ভিডিও

সিলেটে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৪, ১২:১৭ দুপুর
আপডেট: জুন ১৯, ২০২৪, ১২:১৭ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

নিউজ ডেস্ক: সিলেটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি দু-একটি পয়েন্টে ওঠানামা করলেও সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নদনদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে।

এরইমধ্যে বুধবার (১৯ জুন) সিলেট অঞ্চলে ফের ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বুধবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সিলেট বিভাগে বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণের সম্ভবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার দিনভর বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও উজানের ঢলে নদনদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশেনের ২১টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১৩ উপজেলার ১১৬ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে ১ হাজার ৩২৩টি গ্রামের প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বেড়ে যাওয়ায় বুধবার সকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ফের পানি উঠতে শুরু করেছে। এতে বিভিন্ন এলাকা ফের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মাত্র তিন ঘণ্টায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে গতকাল মঙ্গলবার ১৫ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপরে। আজ বুধবার সকাল ছয়টায় এক পয়েন্ট কমে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টায়ও অবস্থা অপরিবর্তি রয়েছে।

তবে এই নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে গতকালের তুলনায় আজ বুধবার আরও বেড়েছে। গতকাল পানি বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ৬টায় তা বেড়ে বিপদসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

এদিকে লোভা নদী দিয়ে উজানের ঢল কিছুটা কমায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে কিছুটা কমেছে। গতকাল মঙ্গলবার সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ বুধবার সকালে তা অনেকটা কমে বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টায় আরও দুই পয়েন্ট কমে ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে গতকালের চেয়ে আজ সকালে আরও বেড়েছে। গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকালে তা বেড়ে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টায় এক পয়েন্ট কমে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাত ১২টায় জেলা প্রশাসন জানায়, সিলেট জেলায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত না হলেও উজানের ঢলে নদনদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদনদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশেনের ২১টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১৩ উপজেলার ১১৬ ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ১ হাজার ৩২৩টি গ্রামের প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জেলা প্রশাসন আরও জানায়, বন্যাদূর্গত এলাকার ১৭ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। আগামী তিনদিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

জেলা প্রশাসনের মঙ্গলবার রাতের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একজন ডেটিকেটেড অফিসার ও ইউনিয়ন পর্যায়ে একজন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়াও বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS