ভিডিও

পানির নিচে ধান, কালাইয়ে বেশি মজুরিতেও মিলছে না শ্রমিক

প্রকাশিত: জুন ০৯, ২০২৪, ০৮:১৮ রাত
আপডেট: জুন ০৯, ২০২৪, ০৮:১৮ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : জয়পুরহাটে আলুর পর একটু দেরিতেই রোপণ করা হয় বোরো ধান। অন্যান্য এলাকায় যখন পাকা ধান কাটা শেষ পর্যায়ে, তখন এ জেলায় শুরু হয় বোরো ধান কাটা। বর্তমানে জয়পুরহাটে মাঠের পর মাঠ জুড়ে পড়ে আছে পাকা ধান।

কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের পাকা ধান। এর সাথে দেখা দিয়েছে কৃষি শ্রমিকের সংকট। ঝড়-বৃষ্টির পর বেশি দামেও মিলছে না কৃষি শ্রমিক। পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পরেছে চাষিরা। অল্প সময়ের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে না পাড়লে পাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে, আবার ঝড়-বৃষ্টির সাথে শীলাবৃষ্টির কারণে পাকা ধান ঝড়ে গিয়ে ফলন কম হবে এমন শঙ্কায় দিন যাপন করছেন চাষিরা।

চাষিরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছেই। জেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ধান গাছ পানির নিচে ডুবে পঁচে যাচ্ছে। অনেকেই শ্রমিক না পেয়ে ধানের আশা ছেড়ে দিয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৬৯ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) এবং হাইব্রিড জাতের ধান হয়েছে। খাদ্য উৎপাদনের জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ১২০ হেক্টর জমিতে কম চাষ হয়েছে। সে হিসেবে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত ৩৮ শতাংশ জমির ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। এখনও ৬২ শতাংশ ধান মাঠেই রয়েছে।

কৃষকরা জানান, এ এলাকায় আলু পর ধান রোপণ করা হয়। সে কারণে ধান পাকতে একটু দেরি হয়। এবারও ধান পাকতে দেরি হয়েছে। যে সময় মাঠের পর মাঠ জুড়ে ধান পাকে, ঠিক সেই সময়ই শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি শ্রমিকের সংকটের কারণে ধান কাটা যাচ্ছে না। বেশি টাকাতেও শ্রমিক মিলছে না। গত কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টির কারণে অনেকের ধান বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। জমানো পানি অন্যত্র সরানোর কোনো উপায়ও নেই।

গতকাল শনিবার সকালে পৌরশহরের নয়াপাড়া মাঠে গিয়ে কথা কৃষক সোহেল মিয়ার সাথে। তিনি জানান, মাঠের পর মাঠ জুড়ে ক্ষেতের ধান পেকে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। কয়েক দিন ধরে ঝড়-বৃষ্টিও হচ্ছে। এ কারণে প্রায় সব জমিতেই পানি জমে গেছে। সরানোর কোনো উপায় নেই। সবাই ধান কাটতে শ্রমিক খুঁজছে। এ কারণে শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে।

গত বছর এক বিঘা (৩৩ শতক) জমির ধান কাটতে শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়েছিল ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। এবার সেই এক বিঘার ধান কাটতে মজুরি দিতে হচ্ছে সাড়ে চার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তারপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেকেই জমির ধান ছেড়ে যাচ্ছেন। কারণ পানিতে ডুবে অনেকের ধান পঁচে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাহেলা পারভিন বলেন, বৈরি আবাওহায়ার কারণে পুরোদমে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। আবওহায়া ভালো থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, আগামীতে শ্রমিকের সংকট আরও দেখা দিবে।

কারণ এ পেশায় নতুন করে আর কোন লোক আসবে না। আমরা কৃষকদের ধান কাটার যন্ত্রপাতি ভূর্তকিতে নিতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি কৃষক এসব যন্ত্রপাতি সহজেই কিনবেন। তাহলেই এ সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। অল্প সময়েই ফসল ঘরে উঠবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS