ভিডিও

বাগাতিপাড়ায় ৪১ বছর ইমামতি শেষে ইমামকে রাজকীয় বিদায়

প্রকাশিত: মে ৩১, ২০২৪, ০৬:২০ বিকাল
আপডেট: জুন ০১, ২০২৪, ০২:২৭ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমামকে ৪১ বছর ইমামতি শেষে ঘোড়ার গাড়িতে চাপিয়ে ব্যতিক্রমী রাজকীয় বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বিদায় বেলায় মসজিদের ইমামকে সম্মানিত করার এমন প্রথম উদ্যোগ গ্রহণের কারণে প্রশংসায় ভাসছেন এলাকাবাসী।

আজ শুক্রবার (৩১ মে) বাদ জুম্মা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জিগরীর ক্ষিদ্রমালঞ্চি এলাকায় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম'র সম্মানে এ বিরল বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সালাত শেষে তাকে এ রাজকীয় বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

পেশ ইমাম মোঃ মুনছুর রহমান (৭৫) ওই মসজিদের ৪১ বছর যাবত পেশ ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ইমাম মুনছুর রহমান ওই ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকার মৃত খেদমত আলী প্রামানিক এর ছেলে।

জানা যায়, ১৯০১ সালে ওই মসজিদটি স্থাপিত হয়। এরপর ১৯৮৩ সাল থেকে তিনি ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি নিজে থেকে স্বেচ্ছায় ইমামের দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি চাওয়ায় এলাকাবাসি তাঁর সম্মানে তাকে এ সংবর্ধনা দেন।

ক্ষিদিরমালঞ্চি এলাকার স্থানীয় মেম্বার সেলিম রেজা জানান, এলাকবাসির এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। তিনি এ রকম আয়োজন এর আগে কখনও দেখেননি। এ রকম আয়োজন করায় তিনি এলাকাবাসিকে ধন্যবাদ জানান।

ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি আরশেদ আলী লালচান জানান, ইমাম মুনসুর রহমান দীর্ঘ ৪১ বছর তাদের মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এখন বার্ধক্যে পৌঁছেন। তিনি আমাদের সবার সাথে মিশে ছিলেন। গ্রামবাসী তার পরামর্শ নিয়ে কাজকর্ম করতেন। তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবকের মতো। তিনি স্বেচ্ছায় বিদায় নেওয়ায় আমরা এলাকাবাসি সবাই মিলে তাঁকে সম্মান জানাতে এ আয়োজন করি।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি কর্মকর্তাদের সবাই সংবর্ধনা দিয়ে বিদায়দেয়। কিন্তু ইমামদের কেউ বিদায় সংবর্ধনা দেয় না তাই তিনারা চান তাদের মাধ্যমে এটি যেন নিয়মে পরিণত হয়। এই আয়োজন দেখে সবাই যেন উদ্বুদ্ধ হয়। সকলের প্রতি তিনি এই আহ্বানই জানান।

বিদায় বেলায় ইমাম মুনসুর রহমান জানান, জীবনের দীর্ঘ সময় যাদের ইমামতি করেছি তাদের এমন আয়োজনে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। বাকি জীবনে সবার কাছে তিনি দোয়া চান। বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ইমামকে দেয়া হয় ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী।

পরে তাকে ঘোড়ার গাড়ির বহরে করে রাজকীয় বিদায় দেয়া হয়। এ সময় এলাকার মুরব্বিসহ সর্বস্তরের মানুষ কান্নাভেজা চোখে প্রিয় ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে করে তার বাড়িতে পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS