ভিডিও

কালিয়াকৈরে চাহিদা মত টাকা না দেওয়ায় দোকান ভেঙ্গেছে বন বিভাগ, আহত ১০

প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৪, ০৯:১১ রাত
আপডেট: মে ৩০, ২০২৪, ০৯:১১ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে চাহিদা মত মোটা অংকের টাকা না পেয়ে ১১ টি দোকান ভেঙ্গেছে চন্দ্রা বন বিভাগের কর্মকর্তারা।এ সময় ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে ও এলাকাবাসীর সাথে ধস্তাধস্তিতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী উপজেলা চত্বরে বিক্ষোভ করেন।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় উপজেলার কালামপুর খাজার ডেগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানান, চন্দ্রা থেকে কালামপুর রেললাইন পর্যন্ত একটি আঞ্চলিক সড়ক  প্রশস্ত করার জন্য পৌরসভা থেকে প্রায় ১ কোটি টাকার টেন্ডার হয়। পরে সড়কটি দু'পাশে দুই ফিট করে প্রশস্ত কাজ শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কালামপুর খাজার ডেক এলাকায় সড়কের দুই পাশে থাকা প্রায় ১৫  থেকে ২০ টি দোকান দুই ফিট করে পিছিয়ে দিতে বলেছিলো পৌর কতৃপক্ষ।পরে ভূমিহীন ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে তাদের দোকান ঘর ভেঙ্গে পিছিয়ে দেয়ওয়ার কাজ শুরু করেন । খবর পেয়ে বনবিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা তাদের কাছে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে ভূমিহীন ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বনের দালাল অর্জুন ও চন্দ্রা বন বিট এর তোফাজ্জল নামে এক বন কর্মকর্তার মাধ্যমে চন্দ্রা বন বিভাগের বিট অফিসার আব্দুল মান্নান কে ৩লাখ টাকা দেয়া হয়। তারপরেও বন কর্মকর্তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি। ভূমিহীনদের কাছে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করে ওই বন কর্মকর্তারা। টাকা দিতে অস্বীকার করলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বন বিভাগের ৭-৮ জন কর্মকর্তারা খাজার ডেগ এলাকার ১১ টি দোকান ঘর ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়। এসময় ধ্বংস স্তুপের নিচে চাপা  পড়ে কয়েক জন বন কর্মকর্ত আহত হয়। পরে দোকান ঘরের মালিকদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চন্দ্রা বন কর্মকর্তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে নারীরা বাধা দিতে গেলে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় বন কর্মকর্তারা। এসময় বন কর্মকর্তারা কল্পনা রানী,বাতাসী রানী,সহ বেশ কয়েকজন  নারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

জানা গেছে ভূমিহীন ওই ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ৫০ বছর  ধরে ওই এলাকায় ঘরবাড়ি করে বসবাস এবং দোকানপাট তৈরী করে ব্যবসা করে  আসছিল।

আবু বক্কর সিদ্দিক নামে এক ভুক্তভোগী কাপড়ের দোকানদার জানান,আমরা ২৫ জন দোকানদার মিলে চন্দ্রা বিট অফিস ও রেঞ্জ অফিসে তিন লক্ষ টাকা দিয়েছি তারা আরো ২ লক্ষ টাকা চেয়েছিল। বুধবার আমরা আরো ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি বাকি টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় আমাদের দোকানগুলো ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে।

স্বপন শীল নামে এক সেলুন মালিক জানান,স্থানীয় দালাল ও বন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে চন্দ্রা বিট ও কালিয়াকৈর রেঞ্জ অফিসে আমরা তিন লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছে। তাদের চাহিদা মত টাকা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার আমাদের দোকান ঘর গুলো ভেঙ্গে দিয়েছে এ সময় আমাদের পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছে বন কর্মকর্তারা।

কালিয়াকৈর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ তালুকদার জানান,পৌরসভার এই রাস্তাটির বিষয়ে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল।পৌরসভার অনুরোধে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট দুই ফিট সরে নিচ্ছিল  তারপরও বন বিভাগের স্থানীয় বন কর্মকর্তারা   বাধা দেয়।

চন্দ্রা বিট অফিসার আব্দুল মান্নান জানান,স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে আমাদের উপর হামলা হয়েছে।আমাদের ৬ জন স্টাফ আহত হয়েছে। তিন লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠো ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS