ভিডিও

নন্দীগ্রামে ধানের জমি ফেটে চৌচির, ফলনে দুশ্চিন্তা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ০৮:৫৪ রাত
আপডেট: এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ০৮:৫৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : মৌসুমের সময় বেড়ে ওঠা ধানগাছে কৃষকের মন ভরে ওঠার কথা। কিন্ত তাদের মন ভালো নেই। তীব্র তাপপ্রবাহ ও ধানের জমির মাটিতে ফাটল ধরায় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় কৃষকদের দিন কাটছে। বগুড়ার নন্দীগ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিং আর পানির অভাবে বোরো ধানের জমির মাটিতে ফাটল ধরেছে।

উপজেলার বাদলাশন ও সিধইলসহ বেশকয়েকটি গ্রামের মাঠে পানির অভাবে প্রায় ৪শ’ বিঘা জমির ধান নুয়ে পড়ছে। শুকিয়ে যাচ্ছে ধানের নতুন শীষও। বাদলাশন মাঠে নলকূপ বিরোধে পানি সেচ না দেওয়ায় মাঠের শতবিঘা ও সিধইল মাঠে প্রায় আড়াইশ’ বিঘা জমির মাটি শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে।

কৃষকরা জানান, ধানে নতুন শীষ (ফুল) এলেও শুকিয়ে যাচ্ছে। এসময় খেতে পর্যাপ্ত সেচ দিতে না পারলে ধানগুলো চিটা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আধাপাকা ধানগুলো নষ্ট হয়ে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে। তবে আগাম জাতের ধান পাকতে শুরু করেছে। কিছু মাঠে ধান কাটা-মাড়াই চলছে। ভালো ফলন পেয়ে কিছু কৃষকের মন ভরছে ঠিকই।

অন্যদিকে হাজারো কৃষক আধাপাকা আর নতুন শীষ নিয়ে দুশ্চিতায় আছেন। কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ১৯ হাজার ৮২৩ হেক্টর জমিতে ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩৯৪ হেক্টর জমিতে ব্রি-ধান ৯০, কাটারি ৮ হাজার ২১৫ হেক্টর, ২ হাজার ১৮৫ হেক্টর বিনা-৭ এবং স্থানীয় জাত ৭ হাজার ৭১৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ব্রি-ধান ৯২, ব্রি-ধান ১০০, বিনা-২৫, সিনজেন্টা ও হাইব্রিড ধানের চাষ হয়েছে।

প্রখর রোদ ও লোডশেডিংয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পানির অভাবে বোরো ধানের খেত শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক জমির মাটিতে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। কিছু মাঠে ধান আধাপাকা থাকলেও বেশিরভাগ মাঠে সবেমাত্র ধানগাছ থেকে শীষ (ফুল) বের হচ্ছে। এই সময় খেতে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে বেশিরভাগ ধান চিটা হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) বাদলাশন মাঠে বোরো ধানখেত পরিদর্শন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক। তিনি জানান, সেখানে নলকূপ বিরোধ নিরসনে কৃষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পানির অভাবে ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হতে পারে। যেসব জমির ধান পাকতে শুরু করেছে, সেগুলো কাটতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, বাদলাশন বি-৫৪ গভীর নলকূপ এরিয়ার (স্কিম) মধ্যে আড়াইশ’ বিঘা জমি আছে। লাইসেন্স ছাড়া দুটি ডিপ মেশিন ছিল, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনেক জমিতে ধানের নতুন শীষ এসেছে, সেগুলোতে পানি সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে আপাতত সব মেশিন চালু রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল রোববার সেচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর বাদলাশন এলাকার ৫৫ জন কৃষকের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ করা হয়। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেচ কমিটির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বাদলাশন মাঠে নলকূপ বিরোধে জমিতে সেচ না দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। দু’পক্ষের বিরোধ নিরসনের চেষ্টা করছি।

বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নন্দীগ্রাম এরিয়ার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রকিবুজ্জামান জানান, এ মুহূর্তে উপজেলায় ২২-২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক। তাপপ্রবাহের কারণে লোডশেডিং বাড়ছে। যেসব এলাকায় কৃষি জমি বেশি। সেসব এলাকায় টানা দুই ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS