ভিডিও

মাছের বরফে তৈরি শরবতে তৃষ্ণা মিটছে সাধারণ মানুষের

চরমস্বাস্থ্য ঝুঁকি

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ০৯:৫০ রাত
আপডেট: এপ্রিল ২৪, ২০২৪, ০৪:০৩ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। বাতাসের সাথে ঝরছে আগুন। গরমের তীব্রতায় অতিষ্ট হয়ে শান্তি খুঁজতে অনেকেই তৃষ্ণা মিটিয়ে নেন রাস্তার ধারে বিক্রি করা লেবুর শরবতে। কিন্তু এই শরবতে ব্যবহৃত বরফগুলো কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত? রাস্তার ধারে ফুটপাতে শরবতে ব্যবহৃত বরফগুলো মূলত মাছের জন্য তৈরি করা।

এই বরফগুলো বানানো হচ্ছে বগুড়া শহরের বিভিন্ন কারখানায়। এর মধ্যে রয়েছে শহরের ফতেহ আলী বাজার ও চেলোপাড়া এলাকার কয়েকটি কারখানা। মাছের জন্য বরফ বানানোর এই কারখানাগুলোর চিত্র ভয়াবহ। নোংরা ও ময়লাযুক্ত যে পরিবেশ ও পানিতে এই বরফ তৈরি হচ্ছে তা কোনভাবেই মানুষের পান করার উপযোগী নয়।

বানানো হচ্ছে ছোট-বড় আকারের বরফ। যারা শরবত বিক্রেতা তারা নিচ্ছেন ছোট আকারের বরফ, আর যারা মাছ বিক্রেতা তারা নিচ্ছেন বড় আকারের বরফ। শরবত এবং মাছের বরফের মধ্যে পার্থক্য একটিই, তা হচ্ছে আকারের। সারিবদ্ধভাবে বরফের পাত্রে পানি এবং লবন দিয়ে বিদ্যুতের লাইনের সাথে সংযুক্ত করে রেখে দেওয়া হয়।

জমাট বাঁধলে এগুলোকে বরফ আকারে বিক্রি করা হয়। কারখানার শ্রমিকরা অস্বাস্থ্যকরভাবে বরফের পাত্রের ওপর উঠেই টেনে বের করছে জমাট বাঁধা বরফ। এ সময় তাদের শরীর বেয়ে ঘামও গড়িয়ে পড়ছে বরফের ওপর।

শরবত বিক্রেতারা বাজার থেকে মাছের বরফ কেনার কথা জানিয়ে বলেন, এই বরফ স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা তারা জানেন না। তবে সবাই যেখান থেকে বরফ আনেন, ওই জায়গা থেকে তারাও বরফ আনেন। মানুষের শরবত খাওয়ার জন্য আলাদা বরফ আছে কিনা উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, এই বরফে কোন ময়লা বা ভেজাল নেই, একেবারে সাদা পরিস্কার।

দেখা যায়, তৃষ্ণা মেটাতে এসব শরবত শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিশু-নারী, রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষই খাচ্ছেন। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হেলাল আহমেদ বলেন, এমন তাপদাহে এই শরবত পান করলে শান্তি লাগে। তাছাড়া গরমে তো লেবুর শরবত বেশ উপকারী।

তিনি আরও বলেন, ভেজাল ছাড়া কীইবা আছে। তাই খাওয়ার সময় এতো কিছু চিন্তা করি না। তাছাড়া বরফগুলো দেখতে তো ভালোই মনে হয়, কীভাবে জানবো এটা কোন পানি দিয়ে তৈরি। রিকশাচালক তালেবুর রহমান বলেন, এই গরমে লেবু-বরফের শরবতটা খেলে প্রাণটা জুড়ে যায়। তাছাড়া দামও কম, খেতেও বেশ। সারাদিন রিকশা চালিয়ে এতো অল্প টাকায় এমন শান্তির জিনিস আর নাই।

বিষয়টি নিয়ে বগুড়া জেলা উন্নয়ন কমিটির সভাতেও আলোচনা হয়। সেখানে বলা হয়, স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে মানসম্মত পানি ও বরফ ব্যবহার নিশ্চিত না করা গেলে তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিবে। এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছে ব্যবহৃত বরফে যে পানি ব্যবহার করা হয় তা মানুষের পান করার উপযুক্ত কিনা সে ব্যাপারে অবশ্যই প্রশ্ন আছে।

কারণ, পান করার পানি আর মাছের জন্য বরফ তৈরির পানি কোনভাবেই এক হতে পারে না। এই বরফ মিশ্রিত পানি পান করে ডায়রিয়াসহ পেটের নানা ধরণের পীড়া হতে পারে। তাছাড়া মাছ সতেজ রাখার জন্য বরফে কিছু কেমিক্যালও মিশ্রণ করা হয়, যা মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বরফে ব্যবহৃত এই কেমিক্যাল অনেক সময় ক্যন্সারের কারণও হতে পারে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS