ভিডিও

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৪, ০৭:৩৪ বিকাল
আপডেট: জুন ২০, ২০২৪, ১০:৩৯ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

রংপুর প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল আর ভারী বর্ষণে রংপুরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকলে রংপুরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

পানি বাড়ার সাথে সাথে জেলার কাউনিয়া, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় ভাঙনকবলিত পরিবারগুলো তাদের বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিচ্ছে।

কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার বেশ কিছু চরাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে কাঁচা সড়ক। তলিয়ে গেছে ওইসব এলাকার ফসলি ক্ষেত।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, রংপুর জেলার সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর অঞ্চলে ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আজ বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে শূন্য দশমিক ২০ সেন্টিমিটার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে ভোর ৬ টায় ওই পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।

তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে আজ বুধবার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৬টায় যা রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডালিয়া পয়েন্টে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তলিয়ে গেছে বাদাম ও শাক-সবজিসহ উঠতি বিভিন্ন ফসল।

কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক জানান, বন্যায় যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে সরকারিভাবে সব ধরনের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি হলে সরকারিভাবে তাদের সহায়তা করা হবে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না জানান, উপজেলা প্রশাসন সতর্ক রয়েছেন। চরাঞ্চলে বসবাস করা বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় গবাদি পশুসহ অন্যান্য সামগ্রী রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। বন্যা হলে রেসকিউ করার জন্য টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, উজানের ঢল আর কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে ডালিয়া ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডালিয়া ব্যারেজের সবকটি গেইট খুলে রাখা হয়েছে। কাউনিয়া পয়েন্টে বাড়ছে পানি প্রবাহ।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, বন্যা মোকাবিলায় মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরে থাকা মানুষজনকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS