ভিডিও

পাঁচবিবির সজনে ডাঁটা রপ্তানি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ০৯:৫৮ রাত
আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ০৯:৫৮ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

বাগজানা (পাঁচবিবি) প্রতিনিধি : পাঁচবিবি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পতিত জমিতে প্রতি বছরের মতো এবারও মৌসুমী সবজি সজনে ডাঁটার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার সজনে ডাঁটার উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে। ফলে সজনে ডাঁটা এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে সৌদি আরব, মালোশিয়া, সিঙ্গাপুর ও আরব আমিরাত সহ মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় সজনে ডাঁটা স্থানীয় ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। যাচ্ছে মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। চাষীরা জানায়, প্রথম দিকে বাজারে সজনে ডাঁটা প্রতি কেজি ১শ টাকার উপরে বিক্রি হলেও বর্তমানে বাজারে আমদানি বেশি হওয়ায় দাম অনেক কমে গেছে। অপরদিকে গ্রামে গ্রামে ফেরিওয়ালারা গিয়ে প্রতি কেজি ৪০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করছে।

পাঁচবিবি বটতলী বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ীরা  জানান, বটতলী বাজারে মুলত কচুর লতি বিক্রি হলেও মৌসুমী সবজি হিসাবে প্রচুর সজনে ডাঁটা কৃষকরা বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। মৌসুমে এখানে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ মেট্রিক টন সজনে ডাঁটা ক্রয় বিক্রয় হয়। আরেক সজনে ব্যবসায়ী বলেন- সজনে ডাঁটার মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রচুর পরিমাণ সজনে ডাঁটা বিক্রি করতে আসে কৃষকরা।

আমরা তাদের নিকট থেকে ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকি। মৌসুমের শুরুতে সজনে ডাটার দাম বেশি থাকায় ভারত থেকে আমদানী করা হয়েছিল। যা ১২০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। তবে এখন দেশিও সজনের মৌসুম শুরু হওয়ায় ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পাঁচবিবি লতিহাটির সজনে ঢাকার কাওরান বাজার, শ্যাম বাজারে প্যাকেজিং হয়ে মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানী করা হচ্ছে। বটতলী বাজার থেকে প্রতিদিন ৩ ট্রাক সজনে ডাঁটা লোড হয় বলেও তিনি জানান। পাঁচবিবি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, সজনে ডাঁটা প্রধানত দুই প্রজাতির। এর মধ্যে এক প্রজাতির সজনে ডাঁটা বছরে তিন থেকে চার বার পাওয়া যায়, যাকে বলা হয় বারমাসী বা রাইখঞ্জন। অপরটি মৌসুমী হিসাবে পাওয়া যায়।

তারা জানায় এ উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে সজনে ডাঁটার চাষ না হলেও কৃষি বিভাগের আইপিএম, আইসিএম ও এনসিডিটি প্রকল্পের কৃষক মাঠ স্কুলের কৃষক কৃষানীদের মাঝে পতিত জমির আইল, পুকুর পাড়ের আইল, বাঁধের ধারে বাড়ির আশেপাশে এমনকি শহর বন্দরের যে কোনো ফাঁকা জায়গায় লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

এর কোনো বীজ বা চারার প্রয়োজন হয় না। গাছের ডাল কেটে মাটিতে পুতে রাখলেই গাছ জম্মায়। গাছের কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠে এ গাছ। বড়-মাঝারি ধরনের একটি গাছ থেকে ৫-৬ মণ পর্যন্ত সজনে ডাঁটা পাওয়া যায়। তবে পাঁচবিবি হতে জয়পুরহাট পর্যন্ত রাস্তা বর্ধিত করনের কারনে, রাস্তার দুইপাশের ব্যাপক পরিমান সজনে গাছ কাটা হয়। এর ফলে পাঁচবিবিতে সজনে উৎপাদনে প্রভাব পরতে পারে।

বিনা খরচে অধিক লাভ হওয়ায় অনেকেই রাজশাহী ও ভারত থেকে বারমাসী জাতের চারা সংগ্রহ করে বাণিজ্যিক ভাবে সজনে ডাঁটার চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়াও বাংলাদেশে চাহিদা বেশি থাকায় সজনের মৌসুম নয় এমন সময় সজনে ডাটা ভারত থেকে আমদানী করা হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা জায়, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৩/৪ বছর আগে কৃষক-কৃষাণীর মাঝে সজনে ডাঁটা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। ফলে এই কয়েক বছরে উপজেলায় ব্যাপক ভাবে সজনে ডাঁটার উৎপাদন হওয়ায় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছে। সজনে ডাঁটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা,বহু পুষ্টিগুন ও খেতে সুস্বাদু বলেও তিনি জানান।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS