ভিডিও

রংপুরের সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আমের কদর বিদেশেও পৌঁছে গেছে

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৪, ০৬:২২ বিকাল
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৪, ১২:২৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

রংপুর প্রতিনিধি : রংপুর অঞ্চলকে অর্থনীতির পথে এগিয়ে নেয়া সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আমের কদর দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছে গেছে। চলতি বছর এই আম জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। বাজারে উঠবে চলতি মাসের ২০ তারিখে। এরপরই শুরু হবে হাঁড়িভাঙার আনুষ্ঠানিক বাজারজাত।

এ বছর প্রায় ২ হাজার হেক্টর বাগানে হাঁড়িভাঙার ফলন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ৩০০ কোটি টাকার ওপরে হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন এখানকার আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। রংপুরের মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ ও সদর উপজেলার বাগান ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বাগানগুলোতে চলছে শেষ সময়ের পরিচর্যা।

তবে আমের আকার ও ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন তারা। বাগান মালিকরা জানান, এবার মুকুল আসার সময় খরা হওয়ায় গাছে ঠিকভাবে মুকুল আটকেনি। আমের গুটি আসার পর ঝড় বৃষ্টিতে বেশিরভাগ গুটি ঝড়ে গেছে। তাই আমের ফলন কম হয়েছে।

মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ ও সদর উপজেলায় সদ্যপস্করণী, মমিনপুর ও চন্দনপাট ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ আমের উপর নির্ভরশীল। বাগান মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গতবার যে আম ৪-৫ টাতে এক কেজি হয়েছে, এবার ৭-৮টায় এক কেজি হবে। আমের আকার ছোট হলে দামও কম পাওয়া যায়। হাঁড়িভাঙা আম পাকলে ৩ থেকে ৪ দিনের বেশি রাখা যায় না।

সংরক্ষণের জন্য নেই কোনো পদ্ধতি। আম সংরক্ষণের প্রক্রিয়া চাষিরা পেলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও পাঠানো সহজ হতো। হাঁড়িভাঙা আমের গোড়া পত্তনকারী নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমচাষি আমজাদ হোসেন পাইকার জানান, হাঁড়িভাঙা আম জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেলেও স্থানীয় পর্যায়ে কোনো অধিদফতর থেকে এর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

অনেক চাষি ও ব্যবসায়ী জিআই পণ্যের সুফল সম্পর্কেও অবগত না। হাঁড়িভাঙা আমের প্রসিদ্ধ এলাকা পদাগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থার বেহাল দশা। নেই আবাসিক সুবিধা, ব্যাংকিং ব্যবস্থাসহ আমের স্থায়ী শেডযুক্ত বাজার।

রংপুর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, হাঁড়িভাঙা আম সংরক্ষণে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা করছে। তবে কবে নাগাদ গবেষণার ফলাফল পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত বলতে পারছে না অধিদফতরটি। এই আমের লাইফলাইন নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে গবেষণামূলক কাজ করা হচ্ছে। হাঁড়িভাঙা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এ কারণে সংরক্ষণে গবেষণা এখন আরও বেশি গুরুত্ব বহন করে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, চলতি বছর জেলায় ৩ হাজার ৩৫৯ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাঁড়িভাঙার চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন।

আমের মৌসুমে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বাজার ব্যবস্থাপনাসহ সব ধরনের সহযোগিতার জন্য সার্বক্ষণিক তদারকির কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, আগামী ২০ জুন থেকে বাজারে আসবে হাঁড়িভাঙা আম।

আমের বাজারজাত করতে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, তা মনিটরিং করা হবে। বিশেষ করে পরিবহনে ব্যবসায়ীদের কোনো হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি সরকারি পরিবহণ সুবিধার বিষয়টিও দেখা হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS