ভিডিও

মরদেহ না পেলেও মামলা নিষ্পত্তি কষ্টকর হবে না: ডিবিপ্রধান

প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৪, ০৭:৫৮ বিকাল
আপডেট: মে ২৮, ২০২৪, ০৭:৫৮ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের মরদেহ বা এর অংশ উদ্ধার না হলেও মামলা নিষ্পত্তি কষ্টকর হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ।

 

আজ মঙ্গলবার সকালে কলকাতায় একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে তার নেতৃত্বে চার সদস্যের গোয়েন্দা প্রতিনিধি দল বর্তমানে কলকাতায় রয়েছে।

নিউটাউনের হোটেল থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের হারুন অর রশীদ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা প্রত্যেকটি বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খানু তদন্ত করছেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশে আটক এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী, ঘাতক, নির্দেশনাকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য, পাশাপাশি শিলাস্তি রহমানের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে আমরা কলকাতায় এসেছি। এসে সিআইডির কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এখানে আটক আসামির সঙ্গেও কথা বলেছি।’

 

ডিএমপির ডিবিপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পাওয়া তথ্য এখানকার আসামির সঙ্গে কথা বলে মিলিয়ে দেখা হয়েছে। এখানকার আসামিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে আমরা প্রাপ্ত তথ্যের হুবহু মিল পেয়েছি।’

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমার মনে হয়, ভারত এবং বাংলাদেশের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা, ডিজিটাল এভিডেন্স, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, পিসিপিআর (প্রিভিয়াস কনভিকশন অ্যান্ড প্রিভিয়াস রেকর্ড)- এই বিষয়গুলো আমলে আনবেন। এরপর আদালতে প্রেরণ করা হলে সেখানেও বিষয়টি আমলে নেবেন। সেক্ষেত্রে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা কষ্টকর হবে বলে আমি মনে করি না।’

 

ইন্টারপোলে চিঠি দিলো পুলিশ

এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন ও তার সহযোগী সিয়ামকে ফেরাতে ইন্টারপোলে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্টার ব্যুরো (এনসিবি)। হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন। আর তার সহযোগী সিয়াম পালিয়ে গেছেন নেপালে।

 

এনসিবি জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট দেশ দুটির এনসিবির কাছে সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আজ পুলিশ সদরদপ্তরের ইন্টারপোলের শাখা কার্যালয় ন্যাশনাল সেন্টার ব্যুরোর (এনসিবি) এআইজি আলী হায়দার চৌধুরী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘ডিএমপির পক্ষ থেকে এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে ফিরিয়ে আনতে আবেদন করা হয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দুটি দেশকে চিঠি পাঠিয়েছি। দুজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সার্বিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।’

পুলিশ সদরদপ্তরের ন্যাশনাল সেন্টার ব্যুরো (এনসিবি) সূত্রে জানা গেছে, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে দুই দেশের পুলিশ যাকে শনাক্ত করেছে, সেই আক্তারুজ্জামান শাহীন নেপাল ও দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইন্টারপোলের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট দেশটির পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় নেপালে পলাতক আনার হত্যাতাণ্ডে অন্যতম সহযোগী সিয়ামকে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট দেশকে আগে ইন্টারপোলের সহায়তায় চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনকে এরই মধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নির্দেশে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজন গ্রেপ্তার হলেও এখনো পলাতক চারজন।

উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজীম।

নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলে না তিনবারের এই এমপির। গত ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় বহুতল সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কলকাতায় একজন ও বাংলাদেশে তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা হত্যাকাণ্ড বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। তবে এখনো হত্যাকাণ্ড ও মরদেহ পাওয়ার জট খোলেনি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS