ভিডিও

পীরগঞ্জে ৫৪৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৪২টিতে নেই শহিদ মিনার

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪, ০৫:৪৭ বিকাল
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪, ১১:০৩ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ৫৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩৪২টিতে শহীদ মিনার নেই। গোটা উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০৬টি। শহিদ মিনার না থাকায় ওই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন না।

প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণের অভিযোগ সরকারি ও বেসরকারি এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় সরকারি অর্থ বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হয়নি। অর্থ সংকটের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের দাবি।

২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের যেসব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই সেগুলোতে অতি দ্রুত শহিদ মিনার নির্মাণ করতে হবে।

এছাড়া যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, সেগুলো যথাসম্ভব দ্রুত সংস্কার করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধও করা হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মু: মাহমুদ হোসেন মন্ডল জানান, উপজেলায় ২৬টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটিতে শহিদ মিনার নেই। ৭৮টি মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫০টিতে, ২টি স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিটিতে, ৫৩টি দাখিল, আলিম ও ফাজিল, কামিল  মাদ্রাসার মধ্য ১০টিতে শহিদ মিনার রয়েছে।

১৪টি উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজের ১২টিতে, ১০টি কারিগরি ও ভোকেশনাল (বিএম) থাকলেও ২টিতে শহিদ মিনার রয়েছে। এছাড়াও উপজেলায় ৫৪টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী ও সম্ভাব্য ৮/১০টি পাবলিক (প্রাইভেট) স্কুল থাকলেও কোনটিতেই শহিদ মিনার নেই।

মাদ্রাসা ও নিম্ন মাধ্যমিকসহ অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনার না থাকা প্রসঙ্গে তিনি জানান, উপজেলার কয়েকমাস হলো যোগদান করেছি। ভূর্তপূর্ব কর্মস্থল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাউশি’র মহাপরিচালকের নির্দেশনা যথাযথ বাস্তবায়ন হলেও পীরগঞ্জের ভিন্ন চিত্র।

প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকায় অর্থ সংকটের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। তবে শহিদ মিনার নির্মাণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।

প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয়ের ব্যাপক উৎস থাকার পরও শহিদ মিনার না থাকা খালাশপীর দারুল হুদা স্নাতক ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান, প্রতিষ্ঠানের প্রধান অবসরে গেলে কিছুদিন আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়েছি। অতীতে দায়িত্বরত অধ্যক্ষ শহীদ মিনার কেন নির্মাণ করেননি তা জানি না। তবে আমি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে শহিদ মিনার নির্মাণ করবো।

উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু জাহের মো: সাইফুর রহমান জানান, সরকারি ও স্থানীয় বরাদ্দের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের তদারকিতে উপজেলার ২৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্য ১৩০টিতে শহিদ মিনার রয়েছে।

অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহে শহিদ মিনার নির্মাণে নির্দেশনা দিয়ে আসলেও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আন্তরিকতাকে দায়ী করেন তিনি। এছাড়াও বিগত কয়েক বছর আগে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে পর্যায়ক্রমে ভবন নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় শহিদ মিনার নির্মাণ হয়নি।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: ত্বকী ফয়সাল তালুকদার বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নকল্পে বিভিন্ন প্রকল্প আসে, যেগুলো থেকে তারা শহিদ মিনার তৈরি করতে পারে, কিন্তু মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা মাদ্রাসাগুলোর ওই পরিমাণ সরকারি বাজেট বা আর্থিক সক্ষমতা নেই, বিধায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই।

এমতাবস্থায়, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে বিভিন্ন সময়ে তাদেরকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শহিদ মিনার তৈরির জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং এ প্রেক্ষিতে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মিত হচ্ছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS