ভিডিও

বন্যার পানি কোথাও কমছে কোথাও বাড়ছে

সিলেটাঞ্চলে দুর্ভোগ

পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুসহ ৭ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৪, ১০:৩১ রাত
আপডেট: জুন ২১, ২০২৪, ০৮:৩২ সকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমায় প্লাবিত এলাকার পানি কিছুটা কমেছে। তবে জেলার কোথাও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে আবার কোথাও অবনতি হয়েছে। এখনও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সিলেটের প্রধান নদী সুরমা-কুশিয়ারার পানি ছয়টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, সিলেট নগরীর তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘীরপাড়, উপশহর, যতরপুর, সোবাহানীঘাট, মীরাবাজার, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, তোপখানা, বেতেরবাজার এলাকার রাস্তাঘাটে হাঁটু সমান পানি রয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, পানি আগের থেকে কিছুটা কমেছে। তবে বৃষ্টি শুরু হলে আবার বেড়ে যাবে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আর গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি সকাল থেকে বিপদসীমার নিচে রয়েছে।  পানির উচ্চতা কিছুটা নিচে নেমেছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির কোথাও পানি কমেছে, আবার কোথাও বেড়েছে। তবে কুশিয়ারা নদীর একটি পয়েন্ট ছাড়া অন্য নদ-নদীগুলোর পানি আগের তুলনায় নেমেছে। বন্যার্ত এলাকায় প্রশাসনের ত্রাণ বিরতণ অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসন বন্যা পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।

সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকার বাসিন্দা ও সংবাদকর্মী শাহিদ হাতিমী বলেন, আমার উপজেলার কিছু মানুষের বাড়িঘর থেকে পানি নেমেছে। তবে বেশিরভাগ এলাকায় রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়িতে এখনও বন্যার পানি রয়েছে। আমি সিলেট শহরে বাসা নিয়ে থাকি। ঈদের আগেরদিন এলাকায় এসেছিলাম। গিয়ে দেখি আমার বাসার আসবাবপত্রসহ নানা প্রয়োজনীয় জিনিস পানিতে তলিয়ে গেছে। সিলেট নগরীর উপশহরের ডি ব্লকের বাসিন্দা আহমেদ চৌধুরী বলেন, ঈদের দিন বাসার নিচ তলায় পানি প্রবেশ করেছিল। পানির জন্য ঠিকমত ঈদের আনুষ্ঠিকতা করা হয়নি।  বৃহস্পতিবারও বাসায় পানি ছিল। বন্দির মতো দিনকাল যাচ্ছে, তবে পানি একটু কমছে।

মৌলভীবাজারে ৩ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে, ঘরবন্দি ৩ লাখ মানুষ : ত্রিপুরা রাজ্যে অতিবৃষ্টির ফলে সৃষ্ট ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতে মৌলভীবাজার জেলার নদ-নদীর পানি বাড়ছে। যার কারণে নদী তীরবর্তী লোকালয়ের ৪৭টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। গত কয়েকদিন ত্রিপুরার রাজ্যের কৈইলাশহর ও আসামে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এই বৃষ্টির পানি আবার বাংলাদেশের সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই ও খোয়াই নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পতিত হয়। বুধবার সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। আকাশ মেঘে ঢাকা যেকোনও সময় বৃষ্টি পড়বে।  বেলা ১১টা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মৌলভীবাজার জেলার মনু, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ধলাই নদীর পানি কমছে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, মনু নদীর পানি রেলওয়ে ব্রিজে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট ব্রিজে বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী শেরপুর ব্রিজে বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদী পানি বিপদসীমার ২০৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের বাড়িঘরে পানি ছুঁই ছুঁই করছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেহপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

এক উপজেলার ৫০ গ্রামে প্লাবন, পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ : উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিলেট-সুনামগঞ্জের পর হবিগঞ্জেও ভয়াবহ হয়ে উঠছে বন্যা পরিস্থিতি। কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পানি ঢুকেছে। দুর্গত এলাকায় ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে এখনও সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ বানভাসি মানুষের।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানায়, কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নবীগঞ্জ পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, উপজেলার প্রায় ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে দীঘলবাক, ইনাতগঞ্জ, আউশকান্দি, বড় ভাকৈর পূর্ব, বড় ভাকৈর পশ্চিম, করগাঁও, কালিয়াভাঙ্গা, দেবপাড়া ও কুর্শি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। এ অবস্থায় উপজেলায় ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। সরেজমিন নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নে দেখা যায়, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। পানিতে তলিয়ে গেছে মাধবপুর, গালিমপুর, হোসেনপুর, আহমদপুর, দুর্গাপুর, কুমারকাদা, পাহাড়পুর গ্রাম।

বানের জলে ভাসছে সুনামগঞ্জ : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে সাত উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এমনকি পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা। ফলে বলা যায়, তিন হাজার ৭৪৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জেলা এখন ভাসছে বানের জলে।

পাহাড়ি ঢলের পানিতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার বাসিন্দারা। শুরু থেকেই এ দুই উপজেলার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়লেও এখানে প্রশাসনের তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুরসহ সাত উপজেলার নিম্নাঞ্চল যখন তলিয়ে গেলো তখন নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। তাৎক্ষণিক নেওয়া হয় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি। তবে প্রস্তুতি নেওয়ার আগেই সাত উপজেলার প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

আশ্রয়কেন্দ্রে আসা সামিরা বেগম বলেন, সাজানো গোছানো সংসারটা বানের জলে ভেসে গেলো! সব ফেলে রেখে এসে এখন জীবন বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে উঠেছি। বন্যার পানির নিচে কবির মিয়ার বাড়িসহ চাষের জমি। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আমরা কি এই বন্যার কবল থেকে মুক্তি পাবো না? খুব কষ্টে আছি কয়েকদিন ধরে, পেট ভরে খেতে পারছি না। তবে  বৃহস্পতিবার সকালে সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমে বিপদ সীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

নেত্রকোনায় গ্রামে বন্যার পানি ঢোকায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিচ্ছে মানুষ : টানা তিন দিনের ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা ও কলমাকান্দা উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি বাড়িঘরে ঢুকে যাওয়ায় মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিচ্ছে।

কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি, পোগলা, বড়খাপনও কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ওই উপজেলার বড় নদী উব্দাখালীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ওই নদীর পানি কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এছাড়া কলমাকান্দার মহাদেও, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, সদর ও বারহাট্টা উপজেলার কংস, মগড়া, খালিয়াজুরির ধনুসহ বিভিন্ন ছোট-বড় নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। উপজেলার মহাদের, বৈঠাখালী, মঙ্গলেশ্বরী ও গণেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি উঠেছে।

৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত সিলেট বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষা : বন্যার কারণে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।  বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি চলছে। সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতেও নেই শিক্ষার্থীরা। সার্বিক দিক বিবেচনায় ৮ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী, ৮ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত থাকায় সিলেট বোর্ডে বাংলা প্রথমপত্র ও দ্বিতীয়পত্র এবং ইংরেজি প্রথমপত্র ও দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা আপাতত হবে না। পরবর্তী সময়ে এ চারটি বিষয়ের পরীক্ষার নতুন সময়সূচি জানিয়ে দেবে শিক্ষা বোর্ড। এদিকে প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী- আগামী ৩০ জুন থেকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুসহ ৭ জনের মৃত্যু : সিলেটে পানিতে ডুবে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।  বৃহস্পতিবার ও বুধবার সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।  সকাল ৯টায় গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি বগাইয়া হাওরে গ্রামের ক্লাব ঘরের সামনে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনে জড়িয়ে জুয়েল মিয়া (১৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। জুয়েল ওই গ্রামের মান্নান মিয়ার ছেলে ও পেশায় একজন দর্জি বলে জানিয়েছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।

এর আগে, বুধবার দিনগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের কাপনা নদী থেকে নৌকা ডুবে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। মৃত মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন (২৬) ফতেহপুর প্রথম খন্ডগ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে ওসি জানান, রাতে ফতেহপুরের বাংলাবাজার থেকে অন্যদের সঙ্গে নৌকায় বাড়ি ফিরছিলেন সাখাওয়াত। ফতেহপুরের লংপুর সড়ক এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ নৌকাটি ডুবে যায়। অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও সাখাওয়াত নৌকাসহ স্রোতে তলিয়ে যান। প্রায় ৪ ঘণ্টা পর রাত ১২টার দিকে ঘটনাস্থলের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে, বুধবার সন্ধ্যার পর বিছনাকান্দির হাদারপার বাজার সংলগ্ন উপরগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাজমিন আক্তার (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়। অন্য শিশুদের সাথে লুকোচুরি খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নাজমিন মারা যায়। সে বিছনাকান্দি ইউনিয়নের উপরঘাম গ্রামের আব্দুলাহ মিয়ার দ্বিতীয় মেয়ে। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মিনতি রানী (৪০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। মিনতি ঝালোপাড়ার নৃসিংহ জিউর আখড়ার পার্শ্ববর্তী বাসার বাসিন্দা। মন্দিরের পানির পাম্পে সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মিনতি রানী গুরুতর আহত হলে দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দক্ষিণ সুরমা থানার কদমতলি ফাঁড়ির ইনচার্জ দেবাংশু পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বুধবার বিকেলে জকিগঞ্জ উপজেলায় মাছ ধরতে গিয়ে স্রোতে ভেসে যাওয়া আব্দুল হালিম (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি মুহিদপুর গ্রামের মৃত রনই মিয়ার ছেলে ও পেশায় পিকআপ চালক। ঘটনাটি বারহাল ইউনিয়নের মুহিদপুর এলাকায় ঘটেছে।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, আব্দুল হালিম ভেলা নিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। সকাল থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে, বেলা ২টার দিকে শাহবাগ মুহিদপুর এলাকায় তার লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।

এদিকে,  বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের শ্যামেরকোনা গ্রামে পানিতে ডুবে এক শিশু ও এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলো- উপজেলার পশ্চিম শ্যামেরকোনা গ্রামের পচন মিয়ার ছেলে ছাদি মিয়া (৮) এবং একই গ্রামের জমির মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (১৭)।

চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকতার উদ্দিন জানান, ধলাই নদীর বাঁধ ভেঙে শ্যামেরকোনা গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। দুপুরে পানিতে খেলতে নেমে সাঁতার না জানার কারণে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। দুজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা পিছানোর সিদ্ধান্ত : বন্যা ও অতিবৃষ্টির কথা বিবেচনা করে চলমান পরীক্ষাসমূহ পিছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।  বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

উপাচার্য বলেন, সিলেটের বন্যা ও অতিবৃষ্টির কথা বিবেচনা করে চলমান পরীক্ষাসমূহ পিছানো এবং অনলাইন ক্লাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায় পরীক্ষাসমূহের ব্যাপারে বিভাগসমূহ তাদের ক্লাস প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ সাপেক্ষে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করবে। যেসব বিভাগের ক্লাস রয়েছে সেসব বিভাগসমূহ চাইলে অনলাইনে ক্লাস নিতে পারবে। এছাড়া আগামী ২৩ জুন থেকে যথারীতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম চলমান থাকবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS