ভিডিও

দায়িত্বরত অফিসারের গাফলতি

ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২০ দিন পর ভোট কেন্দ্রে পাওয়া গেল ২১শ’ ব্যালট পেপার

প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৪, ০৮:২২ রাত
আপডেট: মে ৩০, ২০২৪, ০৮:২২ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২০ দিন পর গত বুধবার সকালে একটি ভোট কেন্দ্র থেকে অব্যবহৃত ২ হাজার ১শ’ এবং দেড় শতাধিক ব্যবহৃত ব্যালট পেপারের মুরি পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। ঘটনাটি উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের আকলাস শিবপুর শ্যামপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ঘটেছে। ওই ভোটকেন্দ্রর প্রিজাইডিং অফিসার ক্ষেতলাল সরকারি ছাইদ আলতাফুন্নেছা কলেজের প্রভাষক তানজির আহমেদ সাকিব অব্যবহৃত ২১টি ব্যালট বইয়ে থাকা ২ হাজার ১শ’ ব্যালেট পেপার উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আয়েশা খাতুনকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

প্রথম ধাপে গত ৮ মে ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই ভোটকেন্দ্রের কেন্দ্র প্রিজাইডিং অফিসার ছিলেন ক্ষেতলাল সরকারি ছাইদ আলতাফুন্নেছা কলেজের প্রভাষক তানজির আহমেদ সাকিব। ওই ভোটকেন্দ্রে ভোটার ছিল মোট ৩০০৭ জন । এর মধ্যে ১৯৯৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার আকলাস শিবপুর শ্যামপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি স্টিলের আলমারি নির্বাচনের আগের দিন থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রিজাইডিং অফিসারকে ভোটগ্রহণের সরঞ্জামাদি সংরক্ষণের জন্য দেওয়া হয়। নির্বাচনের ২০ দিন পর গত মঙ্গলবার ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক ওই আলমারিতে বিদ্যালয়ের অন্যান্য ফাইলপত্র রাখতে গেলে একটি বস্তা দেখতে পান। পরে তা খুলে ভেতরে অব্যবহৃত ২১টি ব্যালট পেপারের বই দেখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানান। 
প্রধান শিক্ষক আজিজুল হাসান ব্যালট পেপার পাওয়ার ঘটনাটি উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে জানান। নির্বাচন অফিসার ব্যালট পেপারগুলো বিদ্যালয়ের পিয়নের মাধ্যমে তার কার্যালয়ে পৌঁছে দিতে বলেন। এরপর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান আল ইমরানকে জানালে তিনি ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারকে ওই বিদ্যালয় থেকে ব্যালট পেপারগুলো বুঝে নিতে বলেন। গত বুধবার ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ক্ষেতলাল সরকারি ছাঈদ আলতাফুন্নেছা কলেজের প্রভাষক তানজির আহমেদ সাকিব বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক আজিজুল হাসানের কাছ থেকে ব্যালেট পেপারগুলো বুঝে নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার আয়েশা খাতুনের কাছে জমা দেন।

আকলাস শিবপুর শ্যামপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুল হাসান বলেন, ভোটের পর আমরা গত মঙ্গলবার আলমারি খুলেছি। আলমারির ভেতরে একটি বস্তায় অব্যবহৃত সাতটি ব্যালট পেপারের বই পাই। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ঘটনা জানানোর পর গত বুধবার সকালে প্রিজাইডিং অফিসার ক্ষেতলাল সরকারি ছাঈদ আলতাফুন্নেছা কলেজের প্রভাষক তানজির আহমেদ সাকিব বিদ্যালয়ে এসে ব্যালট পেপার নিয়ে গেছেন। আমরা ব্যালট পেপার বুঝিয়ে দেওয়ার ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করে রেখেছি।

প্রিজাইডিং অফিসার ক্ষেতলাল সরকারি ছাঈদ আলতাফুন্নেছা কলেজের প্রভাষক তানজির আহমেদ সাকিব প্রথমে ব্যালট পেপার জমা দেওয়ার অস্বীকার করেন। পরে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর প্রায় এক মাস হতে চলেছে। ভোট শেষে অব্যবহৃত ব্যালট জমা দিয়েছি। পরে তিনি বলেন, সহকর্মীরা হয়ত ভুলে অব্যবহৃত ব্যালট পেপারগুলো ছেড়ে এসেছিলেন। গত বুধবার ওই ভোটকেন্দ্র ও বিদ্যালয়ে গিয়ে ব্যালট পেপারগুলো এনে নির্বাচন অফিসারের কাছে জমা দিয়েছি।

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাচন অফিসার আয়েশা খাতুন বলেন, উপজেলা নির্বাচনে আকলাস শিবপুর শ্যামপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার প্রভাষক তানজির আহমেদ সাকিব গত বুধবার সকালে অব্যবহৃত ২১টি ব্যালট পেপার বইয়ে ২ হাজার ১শ’টি ব্যালেট পেপার ওই ভোট কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করে আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যন পদের ৭শ’টি করে ব্যালেট রয়েছে। ভোটগ্রহণ শেষে অব্যবহৃত ব্যালেট পেপার বুঝিয়ে দিতে এবং বুঝিয়ে নিতে হয়। এমন ঘটনা কেন ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফতাবুজ্জামান আল ইমরান বলেন, ওই ভোটকেন্দ্র থেকে অব্যবহৃত ব্যালট পেপার পাওয়ার ঘটনা জেনেছি। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS