ভিডিও

কক্ষ পরিস্কার করতে দেরি, পানিভর্তি বোতল দিয়ে মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে জখম

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ০৮:১৭ রাত
আপডেট: এপ্রিল ৩০, ২০২৪, ০৮:১৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনায় একটি মাদ্রাসার কক্ষ পরিস্কার করতে বিলম্ব হওয়ায় শিক্ষক হাফেজ আবু আক্কাস হেলালী মাদ্রাসাছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহিকে পানিভর্তি বোতল দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার রাতে আমতলী উপজেলার দারুল আরকাম মডেল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। 
ওই মাদ্রাসাছাত্রকে স্বজনেরা উদ্ধার করে মঙ্গলবার দুপুরে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করেছে। মাদ্রাসাছাত্র মাহির বাড়ী উপজেলার বৈঠাকাটা গ্রামে। তার বাবার নাম শহীদুল ইসলাম। 
জানা গেছে, ২০১৯ সালে হাফেজ আবু আক্কাস হেলালী আমতলী পৌর শহরের সাকিব পাজার তৃতীয় তলায় দারুল আরকাম মডেল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হন ও শুরু থেকেই ছাত্রদের কারণে-অকারণে নির্যাতন করে আসছেন। সোমবার রাতে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের মাদ্রাসাছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহিকে কক্ষ পরিস্কার করতে বলেন শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী। এ কক্ষ পরিস্কার করতে দেরি হয় মাদ্রাসাছাত্র মাহির। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কোকা-কোলার পানিভর্তি বোতল দিয়ে মাহিকে হাফেজ হেলালী বেধড়ক মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত ও অসুস্থ হয়ে পড়ে মাহি। 
মঙ্গলবার সকালে ওই মাদ্রাসার ছাত্রদের মাধ্যমে মাহির মা মাসুমা বেগম বিষয়টি জানতে পারেন। পরে ছেলেকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। হাফেজ হেলালীর মারধরে মাহির মাথা, হাত ও পিঠে গুরুতর জখম হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই মাদ্রাসাছাত্রকে হাসপাতালে দেখে এসেছেন। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার কয়েকজন মাদ্রাসাছাত্র বলেন, ‘শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী প্রায়ই মাদ্রাসার ছাত্রদের কারণে-অকারণে লোহার রড়, পানিভর্তি বোতল ও চাবি দিয়ে মারধর করেন। কিন্তু আমরা ভয়ে প্রকাশ করার সাহস পাইনি।’ তাঁরা আরো বলেন, ‘মাহিকে আমাদের সামনেই মারধর করেছে।’ 

মাদ্রাসাছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহি অভিযোগ করে বলেন, ‘হেলালী হুজুর আমাকে কক্ষ পরিস্কার করতে বলেন। এতে দেরি হওয়ায় আমাকে কোকা কোলার পানিভর্তি বোতল দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। আমি চিকিৎসার কথা বললে হুজুর চিকিৎসা করায়নি, উল্টো মাদ্রাসায় আটকে রেখেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’ 
মাদ্রাসাছাত্র আরিফুল ইসলাম মাহির মা মাসুমা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী গত রমজান মাসে আমার ছেলেকে অহেতুক বেধড়ক মারধর করেছে। কিন্তু ছেলে আমাকে বলেনি। গত সোমবার রাতে আবারো পানিভর্তি বোতল দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। আমি এ ঘটনার ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি।’ 

অভিযুক্ত শিক্ষক আবু আক্কাস হেলালী মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘মাহির মা এসে তার ছেলেকে নিয়ে গেছেন।’ কেন নিয়ে গেছেন সেই প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়ে তিনি কল কেটে দেন। 
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. কাঙ্খিতা মন্ডল তৃণা বলেন, ওই মাদ্রাসাছাত্রের পিঠে, হাতে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। 
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনা জেনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS