ভিডিও

১০ মাসে ফতেহ আলী ব্রিজের কাজের অগ্রগতি ২০ শতাংশ

পূর্ব বগুড়ার মানুষের দুর্ভোগের সীমা নাই

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪, ১০:২০ রাত
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ০২:১৬ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করা করতোয়া নদীর উপর নির্মিতব্য শাহ ফতেহ আলী ব্রিজের নির্মান কাজ ১০ মাসে মাত্র ২০ শতাংশ হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সময় আরও ৬ মাস বেশি লাগতে পারে বলে অনুমান করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।

৫৩ বছর আগে ১৯৭০ সালে এই ব্রিজ নির্মানের ফলে পূর্ব বগুড়া ও পশ্চিম বগুড়ার মধ্যে একটি বন্ধন সৃষ্টি হয়। ব্রিজ নির্মানের প্রায় ৪৮ বছর পর ২০১৮ সালে এই ব্রিজ ঝুকিপূর্ন ঘোষনা করা হয়। এর পর ওই ব্রিজের উপর দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পরে দীর্ঘ প্রকৃয়ার পর গত বছরের ২২ মে বগুড়া-৬ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্রিজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর প্রায় ১০ মাস প্রেরিয়ে গেলেও কাজের কাঙ্খিত অগ্রগতি হয়নি।


বগুড়া সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝুকিপূর্ন ঘোষনা করার পর বরাদ্দ না পাওয়ায়  সে সময় ভেঙ্গে নতুন করে করার কোন পরিকল্পনা ছিলো না। ২০২১ সালে ব্রিজটি নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই বাংলাদেশ সড়ক ও  সেতু মন্ত্রণালয় সেতুটির নকশা ও অর্থ বরাদ্দ অনুমোদন করে। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।

৬৯ মিটার দৈর্ঘ্য আর ১২ দশমিক ৩ মিটার চওড়া এই ব্রিজের দু’পাশে আড়াই মিটার(প্রায় ৮ ফুট) করে ফুটপাত থাকবে। দৃষ্টিনন্দন এবং আধুনিক স্থাপত্যের ছোয়া রয়েছে এই ব্রিজের নক্শায়। এ ব্রিজটি নির্মান হলে বগুড়া শহরের সুন্দর্য্য অনেক খানি বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে ব্রিজটি নির্মাণে বিলম্ব হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে পূর্ব বগুড়ার মানুষ। মানুষ পারাপারে পাশাপাশি দুটি বাঁশের সাকো নির্মান করে দেওয়া হলেও গত ১০ মাসে তা নড়বড়ে হয়ে গেছে। ভাসমান সাকে দিয়ে মানুষ চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ না করায় পুরো চাপ পড়েছে মূল সাঁকোর উপর।

বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পূর্ব বগুড়ার জনপ্রতিনিধি পরিমল চন্দ্র দাস জানান, শাহ ফতেহ আলী ব্্িরজ হচ্ছে পূর্ব বগুড়ার মানুষের হার্ডপয়েন্ট, এই ব্রিজের উপর দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ জনসাধারণ চলাচল করে। জামালপুরসহ পূর্ব বগুড়ার ৪ উপজেলার সাধারণ মানুষ এই ব্রিজ ব্যবহার করে বগুড়া শহরে যাতায়াত করে।

ব্রিজ নির্মাণে ধীরগতি হওয়ায় এই এলাকার ব্যবসা বানিজ্য ঝিমিয়ে পড়েছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের বেশি ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। আগে চেলোপাড়া থেকে শহরের সাতমাথা যেতে রিকশা ভাড়া লাগতো ১৫ টাকা এখন লাগে ৪০ টাকা। নারী, শিশু এবং বৃদ্ধদের জন্য অতিঝুকিপূর্ন হয়েছে বাঁশের সাকো। সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়িত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষ।

১০ মাস আগে ব্রিজের কাজ শুরু হলেও কাজে গতি নাই। ব্রিজের দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় সাধারণ মানুষ হতাশ। তিনি বলেন, পুজা পার্বন মেলা সব কিছুই পূর্ব বগুড়ায় বেশি হয়। মেলা উপলক্ষে মানুষের ভীর বাড়ে। তখন বাঁশের সাঁকো ঝুকি পূর্ন হয়ে ওঠে। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য কতৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান। এই জনপ্রতিনিধি কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ব্রিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল লিঃ এর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী রবিউল আলম জানান, নকশা অনুযায়ী ব্রিজের জন্য পাইলিং ২৭থেকে ৩০ মিটার করার কথঅ কিন্তু ১৯ মিটার থেকে ২৪ মিটার পর্যন্ত ওই এলাকায় পাথকের মোটা পুরু স্তর রয়েছে। যার কারণে পাইরিং করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। বিষয়টি সড়ক বিভাগকে জানানো হলে সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।

পাইলিং করা হবে নাকি নকশায় পরিবর্তণ করা হবে এ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ৬ মাস প্রেরিয়ে যায়। পরে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয় ডাইমন্ড কাটিং দিয়ে পাইলিং করে কাজ করতে হবে।  সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন আগামী মার্চ মাসের মধ্যে বেইজ ঢালাই এবং এপ্রিলে গাডারের কাজ হবে। তিনি বলেন, কাজ জুন মাসের মধ্যে শেষ করা সম্ভব নয়।

প্রকৌশলী রবিউল আলম আরও জানান, ব্রিজের পশ্চিমে তারা জায়গা বুঝে পায়নি। জায়গা বুঝে পেলে পশ্চিমপাশের কাজ এতদিন শুরু করা সম্ভব হতো। বিভিন্ন কারণে ৬ মাস পিছিয়ে পড়েছে তারা। তবে ২০২৪ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

সড়ক ও জনপথ বগুড়ার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আজম জানান, ব্রিজের কাজ এ পর্যন্ত ২০ ভাগের মত হয়েছে। পশ্চিমাংশে স্থাপনা অধিগ্রহন ও উচ্ছেদ কার্যক্রম আজ কালেরমধ্যে শুরু হবে। উচ্ছেদ করে অতিসত্তর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বুঝে দেওয়া হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS