ভিডিও

সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত: মার্চ ০৮, ২০২৪, ১০:০৫ রাত
আপডেট: মার্চ ০৮, ২০২৪, ১০:০৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের এখন করুণ দশা। টার্মিনালের হেরিংবন্ড বন্ডের ইট উঠে গিয়ে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এটি সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এমনকি বাস-মিনিবাসগুলো টার্মিনালের ভেতরে পার্কিং করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফলে অনেকটাই নিরুপায় হয়ে ব্যস্ততম মহাসড়কের ওপর পার্কিং করে যাত্রী উঠানামা করাতে হচ্ছে। এতে মহাসড়কে মারাত্মক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে নিত্যদিন। গত তিন দশক ধরে টার্মিনালের সংস্কার বা উন্নয়ন না করায় এমন বেহাল দশায় জনদুর্ভোগ চরম পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে সৈয়দপুর শহরের উপকন্ঠে নিয়ামতপুর এলাকায় দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক ঘেঁষে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল গড়ে তোলা হয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে নীলফামারী জেলা পরিষদ থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি সৈয়দপুর পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ি, রাজশাহী, নীলফামারীর বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ রুটে বাস-মিনিবাসগুলো চলাচল করে। কিন্তু দীর্ঘসময় মেরামত ও সংস্কারের অভাবে এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাঁদা মাটিতে একাকার হয় গোটা টার্মিনাল চত্বর।

সারাবছরই কাঁদা পানি আর নোংরা পরিবেশ থাকায় বাস চালকেরা টার্মিনালের পরিবর্তে মহাসড়কে বাস-মিনিবাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠানামা করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বাসযাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে যানবাহনের জন্য মহাসড়কের ওপরে দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করছেন। বিশেষ করে রোদ-বৃষ্টির দিনে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

এতে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। অপরদিকে, সংস্কার না করায় বাস টার্মিনালের মূলভবন জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে ভবনটি মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। আর টার্মিনাল ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় যাত্রী ও শ্রমিকেরা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে টার্মিনালের বাইরে ও মসজিদের শৌচাগার ব্যবহার করছে। এতে মহিলা যাত্রীরা পড়ছে চরম বিড়ম্বনায়।

নীলফামারী জেলা বাস, মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা মমতাজ আলী জানান, পৌরসভা প্রতি বছরই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি ইজারা দিয়ে আয় করছে। অথচ এটি পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করছে না। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটেও সৈয়দপুর বাস টার্মিনাল আধুনিক ভবন নির্মাণের জন্য দুই কোটি টাকার মতো বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু অর্থবছরের শেষ দিকে এসেও টার্মিনাল নির্মাণের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

নীলফামারী জেলা বাস, মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহ নাওয়াজ হোসেন শানু বলেন, সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় টার্মিনালটি একটি জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ। এটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না করায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর টার্মিনালের পূর্ব পাশে সীমানা প্রাচীর না থাকায় রাতে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় যানবাহনের বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্রাংশ, ব্যাটারি চুরি হচ্ছে অহরহ। এতে মালিকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী জানান, টার্মিনালটি পুনঃসংস্কারে জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাছাড়াও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্প একনেকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। চলতি বছরে বাস টার্মিনালের নির্মান কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহলাজ মো. সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক জানান, সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় টার্মিনালটি মেরামত করা জরুরী হয়ে পড়েছে। এটি নির্মানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS