফুলের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, হাজার হাজার ফুলে ছেয়ে গেছে বাজার। এর মধ্যে গোলাপ বেশি। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দামে গোলাপ বিক্রি করতে পেরে খুশি চাষিরা। গত দুই দিন দাম বেশি পাওয়ায় তাদের মুখে হাসি। সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি দাম পাওয়ার আশা তাদের। 
 রোববার এই বাজারে সাধারণ গোলাপের পিস বিক্রি হয়েছে ২৫-৩০ টাকায়। চায়না ও থাই গোলাপের পিস বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪৫ টাকায়। কেউ কেউ ৫০ টাকাও পিস বিক্রি করেছেন। বিগত বছরগুলোতে সর্বোচ্চ ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল গোলাপ। এছাড়া রজনীগন্ধা ১৫, গ্লাডিওলাস ১৫-২২, সাদা গ্লাডিওলাস ২৫, জারবেরা ১২-১৫, চন্দ্রমল্লিকা দুই-তিন এবং গাঁদা ফুলের হাজার (বাসন্তী ও লাল) ৪০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অতীতে রজনীগন্ধা সর্বোচ্চ ১০, গ্লাডিওলাস ১০, জারবেরা ৮-১০ ও চন্দ্রমল্লিকা দুই-তিন টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এই হিসাবে এবার দ্বিগুণ দামে ফুল বিক্রি হচ্ছে। 
১৬ কাঠা জমিতে গোলাপ চাষ করেছেন গদখালী ইউনিয়নের হাড়িয়া গ্রামের সুমন হোসেন। বেশি দামে গোলাপ বিক্রি করছি উল্লেখ করে এই চাষি বলেন, ‘ রোববার ৫০০টি গোলাপ এনেছি। ২৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। উৎপাদন কম হলেও দাম বেশি পাওয়ায় আমি খুশি। বৃষ্টি ও প্রচন্ড কুয়াশার কারণে গোলাপের পাপড়ি এবং পাতা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে এমন অবস্থা দেখে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় আবারও কিছু গোলাপ ফুটেছে।’
নীলকণ্ঠনগর গ্রামের ৩০ শতক জমিতে গোলাপ চাষ করেছেন ইউনুস আলী। গদখালী বাজারে ৫০০ পিস গোলাপ এনেছেন। প্রতি পিস ২২ টাকা দরে বিক্রি করেছি জানিয়ে ইউনুস বলেন, ‘গত শুক্রবার ৩০০ পিস ১৬ টাকা করে বিক্রি করেছিলাম। দিবসগুলো ঘিরে ফুলের দাম বাড়ছে। বাগানে আরও কিছু গোলাপ রয়েছে। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে বিক্রি করতে পারবো এবং লাভবান হবো।’
স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি দামে অর্থাৎ ২২ থেকে ৫০ টাকা পিসে গোলাপ বিক্রি হয়েছে বলে জানালেন গদখালী বাজারের ফুল ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও ফুল চাষি। পানিসারা গ্রামে আমার গোলাপ বাগান আছে। এবার আবহাওয়াজনিত কারণে বেশ আতঙ্কে ছিলাম। কিন্তু এখন ফুলের দাম বাড়ায় স্বস্তিতে আছি। সোমবার ও মঙ্গলবার আরও দাম বাড়বে। আশা করছি, এবার বেশি লাভ হবে। কারণ বিগত বছরগুলোতে যে গোলাপ ১০-১৫ টাকায় বিক্রি করেছিলাম, এখন তার দাম ৩০ টাকার মতো।’



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS