ভিডিও

মৃত্যুর পর শেষ ইচ্ছা মেটালেন বন্ধুরা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪, ০৭:৩২ বিকাল
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪, ০৭:৩২ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বন্ধুত্বের টানে সবই হার মানে- প্রবাদ বাক্য সত্যি করেছেন একদল যুবক। যে বন্ধু এক বছর আগে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন, সেই বন্ধুর মৃত্যুর আগের শেষ ইচ্ছা পূরণ করলেন অন্য বন্ধুরা। অথচ এই বন্ধুদের ঘিরেই শেষ ইচ্ছাটি ছিল তার।

যাকে নিয়ে রচনা- তিনি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের আলমশাহপাড়া কাজী বাড়ি এলাকার কাজী জুনায়েদ হোসেন রিফাত। ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বন্ধুদের সঙ্গে মাছ আনতে কাপ্তাইয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার পথে কাপ্তাই সড়কের চন্দ্রঘোনা ইকোপার্ক এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন রিফাত। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রিফাতকে ছোটবেলা থেকে যারা চেনেন, তাদের কাছে তিনি আত্মনির্ভরশীল হিসেবে পরিচিত। বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন অত্যন্ত সৎ ও মিষ্টভাষী। ‘স্কোয়াড রাইডার্স’ নামের একটি মোটরসাইকেল গ্রুপের সদস্যও ছিলেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি করেছেন টিউশনি ও কোচিং সেন্টারে চাকরি। স্নাতকোত্তর পাস করে দীর্ঘ এক বছরের চেষ্টায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরিও পান রিফাত।

চাকরির প্রথম মাসের উপার্জন দিয়ে প্রতিবেশী ও স্বজনদের নিয়ে ফাহেতাখানার আয়োজন করেছিলেন রিফাত। এরপর সিদ্ধান্ত নেন দ্বিতীয় মাসের বেতনের টাকা দিয়ে বাইকিং গ্রুপের বন্ধুদের জন্য এমন একটা আয়োজনের। কিন্তু সে সুযোগ পাননি রিফাত। ইচ্ছা অপূর্ণ রেখেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এক বছর পর তার রেখে যাওয়া ইচ্ছা পূরণ করেছেন বাইকিং গ্রুপের বন্ধুরা। গ্রুপের সব সদস্যের সহযোগিতায় রিফাতের স্মৃতি প্রদর্শনীর মাধ্যমে তাকে স্মরণ করলেন সবাই।

স্কোয়াড রাইডার্স বাইকিং গ্রুপের উদ্যোগে গত শুক্রবার দুপুরে আয়োজন করা হয় দোয়া ও খাবার অনুষ্ঠানের। আয়োজনে অংশ নিয়েছেন রিফাতের শতাধিক বন্ধু, আত্মীয়, এতিম শিশু ও শুভাকাক্সক্ষীরা।

পুত্র হারানোর শোকে এখনও বাকরুদ্ধ রিফাতের মা দিলুয়ারা বেগম। সারা দিন ছেলের বন্ধুদের বুকে জড়িয়ে কান্না করেছেন তিনি। দিলুয়ারা বেগম বলেন, আসার কথা ছিল ছেলের বিয়েতে কিন্তু সবাই এলো তার মৃত্যুবার্ষিকীতে।

স্কোয়াড রাইডার্স বাইকিং গ্রুপের সদস্য আবদুর রহিম বলেন, রিফাতের ইচ্ছা ছিল তার বাসায় আমাদের দাওয়াত করে খাওয়াবে। সে মারা যাওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে এ নিয়ে আমাদের মধ্যে কথাবার্তাও হয়। কিন্তু তার আকস্মিক মৃত্যুতে সেটি আর হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আজ আমরা রিফাতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করার চেষ্টা করেছি। সে যেভাবে করতে চেয়েছিল, তার পরিবারের সহযোগিতায় সেভাবেই আমরা চেষ্টা করেছি। সে যাদের বাসায় আনতে চেয়েছিল তারা সবাই এসেছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS